ঢাকায় ফিরতে দ্বিগুণ খরচা বাস-লঞ্চে জিম্মি যাত্রী
Published: 4th, April 2025 GMT
ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা গোলাম রব্বানি। স্ত্রীসহ ঈদ করতে রংপুরে গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। শনিবারই তাঁকে যোগ দিতে হবে কর্মস্থলে। ঢাকায় ফেরার জন্য গতকাল শুক্রবার বাসের টিকিট পাচ্ছিলেন না। এদিন সকাল থেকে রংপুর নগরীর কামারপাড়ার ঢাকা কোচস্ট্যান্ডের সবগুলো বাস কাউন্টার ঘুরেও পাননি টিকিট। বাধ্য হয়ে বিকেলে তিনি শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের দুটি টিকিট (রংপুর-ঢাকা) কালোবাজারে কিনেছেন ৩ হাজার ২০০ টাকায়। যদিও প্রতিটি টিকিটের দাম ৮৬০ টাকা।
গোলাম রব্বানি বলেন, কাউন্টার থেকে জানানো হচ্ছে, ৮ এপ্রিল পর্যন্ত অগ্রিম টিকিট শেষ। অথচ দ্বিগুণ দামে কালোবাজারে টিকিট মিলছে। ৮৬০ টাকার প্রতিটি টিকিট ১ হাজার ৬০০ টাকা করে কিনতে হয়েছে তাঁকে।
গোলাম রব্বানির মতো রংপুরে ঈদ করতে আসা নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ বাসের টিকিট না পেয়ে নির্ধারিত সময়ে কর্মস্থলে ফিরতে পারছেন না। রংপুর-ঢাকা রুটে টিকিটের দাম দ্বিগুণ করা হয়েছে। ঈদকে ঘিরে কোনো নিয়ম-নীতি না থাকায় যাত্রীরা বাস কাউন্টারগুলোর কর্মচারীদের কাছে একরকম জিম্মি। ঢাকায় ফিরতে সাধারণ বাসের অগ্রিম টিকিট বিআরটিএ কর্তৃক ৮৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে সেই টিকিট কালোবাজারে অন্তত ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বিলাসবহুল বাসের মালিকরাও ঈদ-পরবর্তী ১০ দিনের জন্য ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন। কাউন্টারগুলোতে ঝুলানো টিকিটের মূল্য তালিকায় দেখা যায়, পুরোনো এসি বাসের টিকিট ১ হাজার ৬০০ টাকা (আগে ছিল ১ হাজার ২০০ টাকা) এবং হুন্দাই বাসের টিকিট করা হয়েছে ২ হাজার ৪০০ টাকা (আগে ছিল ১ হাজার ৫০০ টাকা)। তবু ৮ এপ্রিল পর্যন্ত কোনো বাসের টিকিট কাউন্টারে মিলছে না। তালিকার দ্বিগুণ টাকায় কালোবাজারে টিকিট কিনতে হচ্ছে যাত্রীদের।
যাত্রীদের অভিযোগ, প্রতি বছর ঈদের পর রংপুর থেকে ঢাকামুখী অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়। কিন্তু এবার ঈদের অনেক আগেই বাস কাউন্টারগুলোতে জানানো হয়, অগ্রিম কোনো টিকিট নেই। তার ওপর টিকিটের দাম দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে। এ কারণে সময়মতো ঢাকায় ফিরে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগীরা জানায়, ঈদের পর রংপুর থেকে ঢাকাগামী এসআর ট্রাভেলস, শাহ আলী পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, আগমনী এক্সপ্রেস, নাবিল পরিবহন, শ্যামলী পরিবহন, শাহ ফতেহ আলী পরিবহনসহ কোনো গাড়ির কাউন্টারেই টিকিট মিলছে না।
ঢাকা কোচস্ট্যান্ডটি রংপুরের কামারপাড়ায় অবস্থিত। ঈদের ছুটি শেষে রোববার অফিস-আদালত খুলছে। সে কারণে শুক্রবার বিকেলে ওই স্ট্যান্ডে বিপুল মানুষের ভিড়। তারা শুক্র ও শনিবার ঢাকায় ফেরার উদ্দেশে এসেছেন, যাতে রোববার থেকে কাজে যোগ দিতে পারেন। যাত্রীরা জানান, ঈদের পর কর্মস্থলে যোগ দিতে দুর্ভোগ মেনেই ঢাকায় ফিরতে হবে। কিন্তু টিকিট পেতে ঘাম ছুটে যাচ্ছে। এর ওপর রয়েছে বাসের শিডিউল বিপর্যয়ও।
শ্যামলী এন্টারপ্রাইজের কাউন্টারে গাড়ির অপেক্ষায় বসে থাকা চাকরিজীবী মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘ঈদ করতে এসে বিপাকে পড়েছি। চাকরি বাঁচাতে অনেক কষ্টে দ্বিগুণ মূল্যে গাড়ির টিকিট সংগ্রহ করেছি। বিকেল ৪টায় ছাড়ার কথা ছিল। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাত ৮টায় গাড়ি ছাড়বে।’
