২০১৯ সালের পর আর্জেন্টিনাকে আর হারাতে পারেনি ব্রাজিল। এখন এসে সেই অধরা জয় ছিনিয়ে নিতে রীতিমতো মরিয়া হয়ে গেছে তারা। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রাফিনিয়া তো গোল করে আর্জেন্টিনাকে হারানোর আগাম ঘোষণাই দিয়ে রেখেছেন। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, আর্জেন্টিনাকে হারানো ব্রাজিলের জন্য খুব একটা সহজ হবে না।

বিশেষ করে লিওনেল স্কালোনির অধীন একটি দল হয়ে খেলছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। এ দলকে হারাতে হলে ব্রাজিলকে নিজেদের সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে দিয়েই খেলতে হবে। পাশাপাশি রণকৌশলের দিক থেকেও দরিভাল জুনিয়রের দলকে অনেক নিখুঁত থাকতে হবে।

ব্রাজিলের বর্তমান দলটিকে চাইলে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। একদিকে দলটি যেমন তারকা খেলোয়াড়ে ভরপুর, তেমনই এর আছে উদীয়মান খেলোয়াড়ও। তারকাদের মধ্যে ভিনিসিয়ুস, রাফিনিয়া ও রদ্রিগোরা বিশ্বসেরাদের মধ্যে থাকবেন।

আর তরুণদের মধ্যে বেন্তো, মুরিলো, ওয়েসলে এবং মাতেউস কুনিয়ারা আশা দেখাচ্ছেন দলটিকে। যদিও এই খেলোয়াড়দের তারকাখ্যাতি ভিনিসিয়ুস-রাফিনিয়াদের মতো নয়। কিন্তু ব্রাজিলকে জিততে হলে দুই পক্ষকেই একটি দল হয়ে খেলতে হবে। নিজেদের সমন্বয় ও বোঝাপড়া হতে হবে চমৎকার।

আরও পড়ুনআর্জেন্টিনার বিপক্ষে শেষ কবে জিতেছিল ব্রাজিল ১৯ ঘণ্টা আগে

স্কালোনির আর্জেন্টিনা এখন ছন্দে থাকা দল। এমন উজ্জীবিত দলের বিপক্ষে এলোমেলো খেলে কোনোরকমে একটি গোল দিয়ে জিতে আসা সম্ভব নয়। আজ সকালে রিভার প্লেটের মাঠ মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামে নামার আগে তাই নিজেদের সেরা প্রস্তুতিটুকুই নিতে হবে ব্রাজিলকে। পাশাপাশি তৈরি করতে হবে একটি কার্যকর রণকৌশলের নীলনকশাও।

পদ্ধতি

ব্রাজিল কোচ দরিভাল সাধারণত আক্রমণভাগে কখনো তিনজন বা কখনো চারজন খেলোয়াড় রেখে স্কোয়াড সাজান। ফলে বিভিন্ন সময় দলের ফরমেশনে কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে, কিন্তু খেলার দর্শনগত জায়গায় কোনো পরিবর্তন হয় না। মাঠে ব্রাজিলকে সাধারণত ৪-৩-৩, ৪-২-৩-১ বা ৪-২-৪ ফরমেশন খেলতে দেখা যায়।

দরিভালের কৌশলটা হলো আক্রমণভাগে ও রক্ষণে বাড়তি খেলোয়াড় রাখা। এভাবেই মূলত প্রতিপক্ষের ওপর চাপ তৈরি করার চেষ্টা করেন তিনি। আগামীকাল আর্জেন্টিনার বিপক্ষেও একই চেষ্টা করবেন দরিভাল।

ব্রাজিল–আর্জেন্টিনা ম্যাচ মানেই যেন উত্তাপ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন ক দর ভ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পর্যটকের মৃত্যু: ট্যুর এক্সপার্টের এডমিন বর্ষা গ্রেপ্তার

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় নারী পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনায় ভ্রমণভিত্তিক ফেসবুক গ্রুপ ‘ট্যুর এক্সপার্টের’ এডমিন বর্ষা ইসলাম বৃষ্টির বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। 

শনিবার (১৪ জুন) নিহত স্মৃতি আক্তারের বাবা হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে আলীকদম থানায় মামলা করেন। পরে বর্ষা ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় বলে নিশ্চিত করেন আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা জহির উদ্দিন।

যে ধারায় মামলা করা হয়েছে, সেই ধারায় বলা আছে, ‘‘যদি কেউ অবহেলা বা অসাবধানতার কারণে কারো মৃত্যুর কারণ ঘটায়, তবে সেটি এই ধারায় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।’’

আরো পড়ুন:

দিনাজপুরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার দুই আসামি গ্রেপ্তার

কাছারি বাড়িতে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ২

গ্রেপ্তার বর্ষা ইসলাম যশোরের চৌগাছা থানার জগদীশপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আড়পাড়ার বাসিন্দা রবিউল ইসলামের মেয়ে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত বর্ষা ইসলাম বৃষ্টি তার ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করে বিভিন্ন ট্যুরের আয়োজন করেন। তার ক্রিসতং-রুংরাং পাহাড় সামিট (৩০ তম) ইভেন্টে অংশ নিতে গিয়ে স্মৃতি আক্তার গত (৮ জুন) আলীকদমের উদ্দেশে রওনা হন। এরপর থেকে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে (১৩ জুন) আলীকদমের তৈন খালের মোড় থেকে স্মৃতি আক্তারের লাশ উদ্ধার করা হয়।

এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, বর্ষা ইসলাম স্থানীয় প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে মাত্র সিদ্ধার্থ তঞ্চঙ্গ্যা নামে একজন গাইড নিয়ে ৩৩ জনের ট্যুর আয়োজন করেন এবং তিনি পর্যটকদের আবহাওয়া সম্পর্কে জানাননি। তারা ৯ জুন দুর্গম রুংরাং-ক্রিসতং এলাকার উদ্দেশে রওয়ানা হন। ১০ জুন গাইডসহ ১২ জন খেমচং পাড়া থেকে আন্ধারমানিক ট্রেইলের উদ্দেশে চলে যায়। 

বাকি ২২ জন, যার মধ্যে স্মৃতি আক্তারও ছিলেন; অপর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও গাইড ছাড়াই মো. হাসান চৌধুরীর মাধ্যমে দুর্গম ও ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি পথ পেরিয়ে আলীকদম সদরে ফেরত পাঠালে (১১ জুন) বিকালে শামুক ঝর্ণা এলাকায় পাহাড়ি ঢলে স্মৃতি আক্তার, মো. হাসান চৌধুরী এবং শেখ জুবাইরুল ইসলাম নিখোঁজ হয়। ১২ জুন শেখ জুবাইরুলের লাশ এবং ১৩ জুন স্মৃতি আক্তারের লাশ উদ্ধার হলেও মো. হাসান চৌধুরী শুভ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

মামলার বাদী মো. হাবিবুর রহমান অভিযোগ করেন, ‘‘বর্ষা ইসলাম বৃষ্টির দায়িত্ব অবহেলা ও অদক্ষতার কারণে স্মৃতি আক্তারের মৃত্যু হয়েছে।’’ 

শুক্রবার (১৩ জুন) স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের জিজ্ঞেসাবাদে বর্ষা ইসলাম দাবি করেছেন, তিনি কেবল পাঁচ দিনের ট্যুরে ছিলেন। আর দুর্ঘটনা ঘটে তিন দিনের অন্য ট্যুরে, যার নেতৃত্বে ছিলেন নিখোঁজ কো-অপারেটর হাসান চৌধুরী। 

এ বিষয়ে আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা জহির উদ্দিন জানান, নারী পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনায় ভ্রমণভিত্তিক ফেসবুক গ্রুপ ‘ট্যুর এক্সপার্টের’ এডমিন বর্ষা ইসলাম বৃষ্টির বিরুদ্ধে নিহত স্মৃতি আক্তারের বাবা বাদী হয়ে আলীকদম থানায় মামলা মামলা করেছেন। অভিযুক্ত বর্ষা ইসলামকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। 

এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার বলেন, ‘‘পার্বত্য অঞ্চলে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ট্যুর অপারেটর এজেন্সিগুলোর আরো বেশি দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য ট্যুর অপারেটর ও গাইডদের সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী।’’ 

ঢাকা/চাইমং/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পর্যটকের মৃত্যু: ট্যুর এক্সপার্টের এডমিন বর্ষা গ্রেপ্তার