‘চাকে মধু নেই। যা হয় দুই-এট্টা পাচ্ছি, তাতেও মধু কম। শেষ পর্যন্ত এভাবে গিলি এবার চালান তোলা মুসিবত হয়ে দাঁড়াবে।’ জহুর আলীর কণ্ঠে চরম হতাশা ঝরে পড়ে। ৯ সদস্যের মৌয়াল দলের নেতা সাতক্ষীরার শ্যামনগরের ডুমুরিয়া গ্রামের এই বাসিন্দা। তিনিসহ অন্য মৌয়ালের সামনে চলতি মৌসুমে দুটি সংকট। প্রথমটি বনদস্যু এবং দ্বিতীয়টি মাছ-কাঁকড়া শিকারের নাম করে বনে যাওয়া ব্যক্তিদের আগেই চাক কেটে ফেলা।
সুন্দরবনে মধু সংগ্রহের জন্য গত ১ এপ্রিল থেকে অনুমতি দেওয়া শুরু করেছে বন বিভাগ। কিন্তু এ মৌসুমে মৌয়ালদের মধ্যে আগ্রহ কমেছে। তাই গতকাল শনিবার পর্যন্ত শুরুতে সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের খুলনা ও সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে অনুমতিপত্র দেওয়া হয়েছে মাত্র ৫৮টি। অথচ গত বছর এই দুই রেঞ্জ থেকে ৫২০টি অনুমতিপত্র নেন মৌয়ালরা। তাদের ভাষ্য, সুন্দরবনে নতুন করে দস্যুবৃত্তি শুরু হওয়ায় এমন পরিস্থিতি। কয়েকটি দস্যুদল বনজীবীদের জিম্মি করে টাকা আদায় করছে। ওই টাকা দিতে গিয়ে সর্বস্বান্ত
হচ্ছেন মৌয়ালরা। তাই মধু সংগ্রহের আগ্রহ হারিয়েছেন তারা।
জহুর আলী বলছিলেন, ‘কম-বেশি তিরিশ বছর ধরে সুন্দরবনে মধু কাটতিছি, এ রকম অবস্থা আগে কখনও দেখিনি। মহাজনের চালান তুলতি না পারলি এলাকা ছেড়ে পালানো ছাড়া পথ থাকবে না।’ তাঁর ৯ সদস্যের দল একটি পাসের বিপরীতে দুই দফায় সুন্দরবন থেকে মধু সংগ্রহ করবে। সেই অনুযায়ী প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ করে চালান সাজানো হয়েছে। ইতোমধ্যে বনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের নোটাবেকী টহল ফাঁড়ির আওতাধীন ইলশেমারী, খেজুরদানা ও আগুনজ্বালা এলাকায় ছাটা (মাছি তাড়িয়ে মৌচাক পরীক্ষা করা) দিয়েছেন তারা। কিন্তু চার দিনে মাত্র ৫০ কেজির বেশি মধু পেয়েছেন।
শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের দৃষ্টিনন্দন এলাকার হাকিম গাজী সহযোগীদের নিয়ে বনে যান গত ২ এপ্রিল। গতকাল শনিবার দুপুর পর্যন্ত পুষ্পকাটি এলাকার জলঘাটা, আশাশুনি ও হেতালবুনিয়া অংশ ঘুরে ৪০ কেজির মতো মধু পেয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, আগে থেকেই চাক কেটে রাখা হয়েছে। যে কারণে প্রত্যাশামতো মধু মিলছে না।
হাকিমকে মৌয়ালের মাথাপিছু সাড়ে ৮ হাজার টাকা হারে মোট ৬৮ হাজার টাকা দিতে হয়েছে জলদস্যুদের। নৌকা মেরামতসহ সাঁজালি থেকে শুরু করে খোরাকি ও পাস মিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় আড়াই লাখ টাকা। কাঙ্ক্ষিত মধু না মেলায় এ দলের সবাই হতাশ।
এ দু’জনের মতোই হতাশার কথা জানান গাবুরা, নীলডুমুর, দাতিনাখালী, মুন্সিগঞ্জ, টেংরাখালী ও কালিঞ্চিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে মধু কাটতে যাওয়া মৌয়ালরা। তাদের ভাষ্য, সুন্দরবনে যাওয়ার আগেই দয়াল বাহিনীর জন্য মৌয়ালপ্রতি পাঁচ হাজার টাকা গুনতে হয়েছে। এ ছাড়া দুলাভাই বাহিনীকে দিতে হচ্ছে জনপ্রতি সাড়ে তিন হাজার টাকা। আবার বনে ঢুকে আগের মতো চাকের দেখাও মিলছে না। কিছু চাক পাওয়া গেলেও কিছুদিন আগেই কেটে
রাখায় পর্যাপ্ত মধু থাকছে না। মহাজনের কাছ
