‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এল খুশির ঈদ’, কাজী নজরুল ইসলামের এই গানের মতো রোজা শেষে ঈদের দিনে বাঙালি মুসলমানের খুশির যেন শেষ নেই। আর ঈদ উপলক্ষে নতুন জামা–জুতোর সঙ্গে কেনাকাটার প্রধান অনুষঙ্গ সুগন্ধি, আতর, তসবি, টুপি ও জায়নামাজ। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসে পাঞ্জাবির সঙ্গে মিলিয়ে টুপি ও পছন্দের সুবাস গায়ে মাখাতে আতর ও টুপির দোকানে যেন ভিড় আরও বাড়ে। মুসল্লিরা বাহারি টুপি, নকশা ও কারুকাজ করা জায়নামাজের সঙ্গে খুঁজে নেন পছন্দের আতর। এবারও ঈদুল ফিতরের দরজায় দাঁড়িয়ে শনিবার বায়তুল মোকারম মসজিদ মার্কেটে তরুণ–বৃদ্ধ সববয়সী মুসল্লিদের তসবি–আতর–টুপির দোকানে কেনাকাটায় ভিড় দেখা গেছে।

সরেজমিনে বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, দেশে বানানো টুপির পাশাপাশি মার্কেটের দোকানগুলোতে আছে চীন, ভারত, পাকিস্তান ও দুবাইয়ের টুপি। মালয়েশিয়ার তৈরি ভেলবেট মাহতির টুপি, ইন্ডিয়ান বুরি টুপি, সৌদির বুগিস টুপি। এসব টুপির দাম ৫০০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত। পাকিস্তানি টুপি ২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। এর মধ্যে পাথরের কাজ করা পাকিস্তানি টুপি ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে মোটামুটি ভালো মানের একেকটি গোলটুপির দাম রাখা হচ্ছে ১০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে, একটু উন্নত টুপির দাম পড়ছে ২৫০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে।

বরকতি আতর হাউসের কর্ণধার সমকালকে বলেন, ‘২০ রমজানের পর থেকে টুপির বাজারে ক্রেতা সমাগম বেড়েছে। বিক্রিও ভালো হচ্ছে। আতর-টুপি বেশি বিক্রি হচ্ছে। প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা দেশি আতরের পাশাপাশি বিদেশি আতর-টুপি ও তসবি এনেছি।’

সুগন্ধি লাগানো মহানবীর (সা.

) সুন্নত। তিনি সুগন্ধি লাগিয়ে ঈদগাহে যেতেন। তাই সব শ্রেণির মুসল্লি সুগন্ধি লাগিয়ে ঈদগাহে অথবা মসজিদে যান। ঈদের দিন সদ্য ভাজ ভাঙা পাঞ্জাবিতে আতরের সুবাস, নতুন টুপি আর হাতে জায়নামাজ মুসলমানদের চিরচেনা রুপ। দেশের বাজারে দেশীয় আতরের সঙ্গে মিসর, পাকিস্তান, ফ্রান্সসহ মধ্যপ্রাচ্যের নানা ব্র্যান্ডের আতর পাওয়া যায়। এসব আতরের মধ্যে রয়েছে হাটকরা উদ, স্টাইল উদ, হোয়াট উদ, আগর, আম্বার, রোজ আইটেম, দরবার, জান্নাতুল ফেরদৌস ইত্যাদি। ১ মিলিগ্রাম ৫০ টাকা থেকে শুরু করে আড়াই হাজার  টাকা পর্যন্ত আতর পাওয়া যাচ্ছে বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটে।

লালবাগ থেকে হোসেন আলীর সঙ্গে টুপি আতর কিনতে মার্কেটে এসেছেন ছেলে রেজোয়ান আহমেদ। সমকালকে রেজোয়ান বলেন, ‘ঘরের সবার জন্য জামা-কাপড়সহ অন্যান্য সব কেনাকাটা শেষ। তবে ঈদের জন্য নতুন করে টুপি এবং আতর কেনা বাকি ছিল। বাবাকে নিয়ে আতর–টুপি কিনতে এসেছি। বাবার পছন্দ কড়া সুবাসের আতর। আমি নেব হালকা সুবাসের। এরপর পছন্দমতো টুপি আর জায়নামাজ কিনব।’

রমজানের শুরু থেকেই আতর টুপির সঙ্গে তসবি কেনা শুরু হয়। অন্যসময় টুকটাক বিক্রি হলেও রমজানে আতর–তসবির দোকানে ভিড় বাড়ে। নানা পদের তসবি আছে বাজারে। কাঠের তৈরি, পাথরের তৈরি ও ক্রিস্টালের তৈরি তসবিও আছে বাজারে। এসবের দাম পড়বে ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৬ হাজার টাকা। ইউজার পাথরের তৈরি তসবি দাম পড়বে ৬ হাজার টাকা। এ ছাড়াও রয়েছে ক্রিস্টাল ১০০ থেকে ২০০ টাকা, চন্দন দেড় হাজার, জয়তুন ১২০০, টাইগর তসবিহ দুই হাজার, কাঠের তৈরি তসবিহ ৫০ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা।

ঈদের নামাজের অন্যতম অনুষঙ্গ বৈচিত্র্যময় নকশা ও কারুকাজ করা জায়নামাজ। বাজারে তুরস্ক, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বেলজিয়াম থেকে আসা বিদেশি জায়নামাজের চাহিদাই বেশি। এসব জায়নামাজের দাম পড়ছে সাড়ে ৩০০ থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ ব জ র আতর আতর ট প আতর র পছন দ রমজ ন মসজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের ভেতরে একটা অংশ নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে: এনসিপি

সরকারের ভেতরের একটি পক্ষ ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নিজেরাই ঐকমত্য কমিশন হওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এই চেষ্টার কারণে নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন এ কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ সংস্কারকে ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশন সুপারিশ উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকার আদেশ জারি করবে, সেটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন সরকারের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আরও এক সপ্তাহ রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাপ–আলোচনার কথা বলা হয়, তখন মনে হয় যে সরকার আসলে এই সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে সাপ-লুডো খেলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৯৬-তে পৌঁছে গিয়েছিলাম, সেটাকে আবার তিনে নিয়ে আসা হয়েছে সাপ কেটে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।’

অতি দ্রুত সরকারকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সরকারকে নিজেকেই দায়িত্ব নিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। সামনের সংসদকে গাঠনিক ক্ষমতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে অর্জিত জনগণের অভিপ্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন বাস্তবায়িত হয়, সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