‘আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়। সন্তান যার হারায় সেই বোঝে এর কষ্ট। পুরো রমজানে রাতে আমি ঘুমাতে পারিনি। সামনে আর কেউ যেন হাসিনার (সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) মতো এ রকম মানুষ না মারে। প্রয়োজনে আমরা মায়েরা সামনে যাব, তবুও সন্তানদের হারাতে চাই না।’

কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন শহীদ মিরাজের মা। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একটি প্রতিনিধিদল রাজধানীর মিরপুরের জুলাই শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও খোঁজখবর নিতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।

এনসিপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৭ মার্চ দুপুর থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ছয় শহীদ পরিবারের বাসায় শুভেচ্ছা বিনিময় করে তাঁদের প্রতিনিধিদল। এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীবের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল শহীদ পরিবারের সদস্যদের সার্বিক খোঁজখবর নেয় ও ঈদ উপহার পৌঁছে দেয়।

অন্যদের মধ্যে মিরপুরের ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শহীদ মমিন ইসলাম, শহীদ দেলোয়ার হোসেন, দুয়ারীপাড়ার শহীদ বাবুল আক্তার ও রূপনগরের শহীদ সাকিবের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে এনসিপির প্রতিনিধিদল।

শহীদ সাকিবের বোন বলেন, ‘আপনাদের আমার মা দেখলে ভালো হতো। আমার মা স্বাভাবিক হতে পারছেন না। খুলনার সোনাডাঙ্গায় নিজ বাড়িতে সারাক্ষণ সাকিব বলে ডাকাডাকি করেন; স্বাভাবিক হতে পারছেন না।’

ইস্টার্ন হাউজিংয়ে ভাড়া বাসায় থাকে শহীদ দেলোয়ারের পরিবার। তিনি পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন। তাঁর ছোট তিন সন্তানের পড়াশোনা, ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত পরিবার। শহীদ দেলোয়ারের স্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবেশী সন্তানদের বাবা বলে ডাকতে দেখলে, আমার সন্তানেরা বাসায় এসে মন খারাপ করে।’

দুয়ারীপাড়ার শহীদ বাবুল আক্তারের পরিবারও একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে আর্থিক সংকটে পড়েছে।

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সবচেয়ে বড় স্টেকহোল্ডার হলেন শহীদেরা। তাঁরা জীবন উৎসর্গ করে খুনি হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছেন। তাই সরকারকে অতি দ্রুত শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন করতে হবে। পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বিচার করতে হবে।

এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য ইমরান নাঈম, বিভিন্ন থানা প্রতিনিধি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেরও থানা প্রতিনিধিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এনস প র

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষার্থীদের মানবিক শিক্ষায় উৎসাহিত করতে বন্দরের দুটি স্কুলে ‍ডিসি

নারায়ণগঞ্জের শিক্ষার মানোন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের মানবিক শিক্ষায় উৎসাহিত করতে দুটি স্কুল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বন্দর উপজেলার ২১নং কুড়িপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং কুড়িপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ঘুরে দেখেন তিনি।

এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন, তাদের পড়াশোনার খোঁজখবর নেন এবং পড়াশোনায় আরও আগ্রহী হওয়ার জন্য বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।

জেলা প্রশাসক তার পরিদর্শনে শিক্ষকদের সঙ্গেও কথা বলেন। তিনি শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি এবং শিক্ষার্থীদের মানবিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়কেই জোর তাগিদ দেন। তিনি বলেন, শুধু ফলাফলমুখী শিক্ষা নয়, শিক্ষার্থীদের মাঝে মানবিকতার বিকাশ ঘটানোও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

লেখাপড়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সুস্থ বিনোদন এবং মাদকমুক্ত রাখতে জেলা প্রশাসক খেলাধুলার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্রিকেট ব্যাট, বল, ব্যাডমিন্টন ও দাবাসহ বিভিন্ন ক্রীড়াসামগ্রী বিতরণ করেন।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে জেলা প্রশাসক তাদের শারীরিক সুস্থতার খোঁজখবর নেন। তিনি শিশুদের মাঝে জুস ও কেক বিতরণ করেন।

জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি এবং ফলাফলমুখী শিক্ষার বাইরে মানবিকতার বিকাশে তিনি বদ্ধপরিকর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিক্ষার্থীদের মানবিক শিক্ষায় উৎসাহিত করতে বন্দরের দুটি স্কুলে ‍ডিসি