থেকে নেওয়া দাদনের টাকা পরিশোধ কীভাবে করবেন, সংসার খরচই তুলবেন কীভাবে– তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
খুলনার কয়রা উপজেলার গুড়িয়াবাড়ী গ্রামের মৌয়াল সোহরাব হোসেন বলেন, ‘বাপ-দাদার পেশা হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করে আসতিছি। প্রত্যেক বছর মৌসুমের অপেক্ষায় থাকি। বনের সাপ, কুমির ও বাঘের ভয়ে কখনও পিছুপা হইনি। তবে এবার ডাকাতির ভয়ে পিছু হটতি হয়েছে। নতুন ডাকাত দলের চাহিদা অনেক।’ তাদের চাহিদামাফিক টাকা না দিলে অনেক নির্যাতনের তথ্য শোনে এবার আর বাদায় (বন) না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
একই উপজেলার মহেশ্বরীপুর গ্রামের মৌয়াল আব্দুল হাকিমের ভাষ্য, ‘বেশ কয়েক বছর বনে ডাকাতির চাপ ছিল না। নির্বিঘ্নে মোম-মধু কাইটে আনতি পারতাম। এবার শুনতিছি ডাকাতির অনেক চাপ। আবার বনে তেমন মৌচাকও নেই।’ তাই এবার তিনিও বনে যাননি।
পেশাদার মৌয়ালরা জানিয়েছেন, মৌসুমের শুরুতেই সুন্দরবনে পাওয়া যায় খলিশা ফুলের মধু। এর ২০-২৫ দিন পর মেলে গরান ফুলের মধু। শেষে আসে কেওড়া ও ছইলা ফুলের মধু। এ বছর বৃষ্টি না হওয়ায় ফুল ঝরে গেছে। মৌসুম শুরুর আগেই মাছ শিকারের পাস নিয়ে ছদ্মবেশে মৌচাকে হানা দিয়েছে কিছু দৃর্বৃত্ত। যে কারণে এবার প্রত্যাশামতো মধু পাওয়া নিয়েও শঙ্কিত তারা।
সম্প্রতি মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসা জেলে-বাওয়ালিদের দেওয়া তথ্যমতে, এখন সুন্দরবন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আসাবুর বাহিনী, শরীফ বাহিনী, আবদুল্লাহ বাহিনী, মঞ্জুর বাহিনী, দয়াল বাহিনী, মামা-ভাগনে বাহিনী নামের কয়েকটি বনদস্যু বাহিনী। গত ৫ আগস্টের পর জেল ভেঙে পালিয়ে আসা কয়েদি ও চিহ্নিত আসামিরাও বনে দস্যুতায় নেমেছে। তারা জেলেদের কাছ থেকে মাছ, টাকা, মোবাইল ফোনসহ সব কেড়ে নিচ্ছে। এমনকি বনে ঢুকলে বিপুল অঙ্কের চাঁদাও দাবি করছে, না দিলেই অপহরণের পর ব্যাপক নির্যাতন চালাচ্ছে বনজীবীদের ওপর।
এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে মৌয়ালদের মধ্যে বনে যেতে আগ্রহ কমেছে। বন বিভাগের তথ্যমতে, মঙ্গলবার মৌসুম শুরুর প্রথম দিন খুলনা রেঞ্জের নলিয়ান ফরেস্ট স্টেশন থেকে ৩টি, বানিয়াখালী স্টেশন থেকে ৯টি, কাশিয়াবাদ স্টেশন থেকে ১৮টি, কোবাদক স্টেশন থেকে ৭টি ও সাতক্ষীরা রেঞ্জের স্টেশনগুলো থেকে ২১টি অনুমতিপত্র দেওয়া হয়। শতাধিক মৌয়াল অনুমতিপত্র নিয়ে ঝুঁকি জেনেও
মধু সংগ্রহে গেছেন বনে। যদিও গতবার মৌসুমের প্রথম দিনেই খুলনা রেঞ্জে ১৬০টি ও সাতক্ষীরা রেঞ্জের চারটি স্টেশন থেকে ৩৬৪টি অনুমতিপত্র দেওয়া হয়েছিল।
সুন্দরবন সুরক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দীন এ জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদাসীনতা ও অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, এসব কারণেই সুন্দরবনের পেশা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে মানুষ। ফলে রাজস্ব আয় কমছে। বিপরীতে চোরাকারবারিদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। সুন্দরবনের সার্বিক নিরাপত্তা না বাড়ানো হলে পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলেও সতর্ক করেন তিনি।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মশিউর রহমানের দাবি, মৌসুমের আগেই বন থেকে মধু সংগ্রহ বন্ধে তাদের একাধিক দল তৎপর ছিল। স্বল্প জনবল নিয়ে শুধু বন বিভাগের পক্ষে জলদস্যুদের মোকাবিলা সম্ভব নয়। চলতি মৌসুমে তাদের মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৫০০ কুইন্টাল। এর পরও এই লক্ষ্য অর্জন কঠিন হবে না।
