সময়ের পরিক্রমায় বাজারে বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত সেমাই থাকলেও চট্টগ্রামে বাংলা সেমাইয়ের কদর কমেনি আজও। ক’দিন পরই পবিত্র ঈদুল ফিতর। বৃহৎ এই উৎসবে নতুন পোশাকের মতো আগ্রহ থাকে খাবারের প্রতিও। সেই স্থান দখল করেছে বাংলা সেমাই। কবে থেকে এই খাবারের প্রচলন, তা অজানা থাকলেও চট্টগ্রামে বাঙালির ঈদ উদযাপনে এখনও বেশির ভাগ পরিবারের মেন্যুতে স্থান করে নিয়েছে এটি।
ঈদ মৌসুমে বাংলা সেমাইয়ের কদর বেড়ে যায় বহু গুণ। তাই সেমাই তৈরিতে এখন দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগর ও শ্রমিকরা। চাঁদ রাত পর্যন্ত চলে সেমাই তৈরির মহাকর্মযজ্ঞ। চট্টগ্রাম নগরের চাক্তাই, রাজাখালী, খাতুনগঞ্জ, মাদারবাড়ীসহ আরও কয়েকটি এলাকার কারখানায় পুরোদমে চলছে সেমাই তৈরি। অনেক কোম্পানি এসব কারখানায় উৎপাদিত সেমাই প্যাকেটজাত করে তা বাজারজাত করে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন কারখানায় তৈরি চিকন ও সাদা বাংলা সেমাই ১৫ উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় চলে যায়। সেমাই তৈরির দৈনন্দিন আয় দিয়ে কয়েক হাজার পরিবার আর্থিক সচ্ছলতা লাভ করেছে।
চট্টগ্রামে প্রতিবছর বাংলা সেমাই তৈরির হিড়িক পড়ে যায়। সেমাই তৈরিতে যোগ দেন কিছু মৌসুমি ব্যবসায়ীও। কারিগররা জানান, বাংলা সেমাই তৈরির উপকরণ হচ্ছে ময়দা ও পানি। আর লাচ্ছা সেমাই তৈরির উপকরণ ময়দা, পাম অয়েল ও ঘি। এখানকার তৈরি সেমাই খোলা ও প্যাকেটজাত হয়ে চলে যায় চট্টগ্রামের ছোট-বড় বাজারে। ঈদ এগিয়ে আসায় এখন দম ফেলার ফুরসত নেই কারিগর ও শ্রমিকদের। কারখানার ভেতরে, ছাদে বা কোনো ভবনের ওপরে টানানো হয়েছে লম্বা বাঁশ। সেসব বাঁশের ওপরে রোদে শুকানো হচ্ছে সেমাই। 
রাজাখালীর লামাবাজার কারখানার কারিগর কুতুব উদ্দিন বলেন, সারাবছরের তুলনায় ঈদে বাংলা সেমাইয়ের কদর বেড়ে যায় বহু গুণ। দূরদূরান্ত থেকে ছোট-বড় ব্যবসায়ীরা কিনতে ছুটে আসেন। কারখানায় কয়েক হাজার মানুষের জীবিকা চলে।
বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি বাংলা সেমাই মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৯০ টাকা। ক্যাবের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, বাংলা সেমাইয়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ঐতিহ্য-সংস্কৃতি। প্রবীণদের বড় অংশ ঈদের নামাজে যাওয়ার আগে খেয়ে যান বাংলা সেমাই। বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারের এমএন স্টোরের মালিক মো.

নওশাদ বলেন, দোকানে বিভিন্ন কোম্পানির সেমাই থাকলেও আজও সাধারণ মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু বাংলা সেমাই।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ ব জ র

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো বিশেষ ফিউশন খাবার উপস্থাপনা

মানজু রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এক ব্যতিক্রমধর্মী খাবার আয়োজন, যেখানে দেশি স্বাদের সাথে ছিল আন্তর্জাতিক রান্নার কৌশল ও উপকরণ। আয়োজনে ঐতিহ্য ও আধুনিকতা একসূত্রে গাঁথা হয়েছে।

সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, এ আয়োজনের মূল আকর্ষণ ছিলেন আন্তর্জাতিকভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রন্ধনশিল্পী ইনারা জামাল, যিনি ফুড স্টাডিজে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর এবং ইনস্টিটিউট অব কালিনারি এডুকেশন, নিউইয়র্ক থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।

ইনারা জামাল বলেন, ‘খাবার শুধু স্বাদের বিষয় নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক অনুষঙ্গ। আমি চাই বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারকে ভিন্ন দেশের উপকরণ ও কৌশলের সঙ্গে মিশিয়ে বিশ্বদরবারে নতুন রূপে উপস্থাপন করতে। সৃজনশীল উদ্ভাবনের মাধ্যমে বাংলাদেশি খাবারকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরা। একইসঙ্গে, তার লক্ষ্য বাংলাদেশের খাদ্যসংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে গবেষণার আলোয় তুলে ধরা, যেন এই সমৃদ্ধ উত্তরাধিকার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষিত থাকে। খাবারে তিনি সবসময় প্রাধান্য দেন প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদান এবং টেকসই উপস্থাপনাকে।

এই আয়োজনকে আরও রঙিন করে তোলে রন্ধনশিল্পী মালিহার বাহারি পরিবেশনা, যেখানে দেশি উপাদান ব্যবহার করে তৈরি করা হয় নানান স্বাদের সুস্বাদু খাবার।

আয়োজকরা জানান, এই আয়োজনের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশি খাদ্যসংস্কৃতিকে আধুনিক উপস্থাপনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরা এবং ভোজনরসিকদের সামনে এক নতুন স্বাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে আসা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা খাবারের স্বাদ, গন্ধ ও পরিবেশনায় মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা রক্ষার ওপর জোর দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আহারে চার পদ
  • মাটির গুণগত বৃদ্ধিতে ‘বিনা বায়োচার’ উদ্ভাবন
  • সুন্দর ভবনে পরিত্যক্ত কক্ষ, কমেছে শিক্ষার্থী, ঢিমেতালে চলে কার্যক্রম
  • ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো বিশেষ ফিউশন খাবার উপস্থাপনা