চারপাশে সবুজ শালবন। মাঝে দূর্বা ঘাসে ঢাকা সমতল মাঠ। প্রকৃতির সবুজ এই কার্পেটে শিশুরা দৌড়াচ্ছে, খেলছে, বেলুন ওড়াচ্ছে, কর্কশ বেলুনবাঁশি বাজাচ্ছে। শিশুদের আনন্দ উদ্‌যাপন দেখে মনে হতেই পারে, ঈদ এখনো ফুরোয়নি।

গতকাল বুধবার বিকেলে এই দৃশ্য দেখা যায় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার পাবরিয়াচালা গ্রামের কফুরচালা মাঠে। ব্যতিক্রমী এই আয়োজনের নাম ‘শিশুদের ঈদ আনন্দ’। আয়োজন করে স্থানীয় ‘পারুলী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন’। শিশুদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপপরিচালক সেলিম রেজা, নদী পরিব্রাজক দলের শ্রীপুর শাখার সভাপতি সাঈদ চৌধুরীসহ সমাজের নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ।

গতকাল বিকেলে চারটার দিকে কফুরচালা মাঠে গিয়ে দেখা যায়, এক প্রান্তে তৈরি হয়েছে মঞ্চ। আর সামনের মাঠজুড়ে ছড়িয়ে আছে শিশুরা। হঠাৎ মঞ্চ থেকে ঘোষণা এল, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা শুরু হতে যাচ্ছে। ঘোষণা শুনেই শতাধিক শিশু সবুজ ঘাসে বসে ইচ্ছেমতো ছবি আঁকতে শুরু করে। ১৫ মিনিটের এই চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্রায় সব শিশুই অংশ নেয়। এরপর মাঠের দক্ষিণ প্রান্তে চলছিল বিভিন্ন বয়সী শিশুদের দৌড় প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি। বাঁশির সংকেত পেয়েই দে ছুট! কে কার আগে দৌড়ে গিয়ে মাঠের বিপরীত পাশের দড়িটি ছুঁতে পারে, সে চেষ্টায় ব্যস্ত হয় তারা। তবে এই প্রতিযোগিতায় সবাইকেই বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

পরের পর্বে ছিল শিশুদের বিস্কুটদৌড় প্রতিযোগিতা। বিভিন্ন বয়সী শিশুরা সুতায় বাঁধা বিস্কুট মুখে নেওয়া চেষ্টায় লাফিয়ে উঠছিল। কেউ কেউ বিস্কুট মুখে পুরে দৌড়ে মাঠের অন্য প্রান্তে থাকা বিচারকদের কাছে উপস্থিত হয়। বিকেল ঘনিয়ে সন্ধ্যা হওয়ায় আগেই মাঠের পূর্ব-দক্ষিণ কোণে বসে বল নিক্ষেপের আয়োজন। শিশুদের দুই দলে ভাগ করে নির্দিষ্ট দূরত্বে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করানো হয়। এক দলের সদস্য অন্য দলের সদস্যের দিকে বল নিক্ষেপ করতে থাকে। এভাবে ১০ মিনিট ধরে বল নিক্ষেপ করে বিজয়ী নির্বাচিত হয়। সন্ধ্যার আগে আগে শিশুদের সঙ্গে আসা মায়েদের জন্য ছিল ‘চেয়ার সিটিং’ খেলা। সেখানে পায় ৩০ মিনিট পর বিজয়ী নির্বাচিত হয়। এরপর মঞ্চে বসে জাদুর আসর। শিশুদের আনন্দ বাড়িয়ে একের পর এক চমকপ্রদ জাদু দেখান শিল্পী খলিলুর রহমান। এ ছাড়া বিকেলজুড়ে মঞ্চে শিশুদের জন্য ইচ্ছেমতো গান গাওয়া ও কবিতা, ছড়া আবৃত্তির সুযোগ রাখা হয়।

এসব খেলায় অংশ নিয়ে ব্যাপক উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে শিশুরা। আমাতুল নামের এক শিশু জানায়, সে অনুষ্ঠানে খুবই আনন্দ পেয়েছে। আরেক শিশু সিফাত জানায়, ঈদের এই আয়োজনে সে অংশ নিয়ে পুরস্কার পেয়েছে। নুসরাত চেঁচিয়ে জানায়, সে মায়ের সঙ্গে অনুষ্ঠানে এসে দারুণ আনন্দ করেছে। ছড়া পাঠে পুরস্কার জেতার পর ছোঁয়ার বাধভাঙা আনন্দ আর দেখে কে!