এবার মৌয়ালের সংখ্যা কমে যাওয়ার বিষয় নিশ্চিত করে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) এ জেড এম হাছানুর রহমান বলেন, বনদস্যু দমনে তাদের পাশাপাশি কোস্টগার্ড ও পুলিশ সতর্ক রয়েছে। কয়েকটি অভিযানে বনদস্যু গ্রেপ্তার করাও হয়েছে। মৌয়ালদের সুরক্ষায় বন বিভাগ এবার বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ন দরবন স ন দরবন বন ব ভ গ বনদস য
এছাড়াও পড়ুন:
এক দশকে ১ লাখ হেক্টর বনভূমি কমেছে
দেশে এক দশকে বনভূমি হ্রাস পেয়েছে ১ লাখ ১ হাজার হেক্টর, যা ঢাকা শহরের আয়তনের প্রায় সাড়ে তিন গুণ। গত এক দশকে দেশ থেকে হারিয়ে গেছে ৬৪ প্রজাতির গাছ।
সারা দেশে বনাঞ্চলে যে পরিমাণ গাছ আছে, গ্রামাঞ্চলে গাছের সংখ্যা তার চেয়ে বেশি। তবে গ্রামে গাছের ঘনত্ব কম। আর বন উজাড় বেশি হয়েছে পার্বত্যাঞ্চলে। সেখানে একমুখী প্রজাতির ফসল চাষের প্রসার ও সড়ক সম্প্রসারণের কারণে বন উজাড় হচ্ছে।
বনের সার্বিক চিত্র জানতে ২০২৪ সালে বন অধিদপ্তরের করা জাতীয় বন জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। জরিপটি প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।
পার্বত্য অঞ্চলে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। সেটাকে মাথায় রেখে আমরা একটা পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছি। বান্দরবানের লামা অঞ্চল দিয়ে ফরেস্ট রিস্টোরেশনের (বন পুনরুদ্ধার) কাজ শুরু করব আমরা।সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, উপদেষ্টা, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়২০১৫ সালে জাতীয় বন জরিপে বন আচ্ছাদনের পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ৭৬ শতাংশ, সেটি এখন কিছুটা হ্রাস পেয়ে ১২ দশমিক ১১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক বন জরিপে দেশে বনভূমি আছে ১৭ লাখ ৮৪ হাজার হেক্টর। আগের বন জরিপে যেটির পরিমাণ ১৮ লাখ ৮৪ হাজার হেক্টর।
জানতে চাইলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘পার্বত্য অঞ্চলে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। সেটাকে মাথায় রেখে আমরা একটা পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছি। বান্দরবানের লামা অঞ্চল দিয়ে ফরেস্ট রিস্টোরেশনের (বন পুনরুদ্ধার) কাজ শুরু করব আমরা।’
‘জীববৈচিত্র্য রক্ষা, অবক্ষয়িত বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা’র আহ্বান জানিয়ে আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব প্রকৃতি সংরক্ষণ দিবস। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৯৭২ সালে এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক দিবসের মর্যাদা দেয়।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা ফাওয়ের তথ্য অনুযায়ী, বৈশ্বিকভাবে বন উজাড়ীকরণের হার ১ দশমিক ১ শতাংশ হলেও বাংলাদেশে সেটি ২ দশমিক ৬ শতাংশ।
