স্মার্টফোনে ভালোমানের ছবি তুলবেন যেভাবে
Published: 30th, March 2025 GMT
বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তৈরি হালনাগাদ স্মার্টফোনে শক্তিশালী ক্যামেরা যুক্ত থাকায় অনেকেই ভাবেন, ছবি তুললেই সেগুলোর মান ভালো হবে। কিন্তু তা নয়, ভালোমানের ছবি তোলার জন্য ফোনের ক্যামেরার পাশাপাশি বেশ কিছু কৌশলও জানা থাকা দরকার। স্মার্টফোনে ভালোমানের ছবি তোলার কৌশলগুলো জেনে নেওয়া যাক।
আলোর ব্যবহারএকটি ছবিকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য আলোর সঠিক ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। আর তাই ছবি তোলার সময় প্রথমেই প্রাকৃতিক আলো ব্যবহারের চেষ্টা করতে হবে। সম্ভব না হলে ফ্ল্যাশলাইট ব্যবহার করে ছবির উজ্জ্বলতা বাড়াতে হবে। ফ্ল্যাশলাইট শুধু ছবির নির্দিষ্ট স্থানকে বেশি ফোকাস করে, আর তাই ছবির বিষয়বস্তু অর্থবহ এবং আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে আশপাশে যথেষ্ট আলোর ব্যবস্থা করতে হবে।
সঠিকভাবে ক্যামেরা ফোকাসছবির বিষয়বস্তু স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলতে সঠিকভাবে ক্যামেরা ফোকাস করতে হবে। এ জন্য ছবি তোলার আগে ফোনের পর্দায় ছবির প্রধান বিষয়ের ওপর আলতো করে ট্যাপ করে ফোকাস পয়েন্ট নির্ধারণ করতে হবে।
ফ্রেমের ভিন্নতাএকই ধরনের ফ্রেম বা অ্যাঙ্গেল বারবার ব্যবহার না করে ভিন্নতা আনার চেষ্টা করতে হবে। এ জন্য নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা বস্তুর ছবি একই স্থান থেকে না তুলে বিভিন্ন কোণ থেকে একাধিকবার তুলতে হবে। বর্তমানে ফোনের ক্যামেরায় বিভিন্ন ধরনের সেন্সরযুক্ত লেন্স থাকায় ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানের ছবি ভালো হয়ে থাকে।
ব্যাকগ্রাউন্ড ঝাপসাপেশাদার ফটোগ্রাফিতে বিষয়বস্তুকে হাইলাইট করতে ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার করা একটি পরিচিত কৌশল। আর তাই স্মার্টফোনের পোর্ট্রেট মোড ব্যবহার করে প্রয়োজন অনুযায়ী পেছনের দৃশ্য ঝাপসা করে ছবি তুলতে হবে।
জুম ব্যবহার না করাকোনো ছবি সামনে থেকে নেওয়ার জন্য ক্যামেরার জুম সুবিধা ব্যবহার না করাই ভালো। এতে ছবির গুণগত মান নষ্ট হয়। সমস্যা সমাধানে নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা বস্তুর কাছাকাছি গিয়ে ছবি তুলতে হবে।
সম্পাদনা অ্যাপের সীমিত ব্যবহারভালো মানের সম্পাদনা অ্যাপ ব্যবহার করে একটি ছবির মানের পরিবর্তন করা যায়। তাই ছবি তোলার পর অ্যাপের মাধ্যমে ছবির ফ্রেম, আলো, অনুপাত ইত্যাদি পরিবর্তন করার পাশাপাশি বিভিন্ন ফিল্টার ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সম্পাদনা অ্যাপের বিভিন্ন ফিল্টার অতিরিক্ত ব্যবহার করলে ছবির স্বাভাবিক সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। আর তাই সম্পাদনা অ্যাপের সীমিত ব্যবহার করতে হবে।
ট্রাইপড ব্যবহারস্মার্টফোনে ছবি তোলার সময় হাত কেঁপে যাওয়ার কারণে অনেকে সময় ছবি ঝাপসা হয়ে যায়। এ সমস্যা সমাধানে ট্রাইপড ব্যবহার করে ছবি তুলতে হবে।
‘র’ ফরম্যাটে ছবি তোলাবর্তমানে অনেক ফোনেই ‘র’ ফরম্যাটে ছবি তোলার সুবিধা রয়েছে। ‘র’ ফরম্যাটে তোলা ছবিগুলো মূলত প্রক্রিয়াজাত হয়ে জেপিইজি ফাইলে রূপান্তরের আগের অবস্থায় দেখা যায়, এর ফলে ছবি ইচ্ছেমতো সম্পাদনা করা সম্ভব।
সূত্র: টেকলুসিভ
