চট্টগ্রাম মহানগরের চকবাজার থানাধীন বাকলিয়া এক্সেস রোড ব্রাশ ফায়ার করে দুই জনকে খুনের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) ভোরে নগরের বহদ্দারহাট ও ফটিকছড়ি উপজেলা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মো. বেলাল ও মানিক। বেলালকে বহদ্দারহাট এলাকা থেকে এবং মানিককে ফটিকছড়ি উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। 

দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাকিলা সোলতানা এই তথ্য জানিয়েছেন।

পুলিশ জানায়, গত ৩০ মার্চ গভীর রাতে বাকলিয়া এক্সেস রোডের মুখে একটি প্রাইভেটকারকে ধাওয়া করে দুইজনকে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। পরে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে হত্যাকারীদের কয়েকজনকে সনাক্ত করে পুলিশ। এদের মধ্যে সিসিটিভি ফুটেজে যে দুইজনকে সরাসরি প্রাইভেট কারের দিকে গুলি চালাতে দেখা গেছে, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

পুলিশ জানিয়েছে, মোট ১৩ জন সন্ত্রাসী ৬টি মোটরসাইকেল ব্যবহার করে এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করে। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল বোয়াজিদ বোস্তামি এলাকার তালিকাভুক্ত অপরাধী সরওয়ার হোসেন বাবলা, যিনি শেষ পর্যন্ত প্রাণে বেঁচে যান। এ হামলার পেছনে দুটি উদ্দেশ্য ছিল- বায়েজিদ বোস্তামি ও আশপাশের এলাকার অপরাধীদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লড়াই এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন প্রকাশ ছোট সাজ্জাদ গ্রেপ্তারের প্রতিশোধ নেওয়া। 

নগরের বায়েজিদ বোস্তামি এলাকার আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী খান প্রকাশ শিবির সাজ্জাদ বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন। তিনি এই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী। হামলাকারীরা তিন কিলোমিটার জুড়ে ধাওয়া করে এই ঘটনা ঘটায়।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত ১ এপ্রিল বাকলিয়া থানায় খুন হওয়া বখতেয়ার উদ্দিন মানিকের মা ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে কারাবন্দী শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- সাজ্জাদের স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্না (৩৭), মোহাম্মদ হাছান (৩৬), মোবারক হোসেন ইমন (২২), খোরশেদ (৪৫), রায়হান (৩৫) ও বোরহান (২৭)।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীর পরিকল্পনা অনুসারে আসামিরা গুলি করে মানিকসহ দুইজনকে হত্যা করেছে। খুনের নির্দেশদাতা হিসেবে ছোট সাজ্জাদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। গত ১৫ মার্চ ঢাকার বসুন্ধরা থেকে সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ঢাকা/রেজাউল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর

এছাড়াও পড়ুন:

মেয়েকে বিয়ে না দেওয়ায় বাবাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, আটক ২

বগুড়ায় মেয়েকে বিয়ে না দেওয়ায় বাবাকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক জিতু ইসলামের বিরুদ্ধে। শনিবার বিকেলে বগুড়া শহরের ফুলবাড়ী এলাকায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ জিতু ইসলামসহ দুইজনকে আটক করেছে। 

বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মুঞ্জু এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহতের নাম শাকিল আহমেদ (৩২)। তিনি শিববাটি শাহি মসজিদ এলাকার হানিফ প্রামাণিকের ছেলে। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শাকিল শিববাটি এলাকায় বাস করেন। তার এক কিশোরী কন্যাকে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক জিতু ইসলাম বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু জিতুর সঙ্গে শাকিল তার মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি ছিলেন না। আজ দুপুরের দিকে ১০-১৫ জন যুবক শাকিলকে বাড়ি থেকে ফুলবাড়ী এলাকায় করতোয়া নদীর ঘাটে নিয়ে যায়। সেখানে শাকিলকে বেদম মারধর করা হয়। পরে তাকে নদীর ঘাটে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা। স্থানীয় লোকজন শাকিলকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দিলে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তিনি মারা যান।

নিহত শাকিলের বড় বোন আশা বলেন, আমার ভাতিজি অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। তাকে বিয়ের জন্য জিতু কিছুদিন পর পর আমার বড় ভাইয়ের কাছে প্রস্তাব দিত। আমার ভাই ১৪ বছরের মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় জিতু বাহিনীর লোকজন তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
 
শাকিলের খালাতো বোন জেসি বলেন, আমার খালাতো ভাই শাকিলের সাথে জিতু বাহিনীর দুপুরে এক দফা হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে শাকিল বাড়িতে এসে বলে আমাকে তোরা বাঁচা। জিতুরা আমাকে মেরে ফেলবে। এর কিছুক্ষণ পরেই ১৫/২০টি মোটর সাইকেলযোগে লোকজন এসে শাকিলকে তুলে নিয়ে যায়। আমরা প্রায় ৩ ঘণ্টা খোঁজের এক পর্যায়ে জানতে পারি শাকিলের মরদেহ শহীদ জিয়াউর রহমান মেজিকেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
 
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মুঞ্জু বলেন, অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় শাকিল হোসেনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক জিতু ইসলামসহ দুইজনকে আমরা আটক করেছি। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কেউ জড়িত আছে কিনা খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেয়েকে বিয়ে না দেওয়ায় বাবাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, আটক ২