বন অধিদপ্তরের ২০টি দল মাঠপর্যায়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ শুরু করে ২০২৪ সালের মার্চে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে তাদের তথ্য সংগ্রহ শেষ হয়। উপকূলীয় বন, শালবন, সুন্দরবন, পার্বত্যাঞ্চল ও গ্রামীণ এলাকায় মোট ১ হাজার ৮৫৮টি নমুনা প্লটের ভিত্তিতে এ জরিপের ফলাফল নির্ধারণ করা হয়েছে।
জরিপে দেশে প্রতি হেক্টরে গাছের ঘনত্ব পাওয়া গেছে ১১৭টি। সবচেয়ে বেশি গাছের ঘনত্ব আছে সুন্দরবনে। এখানে গাছের ঘনত্ব প্রতি হেক্টরে ৭০২টি। বনাঞ্চলের চেয়ে গ্রামীণ এলাকায় গাছের ঘনত্ব কম হলেও মোট গাছের পরিমাণ বেশি। গ্রামীণ এলাকায় মোট গাছের সংখ্যা প্রায় ৯০ কোটি।
২০১৫ সালের বন জরিপে গাছের সংখ্যা ছিল ১৬৯ কোটি। সাম্প্রতিক জরিপে সেটা কিছুটা কমে হয়েছে ১৫৭ কোটি। গত এক দশকে হ্রাস পাওয়া গাছের সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি। জরিপে সারা দেশে ৩২৬টি গাছের প্রজাতি শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৪২টি প্রজাতি পাওয়া গেছে পার্বত্যাঞ্চলে। সুন্দরবনে পাওয়া গেছে ২২ প্রজাতির গাছ। এর আগে বন জরিপে (২০১৫) ৩৯০ প্রজাতির গাছ শনাক্ত করেছিল বন অধিদপ্তর। গত এক দশকে হারিয়ে গেছে ৬৪ প্রজাতির বৃক্ষ।
কেন কমছে পার্বত্যাঞ্চলের বন
২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ডারউইন ইউনিভার্সিটি পরিচালিত এক গবেষণায় পার্বত্যাঞ্চল বাংলাদেশের মোট বন আচ্ছাদনের ৪০ শতাংশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে দ্রুত প্রসার ঘটছে অর্থকরি ফলের চাষ (হর্টিকালচার) ও একমুখী প্রজাতির বনায়ন (মনোকালচার), যেমন রাবারবাগান।
জানতে চাইলে জাতীয় বন জরিপের সঙ্গে যুক্ত থাকা বন অধিদপ্তরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (সদ্য অবসরপ্রাপ্ত) জহির ইকবাল প্রথম আলোকে বলেন, পার্বত্যাঞ্চলে বৈধ ও অবৈধভাবে বন উজাড় হয়ে আসছে। এখানে একদিকে বন উজাড় হচ্ছে, অন্যদিকে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কারণে বনায়ন করা যায় না। যার কারণে এখানে বনভূমি হ্রাস পাওয়ার পরিমাণ বেশি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের অধ্যাপক কামাল হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, পার্বত্যাঞ্চলে বন বিভাগ কিছু করতে পারে না। পাহাড়িরা কিছু গামার আর সেগুনগাছের বাগান করেন। পুরো পার্বত্য অঞ্চলে সড়ক সম্প্রসারণ হয়েছে গত কয়েক দশকে। যেমন সীমান্ত রোড হয়েছে।
কামাল হোসাইন বলেন, এ ছাড়া এখানে বিনোদনকেন্দ্র ও রিসোর্টের সংখ্যা বাড়ছে। এটা একটা দিক। অন্যদিকে অনেক প্রভাবশালী এখন ড্রাগন, কাজু ও আমের চাষ করছেন প্রাকৃতিক বন ধ্বংস করে। এ অঞ্চলের বনের ওপর বহুমুখী চাপের কারণে এখানে বনাঞ্চল হ্রাস পাওয়ার হার অন্যান্য অঞ্চল থেকে বেশি।
কামাল হোসাইন আক্ষেপ করে বলেন, ‘কেউ বনকে ভালোবাসে না। মানুষের লোভের শিকার হয়েছে এখানকার প্রাকৃতিক বন। এটাই আমাদের সর্বনাশ করেছে।’