অনুষ্ঠান শেষে শিশুদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপপরিচালক সেলিম রেজা। এমন আয়োজনের উদ্দেশ্য জানাতে পারুলী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের আহ্বায়ক সুমগ্ন সৌর বলেন, ‘আমরা চাই ঈদে শিশুরা দেশীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে জানুক।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় চালান পৌঁছে প্রতি মাসে পান ৬ লাখ টাকা

আট বছর ধরে গাড়ি চালানোর পেশায় আছেন মো. শাহীন। প্রথমে চালাতেন ট্রাক, এখন যাত্রীবাহী বাস। তবে এটা তার মূল কারবারের আড়াল মাত্র। বাস চালানোর আড়ালে তিনি কক্সবাজার থেকে ঢাকায় আনেন ইয়াবার বড় চালান। প্রতি চালানে ১০–২০ হাজার পিস ইয়াবা থাকে। এগুলো পৌঁছানোর বিনিময়ে তিনি পান মোটা অঙ্কের টাকা। প্রতি মাসে গড়ে ছয়টি চালান এনে তিনি অন্তত ছয় লাখ টাকা পান। ফলে লাভজনক এ কারবারে তিনি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছেন।

সম্প্রতি রাজধানীর পূর্ব রামপুরা এলাকা থেকে বাসচালক শাহীন ও সুপারভাইজার সঞ্জিত রাজবংশীকে গ্রেপ্তার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। ওই সময় বাসটিতে তল্লাশি চালিয়ে ১৫ হাজার ৬০০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। এই চালানটি ঢাকার গাবতলী এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল বলে জানা গেছে।

ডিএনসি ঢাকা মহানগর উত্তরের উপপরিচালক শামীম আহম্মেদ জানান, আন্তঃজেলা বাসের চালক–হেলপারদের একটি অংশ মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে বিভিন্ন রুটের পরিবহনকর্মীদের মাদকসংশ্লিষ্টতার তথ্য পেতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। এরপর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কক্সবাজার থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস পূর্ব রামপুরার মোল্লা টাওয়ারের সামনে থামানো হয়। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদে চালক ও সুপারভাইজার স্বীকার করেন, তাদের কাছে মাদকদ্রব্য আছে। এরপর তাদের দেখানো অনুযায়ী চালকের আসনের নিচ থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন ডিএনসি ধানমন্ডি সার্কেলের পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন।

ডিএনসি ঢাকা মহানগর উত্তরের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, শাহীনের ভাষ্য অনুযায়ী, দুই বছর ধরে তিনি বাসে মাদক পরিবহনের কাজ করেন। এর আগে ট্রাক চালানোর সময় অন্য চালকদের মাধ্যমে এ কারবারের বিষয়ে জানতে পারেন। পরে টেকনাফের মাদক কারবারিদের সঙ্গে তার যোগাযোগ ও সখ্য গড়ে ওঠে। তিনি প্রতি ১০ হাজার পিস ইয়াবা ঢাকায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য আনুমানিক এক লাখ টাকা করে পান। এবারের চালানের জন্য পেতেন দেড় লাখের কিছু বেশি। তবে পৌঁছানোর আগেই তিনি ও তার সহযোগী ধরা পড়েন।

অভিযান সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইয়াবার চালানের প্রেরক ও প্রাপকসহ আরও কয়েকজনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। তাদের গ্রেপ্তার করা গেলে পুরো চক্রটিকে শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ
  • শ্রীলঙ্কার মাটিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ
  • মিরাজ বীরত্বে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলো বাংলাদেশ
  • সেঞ্চুরির পর ৫ উইকেট, মিরাজ ধন্যবাদ দিলেন ৬ জনকে
  • পেশায় বাসচালক, আড়ালে করেন ইয়াবার কারবার
  • ঢাকায় চালান পৌঁছে প্রতি মাসে পান ৬ লাখ টাকা
  • রাজশাহীতে মাউশির দপ্তরে দুদকের অভিযান
  • ২১ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করলো বিএসইসি
  • নামী কফিশপের আইসক্রিমে তেলাপোকা
  • পুলিশের ওপর হামলা করে আটক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিল জনতা, গ্রেপ্তার ৩