দেশের স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে গড়ে তোলা হয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক। প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য সেখানে প্রশিক্ষিত একজন স্বাস্থ্যকর্মী থাকেন। অ্যান্টিবায়োটিক ও জটিল রোগের ওষুধ ছাড়া প্রায় সব ধরনের ওষুধ কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো থেকে রোগীদের বিনা মূল্যে সরবরাহ করা হয়। এখন শরীয়তপুরের এমন স্বাস্থ্যকর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না ৯ মাস ধরে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। ফলে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোও বন্ধ থাকছে। রোগীরা এসেও ফিরে যাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতি আসলে কোনোভাবেই কাম্য নয়। 

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, বেতন না পেয়ে অর্থকষ্টে দিন কাটাচ্ছেন শরীয়তপুরের ১৪৩ জন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী কর্মী (কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার)। ওয়ার্ড পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠান কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা প্রদানকারী স্বাস্থ্যকর্মীরা গত বছরের জুলাই থেকে বেতন পাচ্ছেন না। ৯ মাস ধরে বেতন না পেয়ে এসব স্বাস্থ্যকর্মী পরিবার নিয়ে অনেকটা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এত দীর্ঘ সময় ধরে বেতন বন্ধ থাকলে এমন করুণ পরিস্থিতি হওয়াই স্বাভাবিক।

প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেছে। ২০০৯ সালের পর শরীয়তপুরে ওই ক্লিনিকগুলোর কার্যক্রম শুরু হয়। ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র ছাড়াও জেলার ৬৫টি ইউনিয়নের দুটি করে ওয়ার্ডে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম শুরু হয়। অ্যান্টিবায়োটিক ও জটিল রোগের ওষুধ ছাড়া প্রায় সব ধরনের ওষুধ কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো থেকে রোগীদের বিনা মূল্যে সরবরাহ করা হয়।

দীর্ঘদিন ধরে বেতন না পাওয়ায় অনেক স্বাস্থ্যকর্মী নিয়মিত কমিউনিটি ক্লিনিকে যান না। প্রথম আলোর প্রতিবেদক ১০ দিনে কয়েকটি উপজেলার ২০টি কমিউনিটি ক্লিনিক ঘুরে অন্তত ৮টি বন্ধ পেয়েছেন। ওই ক্লিনিকগুলোতে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের পাওয়া যায়নি। অনেকে দিনের যেকোনো সময় খুলে দু-এক ঘণ্টা অবস্থান করে বন্ধ করে চলে যান। এরপর চিকিৎসা নিতে আসা লোকজন চিকিৎসাসেবা না পেয়ে ফিরে যান।

সাধারণত দরিদ্র মানুষেরাই কমিউনিটি ক্লিনিকে আসেন। ফলে এসব ক্লিনিক যখন বন্ধ থাকে, তাতে বঞ্চিত হন এসব মানুষই। যেমন নারায়ণপুর ইউনিয়নের পুটিয়া এলাকায় অবস্থিত কমিউনিটি ক্লিনিকটি বন্ধ পেয়ে একজন অসুস্থ নারী বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। অসুস্থ হলে এখানে ছুটে আসি। কখনো খোলা পাই, আবার কখনো বন্ধ থাকে। তখন ওষুধ না নিয়েই ফিরে যেতে হয়।’

সিভিল সার্জন রেহান উদ্দিন বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পের আওতায় স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন দেওয়া হতো। এখন ওই প্রকল্পের মাধ্যমে বেতন দেওয়া হচ্ছে না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে।’ আশা করি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে। স্বাস্থ্যকর্মীরাও স্বাস্থ্যসেবায় নিয়মিত হবেন, সেটিই কাম্য।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ব স থ যকর ম বন ধ থ ক

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান

যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল রিচার্ড কোরেল ভেবেছিলেন, দেশটির পারমাণবিক বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে তাঁর নিয়োগ নিশ্চিত হওয়া নিয়ে গত বৃহস্পতিবার শুনানি সহজভাবেই শেষ হবে। তবে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণের আগের দিন বুধবার রাত ৯টা ৪ মিনিটে সে আশা ভেঙে গেছে।

ওই সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে বিশ্বকে চমকে দেন। বলেন, তিনি মার্কিন বাহিনীকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা অবিলম্বে শুরু করতে বলেছেন। তাঁর যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে রাশিয়া ও চীনের পেছনে থাকতে পারে না।

ট্রাম্প বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় এবং চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।’

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিনেটে সশস্ত্র বাহিনী কমিটির প্রায় ৯০ মিনিটের শুনানিতে ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে বারবার কোরেলকে প্রশ্ন করা হয়। ট্রাম্পের মন্তব্যে অনেক আইনপ্রণেতাই এ সময় ছিলেন বিভ্রান্ত। এ থেকে বোঝা যায়, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন ও এর বাইরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন।

মার্কিন কর্মকর্তারা পরিষ্কার করেননি যে ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থার পরীক্ষা করতে বলছেন, নাকি বিস্ফোরক পরীক্ষায় ৩৩ বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ করতে চাইছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ট্রাম্পের নির্দেশ বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে, যা শীতল যুদ্ধের ভয়ংকর স্মৃতি ফিরিয়ে আনে।

কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সদস্য সিনেটর জ্যাক রিড কোরেলকে প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র আবারও পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা শুরু করলে তা কি বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বাড়াবে এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে।

কোরেল বলেন, ‘যদি আমাকে স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের (স্ট্র্যাটকম) কমান্ডার হিসেবে নিশ্চিত করা হয়, আমার কাজ হবে, পারমাণবিক পরীক্ষাবিষয়ক যেকোনো আলোচনা সম্পর্কে সামরিক পরামর্শ দেওয়া।’

ভাইস অ্যাডমিরাল কোরেলকে গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প স্ট্র্যাটকমের প্রধান করার জন্য মনোনীত করেন। স্ট্র্যাটকম পারমাণবিক হামলা প্রতিরোধ ও আক্রমণের সক্ষমতা নিয়ে কাজ করে। কোরেল পুরো শুনানিতে সতর্কভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।

পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় ও চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

শুনানির এক পর্যায়ে স্বতন্ত্র সিনেটর অ্যাঙ্গাস কিং প্রশ্ন করেন, ট্রাম্প কি পারমাণবিক ডিভাইসের বিস্ফোরক পরীক্ষা নয়, বরং ক্ষেপণাস্ত্র বা অন্য সরবরাহ ব্যবস্থা পরীক্ষার কথা বলছেন কি না।

জবাবে কোরেল বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্য জানি না, তবে এটি এমন একটি ব্যাখ্যা হতে পারে, আমি তা মেনে নিই।’

দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে গত বৃহস্পতিবার মুখোমুখি বৈঠকে যোগ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্বকে ১৫০ বার ধ্বংস করার মতো পারমাণবিক অস্ত্র আমাদের আছে: ট্রাম্প
  • দুই সপ্তাহের মধ্যে তেহরানে সুপেয় পানি ফুরিয়ে যেতে পারে
  • চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
  • জ্বালানি খাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন
  • বাজারে আগাম সবজি আসতে দেরি, দাম চড়া
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • টমাহক কত দূরে আঘাত হানতে পারে, রাডারে কেন ধরা পড়ে না
  • সামুদ্রিক মাছে ভরপুর আড়ত, দাম কেমন
  • যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান
  • ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিতে পেন্টাগনের সায়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প