এসআর পরিবহনের ব্যবস্থাপক মিঠু মিয়া জানান, ঈদের পর যাত্রীদের চাপ বেশি থাকে, অনেক ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ে ঢাকা থেকে বাস এসে পৌঁছায় না। যে কারণে রংপুর থেকে ছাড়তেও দেরি হচ্ছে।
শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের সুপারভাইজার আজগর আলী জানান, প্রতি ঈদে এমনিতে যাত্রী পরিবহনে হিমশিম খেতে হয়। তার ওপর অগ্রিম টিকিট অনেক আগে বিক্রি হয়ে যাওয়ায় হঠাৎ আসা যাত্রীরা কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়েছেন। ৮ এপ্রিল পর্যন্ত কোনো গাড়ির টিকিটই নেই। কালোবাজারে দ্বিগুণ দামে টিকিট বিক্রির প্রসঙ্গে সদুত্তর দেননি।
এসআর ট্রাভেলসের ম্যানেজার আব্দুস সোবহানের দাবি, ঈদের সময় গাড়ি ভাড়া কিছুটা বাড়ে, তা ঠিক। কিন্তু অগ্রিম টিকিট আগেভাগেই বিক্রি হয়ে গেলে তাদের কিছু করার থাকে না।
বিআরটিএ রংপুরের মোটরযান পরিদর্শক মাহবুবার রহমানের ভাষ্য, শুধু সাধারণ পরিবহন (নন-এসি) গাড়ির রংপুর-ঢাকা রুটের টিকিটের মূল্য ৮৬০ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। যাত্রীদের সঙ্গে হয়রানি ঠেকাতে তারা নিয়মিত মনিটরিং করছেন। বসানো হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। নির্ধারিত মূল্যের বেশি নেওয়ার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন। বিলাসবহুল গাড়ির টিকিটের দাম মালিক সমিতিই নির্ধারণ করে।
পাটুরিয়া-আরিচায় চরম দুর্ভোগ
এদিকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রী ঢাকায় ফিরছেন। তারা গাদাগাদি করে লঞ্চ-ফেরিতে পাড়ি দিচ্ছেন পদ্মা-যমুনা। সেখান থেকে পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাটে আসছেন। বিআইডব্লিউটিসি আরিচা অফিসের ডিজিএম মো.
শুক্রবার মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার এই দুই ঘাট এলাকায় মানুষের ভিড় দেখা যায়। অনেক যাত্রীকে ঢাকাগামী বাসে উঠতে না পেরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাটেই বসে থাকতে দেখা যায়। কুষ্টিয়া থেকে ঢাকা যাওয়ার জন্য শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছান লাবনী আক্তার, মালেকা আক্তার ও জুলহাস শেখ। বাসে অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করায় দুপুর ২টা পর্যন্ত সেখানেই বসেছিলেন। তারা এভাবে জিম্মি করে বাড়তি ভাড়া দাবি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
জানা গেছে, স্বাভাবিক সময়ে সেলফি, নীলাচল, হিমাচল, যাত্রীসেবা বাসে পাটুরিয়া থেকে নবীনগর পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হয় ১২০ টাকা। এখন ২০০ থেকে ২৫০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। পাটুরিয়া থেকে গাবতলীর ভাড়া ১৮০ টাকা হলেও এখন যাত্রীদের কাছে থেকে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। কেউ এর প্রতিবাদ করলে পরিবহন শ্রমিকদের হাতে লাঞ্ছনার শিকারও হচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পরিবহন শ্রমিকের অভিযোগ, জিপির (গেটপাস) নামে ঘাট সুপারভাইজার সুলতানের নেতৃত্বে বাসচালকদের এক ধরনের জিম্মি করে রাখা হয়েছে। তারা সেলফি পরিবাহনের প্রতিটি বাস থেকে ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা আদায় করছে। এ ছাড়া মালিক সমিতির নাম ব্যবহার করে জসিম খানের নেতৃত্বে নীলাচল বাস থেকে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
