পাহাড়, সমুদ্র বা বনে বেড়াতে গেলে স্মারক হিসেবে রাখতে অনেকেই অনেক কিছু কুড়িয়ে নিয়ে আসেন। রোমানিয়ার এক নারী দেশটির দক্ষিণ–পূর্বের একটি জলপ্রপাত দেখতে গিয়ে সেখান থেকে কুড়িয়ে এনেছিলেন বেশ বড়সড় একখণ্ড পাথর।
এক দশকের বেশি সময় ধরে পাথরখণ্ডটি তাঁর বাড়িতে অবহেলায় পড়ে ছিল। বাতাসের ঝাপটায় বাড়ির দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়া আটকাতে সেটি ‘ডোরস্টপ’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। কে জানত এটি কোনো সাধারণ পাথর নয়, রীতিমতো অ্যাম্বার (রত্নপাথর)।
অ্যাম্বার হলো জীবাশ্ম গাছের রেজিন। এটি তৈরি হতে কোটি কোটি বছর লেগে যায়। দারুণ উষ্ণ রঙের কারণে এগুলো রত্নপাথর হিসেবে ব্যবহৃত হয়। রোমানিয়ার কোল্টি এলাকায় অ্যাম্বার পাওয়া যায়। ১৯২০ সাল থেকে সেখানে অ্যাম্বার উত্তোলন করা হয়।
রোমানিয়ার ওই নারী যে পাথরটি খুঁজে পেয়েছেন, সেটি উজ্জ্বল লালচে রঙের। স্প্যানিশ পত্রিকা এল পাইস–এর খবর অনুযায়ী, পরীক্ষা–নিরীক্ষার জন্য কর্তৃপক্ষ পোল্যান্ডের ইতিহাস জাদুঘরের বিশেষজ্ঞদের কাছে পাথরটি পাঠিয়েছিল।
সেটি পাঠানোর পরপরই পোলিশ–বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেন, সেটি কোনো সাধারণ পাথর নয়। সেটি একটি অ্যাম্বার পাথর। এটি তৈরি হতে ৩ কোটি ৮৫ লাখ বছর থেকে ৭ কোটি বছর লেগেছে।
রোমানিয়ার বুজু শহরের প্রাদেশিক জাদুঘরের পরিচালক দানিয়েল কোস্তাচে বলেন, বৈজ্ঞানিক ও জাদুঘর বিবেচনায় এই পাথর খুঁজে পাওয়া বিশাল বড় আবিষ্কার।
বুজুর এই জাদুঘরেই এখন বিশাল ওই অ্যাম্বার পাথর রাখা আছে। পাথরটির ওজন প্রায় সাড়ে তিন কিলোগ্রাম (৭ দশমিক ৭ পাউন্ড)। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এটি বিশ্বে এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া সবচেয়ে বড় দামি পাথরগুলোর একটি; আর অ্যাম্বারের মধ্যে সবচেয়ে বড়। অথচ পাথরটি বছরের পর বছর অবহেলায় পড়ে ছিল, রত্নচোরদের চোখ এড়িয়ে ডোরস্টপ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল।
যে নারী ওই পাথর কুড়িয়ে এনেছিলেন, তিনি ১৯৯১ সালে মারা যান। পরে তাঁর আত্মীয়রা পাথরটির মূল্য বুঝতে পারেন এবং রোমানিয়া সরকারের কাছে বিক্রি করে দেন। পাথরটির বাজারমূল্য প্রায় ১১ লাখ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩ কোটি ২৪ লাখ টাকার বেশি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ দ ঘর
এছাড়াও পড়ুন:
জেলায় জেলায় ঘুরে গ্রাফিতির ১০ হাজার ছবি তুলেছেন মাহমুদুজ্জামান
রংপুরের একটি স্কুলের দেয়ালে গ্রাফিতি দেখে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলেন মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান। গিলোটিনে একটি পেনসিল; পাশে লেখা ‘মাথা কাটিয়া দিলে লিখিতে পারি আবার’। আবার ঢাকার মিরপুরে বাঙলা কলেজের সামনে একটি গ্রাফিতি দেখে ভালো লাগল সেটির ভাষা। লেখাটি ক্যামেরায় বন্দী করলেন মাহমুদুজ্জামান, ‘মানুষ পানিতে ভিজলে কাপড় বদলায়, ঘামে ভিজলে ভাগ্য বদলায় আর রক্তে ভিজলে ইতিহাস বদলায়’।
গ্রাফিতি আর দেয়াললিখনের ছবি তুলতে তুলতে এমন কত যে শব্দ, বাক্য ও আঁকা দেখে আপ্লুত আর বুঁদ হয়ে ভেবেছেন এসবের গভীরতা। মাহমুদুজ্জামানের কথায়, ‘এত দিন আমরা জানতাম দেয়ালের কান আছে; কিন্তু জেন–জি প্রমাণ করেছে দেয়ালের মুখ আছে।’
মাহমুদুজ্জামান পড়াশোনা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে। ইতিহাস গবেষণাবিষয়ক যুক্তরাজ্যের সংগঠন রয়্যাল হিস্টোরিক্যাল সোসাইটির অ্যাসোসিয়েট ফেলো তিনি। বাংলাদেশের গৌরবময় ইতিহাস শিশু-কিশোর ও সাধারণের সামনে তুলে ধরতে দুই দশকের বেশি সময় ধরে কাজ করছেন এই সাংবাদিক ও গবেষক।
রংপুরের একটি স্কুলের দেয়ালে গ্রাফিতি