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর আর ত ই
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে বইমেলায় বিক্রি কম, এখনো আশায় আছেন প্রকাশকেরা
রাজশাহী বিভাগীয় বইমেলার প্রথম তিন দিনে লোকজনের ভিড় থাকলেও বেচাকেনা তেমন হয়নি। এতে অনেক প্রকাশকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে আগামী কয়েক দিনে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছেন প্রকাশকেরা ও আয়োজক কর্তৃপক্ষ।
গত শুক্রবার রাজশাহী জেলা কালেক্টরেট মাঠে ৯ দিনব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ মেলা চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৭০টি বেসরকারি প্রকাশনাসহ মোট ৮১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে মেলা চলছে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর ছুটির দিনে মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়।
উদ্বোধনের আগের দিন বৃষ্টিতে মেলার মাঠ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। সেই কর্দমাক্ত পরিবেশেই মেলার উদ্বোধন হয়। দর্শনার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পরে প্রতিটি স্টলের সামনে ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বিক্রির খরা কাটেনি বলে জানালেন বিক্রেতারা।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন অংশে তখনো পানি জমে আছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মঞ্চের সামনের প্যান্ডেলেও কাদা। সেখানেই কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা চলছিল, তবে দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। স্টলের সামনে ইটের সলিংয়ের তৈরি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন অনেকে। অনেকে বই দেখছেন।
সূর্যোদয় প্রকাশনীর বিক্রেতা রিপন আলী বলেন, প্রথম দিন তো কাদাপানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তখনো মানুষ ছিলেন। এখন ইট বিছানোর পর আরও বেশি মানুষ আসছেন, ভিড়ও করছেন, কিন্তু বই কিনছেন খুব কম।
ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টলে কাদার ওপর চেয়ার পেতে বসে থাকতে দেখা গেল বিক্রয়কর্মী ও চিত্রশিল্পী অর্ণব পাল সন্তুকে। তিনি বলেন, মানুষ আসছেন, ঘুরে দেখছেন, কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। মেলার ব্যবস্থাপনা আরও ভালো হতে পারত। আরেক বিক্রেতা আবদুল্লাহ হীল বাকি জানালেন, এমনও স্টল আছে, যেখানে সারা দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বইও বিক্রি হচ্ছে না।
তবে হতাশার ভিড়ে আশার কথাও শোনালেন কেউ কেউ। চট্টগ্রাম থেকে আসা নন্দন বইঘর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী সুব্রত কান্তি চৌধুরী বলেন, বেচাবিক্রি আজ না হোক কাল হবে। মানুষ যে মেলায় এসে বই হাতে নিয়ে দেখছেন, এটাই বড় পাওয়া। এতে তাঁদের মধ্যে বই কেনার আগ্রহ তৈরি হবে।
মেলায় আসা পাঠকদের মধ্যে অবশ্য ভিন্ন চিত্র। দুই সন্তানের জন্য শিশুতোষ বই কিনে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আনন্দটাই অন্য রকম।
মেলা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপ্যাধ্যায়ের বই কিনেছেন মনির হোসেন। তিনি বলেন, মেলায় একসঙ্গে অনেক বই পাওয়া যায়, যা বই কেনার জন্য দারুণ সুযোগ।