সেলফি বাসের ঘাট সুপারভাইজার সুলতান আহম্মেদের দাবি, ঢাকা থেকে খালি বাস নিয়ে আসতে হচ্ছে। এ কারণে বাসে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। বক্তব্য জানতে জসিম খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
শিবালয় থানার ওসি মো. কামাল হোসেনের ভাষ্য, ঢাকার কর্মস্থলগামী যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাননি, পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইউএনও মো. জাকির হোসেন বলেন, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে চলাচলকারী লঞ্চে অতিরিক্তি যাত্রী বহনের দায়ে শুক্রবার দুপুরে যমুনা, সুজন, খেয়া ও নিপু নামের চার লঞ্চের মালিককে ১৭ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম ন কগঞ জ শ ক রব র ঈদ র পর পর বহন ও আর চ র বহন বহন র
এছাড়াও পড়ুন:
মিরাজে দুর্দান্ত জয় বাংলাদেশের
এমন পারফরম্যান্সই তো চাওয়ার থাকে ভালো দলের কাছে। মেহেদী হাসান মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্য, সাদমান ইসলামের সেঞ্চুরি, তাইজুল ইসলামের ৯ উইকেট শিকারে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ইনিংস ও ১০৬ রানের বিশাল জয় এনে দেয় বাংলাদেশকে। প্রথম টেস্ট হারের পর যে সমালোচনা হয়েছিল, তার জবাবটা বোধ হয় দ্বিতীয় টেস্ট তিন দিনে জিতে দিয়ে দিলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। ‘বাউন্স ব্যাক’ করে সিরিজ ড্র ১-১-এ।
চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে বীরোচিত পারফরম্যান্স ছিল টাইগারদের। এটি সম্ভব হয়েছে পছন্দের উইকেটে খেলা হওয়ায়। স্পিন ভুবনে উইকেট উৎসব করেছেন তাইজুল, মিরাজ গাঁটছড়া বেঁধে। সিরিজ নির্ধারণী টেস্টে দুটি সেঞ্চুরি দারুণ অর্জন অধারাবাহিক ব্যাটিং লাইনআপের। এই টেস্টে ওপেনিং জুটি ভালো করেছে। লম্বা সময় পর টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়া এনামুল হক বিজয় ভালোই সঙ্গ দেন সাদমানকে। লোয়ার মিডলঅর্ডারে মিরাজের লড়াই ছিল দেখার মতো।
টেলএন্ডারদের নিয়ে রীতিমতো বাজিমাত করেছেন তিনি। শেষ ৩ উইকেটে তৃতীয় দিন ১৫৩ রান যোগ করেন। বাংলাদেশকে পৌঁছে দেন ৪৪৪ রানে। ২১৭ রানের লিড থাকায় ইনিংস ব্যবধানে জয়ের স্বপ্ন দেখায়। মিরাজের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে সে স্বপ্ন পূরণ হয়। সাকিব আল হাসান ও সোহাগ গাজীর পর তৃতীয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার তাঁর।
গত বছর দেশের মাটিতে টেস্টে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার পর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। ২০২৫ সালের শুরুটাও ভালো ছিল না। সিলেটে জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেছে। সিরিজ বাঁচাতে চট্টগ্রামে জিততেই হতো। লক্ষ্যে পৌঁছাতে কন্ডিশনেও পরিবর্তন আনা হয়। চট্টগ্রামের উইকেটে খেলা হয় দ্বিতীয় টেস্ট। যেখানে শাসন ছিল স্পিনারদের। পছন্দের উইকেট পাওয়ায় তিন স্পিনার নিয়ে খেলে বাংলাদেশ। তিনজনই দারুণ বোলিং করেন প্রথম থেকে।
দীর্ঘ বিরতির পর টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়া অফস্পিনার নাঈম হাসান চ্যালেঞ্জ নিয়ে বোলিং করে গেছেন। বেশি উইকেট না পেলেও এক প্রান্তে ব্যাটারদের চাপে ফেলেছেন। যার সুফল তাইজুল ও মিরাজ পেয়েছেন অন্য প্রান্তে। প্রথম দিন শেষ সেশনে ব্রেক থ্রু দেন তিনি। বাঁহাতি স্পিনার পরে পিক করে ৬ উইকেট শিকার করেন। জিম্বাবুয়ে ৯ উইকেটে ২২৭ রানে প্রথম দিন শেষ করে। পরের দিন এক বল খেলে ওই রানেই অলআউট হয়। বাংলাদেশ ব্যাটিং শুরু করে বড় লক্ষ্য নিয়ে। সাদমান ইসলাম ও এনামুল হক বিজয় ১১৮ রানের ওপেনিং জুটি করায় প্রতিপক্ষকে ছাড়িয়ে যাওয়া সহজ হয়। সাদমানের সেঞ্চুরি ও মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম কিছু রান করায় ৭ উইকেটে ২৯১ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করে বাংলাদেশ।
সেদিন সংবাদ সম্মেলনে সাদমান আশা প্রকাশ করেন, মিরাজ ও তাইজুল জুটি করবেন। অষ্টম উইকেটে ৬৪ রানের জুটি দু’জনের। বেশি ভালো করেছেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব। মিরাজের সঙ্গে ১৫৬ বলে ৯৬ রানের জুটি। অভিষেক টেস্টে সাকিবের ব্যাটিং দারুণ লেগেছে অধিনায়ক শান্তর কাছে। ৮০ বলে ৪১ রান করেন তিনি। সবচেয়ে বড় কথা, মাথায় বল লাগার পরও বিচলিত হননি তিনি। মিরাজ ছাড়া চট্টগ্রাম টেস্টের প্রাপ্তি হিসেবে ওপেনিং জুটির ভালো খেলা, সাদমানের সেঞ্চুরি, তাইজুলের ৫ উইকেট শিকার ও সাকিবের রান করাকে মনে করেন শান্ত।
শেষের তিন উইকেটে তৃতীয় দিন প্রায় দুই সেশন ব্যাট করে বাংলাদেশ। তাইজুল, সাকিব ও হাসানকে নিয়ে ১৫৩ রান যোগ করে। মিরাজ ১০৪ রান করে ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে উইকেট দেন। নার্ভাস নাইটির ঘরে প্রবেশ করে কিছুটা ঝুঁকির মুখে ছিলেন মিরাজ। ৯৮ রানে পৌঁছানোর পর সেঞ্চুরি ছুঁতে দুই রান নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ফিল্ডারের কাছে বল চলে যাওয়ায় এক রানে থামতে হয়। তখন স্ট্রাইকে হাসান থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল সবাই। ড্রেসিংরুমে খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফের সবাই দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। কখন হাসান আউট হয়ে যায়, সে ভয় কাজ করছিল হয়তো। কিন্তু হাসান ছিলেন দৃঢ়চেতা। মাসাকাদজাকে ডিফেন্স করে স্বস্তি দেন।
মিরাজ স্ট্রাইকে এসে মেদেভেরের প্রথম দুই বলে ঝুঁকি নেননি। তৃতীয় বলে এক রান নিয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরির স্বাদ নেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ ও দ্বিতীয় টেস্টের সেরা খেলোয়াড় মিরাজ। প্রথম ম্যাচের উভয় ইনিংসে ৫ উইকেট করে ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে অতীতের সব পারফরম্যান্স ছাড়িয়ে গেছেন। সেঞ্চুরির সঙ্গে ৫ উইকেটপ্রাপ্তি, দুই হাজার রানের মাইলফলক পেয়েছেন। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। ২১৭ রানে পিছিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় ১১১ রানে। ফ্লাডলাইটের আলো জ্বেলে নির্ধারিত সময়ের বেশি খেলান আম্পায়াররা। প্রায় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খেলা হয়। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটাররা তাতে আপত্তি করেননি। তাইজুল ৩, নাঈম ১ ও মিরাজ ৫ উইকেট নিলে ম্যাচ শেষ হয়।
সিলেটে প্রথম টেস্ট হারের পর চট্টগ্রামে প্রভাব বিস্তার করে খেলে ম্যাচ জেতার পরও খুশি নন অধিনায়ক শান্ত, ‘আমি টেস্ট সিরিজ ড্র করে খুশি না। কারণ, প্রথম টেস্টে আমরা একেবারেই ভালো খেলিনি। এই টেস্টে একপেশে খেলে জিতলেও সিরিজে আরও ভালো খেলা উচিত ছিল। সিরিজটি জিততে হতো।’ টাইগার দলপতি জানান, এই পারফরম্যান্স শ্রীলঙ্কা সফরে কাজে দেবে। দেশের মাটিতে স্পোর্টিং উইকেট বানিয়ে বিদেশে খেলার পরিবেশ তৈরি করছিল বিসিবি। ২০২৩ সালে নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হচ্ছে। কিউইদের বিপক্ষে সিলেটে ঐতিহাসিক জয় পেলেও মিরপুর থেকে হারতে শুরু করে। দেশের মাটিতে টানা ছয় হারের পর জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ।