নৌঘাটে ঘরমুখী মানুষের চাপ, দেরিতে ছাড়ল ফেরি
Published: 28th, March 2025 GMT
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। বাড়তি চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে ফেরি কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত যাত্রী ও যানবাহন কারণে আজ শুক্রবার সকালে নির্ধারিত সময়ের প্রায় দেড় ঘণ্টা পর দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের উদ্দেশে ছেড়ে যায় ফেরি কপোতাক্ষ। এদিকে সন্দ্বীপমুখী যাত্রীদের চাপ রয়েছে সীতাকুণ্ডের কুমিরা নৌঘাটেও। টিকিট কাটার পর স্পিডবোটে উঠতে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে যাত্রীদের।
বাঁশবাড়িয়া ঘাটে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফেরিতে করে সন্দ্বীপে যেতে রাত থেকে ঘাটে ভিড়তে থাকে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী বিভিন্ন যানবাহন। ঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। সকাল সাড়ে ছয়টায় ফেরি ছাড়ার কথা। এ জন্য সকাল ছয়টার দিকে ফেরিতে গাড়ি ওঠানো শুরু হয়। তবে প্রতিযোগিতা করে গাড়ি নিয়ে ফেরিতে উঠতে গিয়ে চালকদের মধ্যে হট্টগোল তৈরি হয়। এ পরিস্থিতিতে নির্ধারিত সময়ের প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ছাড়তে হয় ফেরিটি। ফেরিতে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়ের কারণে পা ফেলার জায়গা ছিল না।
সকালে ফেরিটিতে করে সন্দ্বীপে গেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকাল সাতটায় ঘাটে গিয়ে দেখি, পা ফেলার জায়গা নেই। অনেক যাত্রীবাহী বাস ফেরিতে জায়গা পায়নি। দ্বিতীয় ট্রিপেও কিছু বাস যেতে পারবে না দেখে যাত্রীরা টিকিট কেটে ফেরিতে উঠে যান।’
পরিবারের পাঁচ সদস্য নিয়ে ফেরিটিতে করে সন্দ্বীপে যাচ্ছিলেন একটি তৈরি পোশাক কারখানার কর্মকর্তা শামসুদ্দিন স্বপন। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম নগরের হালিশহর থেকে সন্দ্বীপের এনাম নাহারে যাওয়ার জন্য যাত্রীবাহী বাসে উঠেছিলেন তিনি। ঘাটে পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় তাঁদের বাসটি ফেরিতে উঠতে পারেনি। এ অবস্থায় তাঁরা টিকিট কেটে ফেরিতে উঠে গেছেন। ফেরির টিকিটের জন্য বাড়তি কিছু খরচ হলেও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাওয়ায় তিনি খুশি।
জানতে চাইলে ফেরির মাস্টার শামসুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ফেরিতে ওঠার র্যাম্প স্থান বিচ্যুত হওয়ার কারণে গাড়ি উঠতে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। এ ছাড়া বিভিন্ন গাড়ির চালকদের মধ্যে ঝামেলার কারণে ফেরিতে গাড়ি উঠতে দেরি হয়েছে। তাই দেড় ঘণ্টা দেরিতে ফেরি ছাড়তে হয়েছে। আজ প্রথম ট্রিপে ৪টি বাস, ২টি ট্রাক, ২৪টি প্রাইভেট কার, ৩৬টি মোটরসাইকেল ও দেড় শতাধিক যাত্রী নিয়ে বাঁশবাড়িয়া ঘাট থেকে ফেরি ছেড়েছে।
স্পিডবোটের জন্য দীর্ঘ সারি
ফেরিঘাটে মানুষের অপেক্ষা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
স্বামী-সন্তানের সঙ্গে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন, মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে বাসের চাকায় মৃত্যু নারীর
চট্টগ্রামের পটিয়ায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ার পর বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম ফজিলাতুন নেসা (২৮)। তিনি মাগুরা জেলার মহম্মদপুর থানার মহেশপুর গ্রামের আলিমুজ্জামান সুজনের স্ত্রী।
পুলিশ জানায়, স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে গতকাল রোববার চট্টগ্রামে বেড়াতে আসেন ফজিলাতুন নেসা। তাঁদের ছয় বছর বয়সী সন্তানও সঙ্গে ছিল। গতকাল চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাটের একটি বাসায় তাঁরা রাত্রিযাপন করেন। সকালে সেখান থেকে মোটরসাইকেলে করে তাঁরা বান্দরবানের উদ্দেশে রওনা দেন। আলিমুজ্জামান মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন এবং তাঁর পেছনে ছয় বছর বয়সী সন্তান হুমায়ের হাম্মাদ, এরপর ফজিলাতুন নেসা বসে ছিলেন।
সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়ার নয়াহাট এলাকায় পৌঁছায় মোটরসাইকেলটি। সেখানে সামনে থাকা একটি লেগুনা হঠাৎ সড়কে থেমে গেলে তাৎক্ষণিক মোটরসাইকেলটির ব্রেক কষেন আলিমুজ্জামান। এ সময় ফজিলাতুননেসা মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন। এর পরপরই পেছন থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস ফজিলাতুন নেসাকে পিষ্ট করে। তাঁকে উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গতকাল রাতে চট্টগ্রাম নগরের যে বাসাটিতে ফজিলাতুন নেসা ছিলেন, সেটি তাঁর স্বামী আলিমুজ্জামানের বন্ধু রবিউল ইসলামের। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রবিউল ইসলামের বোন আশরিফা আহমদ ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ফজিলাতুন নেসার স্বামী নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির কনিষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক। পরিবার নিয়ে পাহাড় দেখতে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন তিনি। বেড়াতে যাওয়ার পথেই স্বামী-সন্তানের সামনে দুর্ঘটনায় তাঁর প্রাণহানি হয়েছে।
পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট ওয়াসিম আরাফাত দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নিহত নারীর লাশ আইনি–প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। লেগুনা ও বাসের চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি।