কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সাবেক রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান মজুমদারের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছাড়াই বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, গত ৩ মার্চ মো. মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়মের অভিযোগ এনে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসঙ্গে গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড.

মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনকে রেজিস্ট্রারের নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে, মো. মজিবুর রহমান মজুমদারের দাবি নির্দিষ্ট কোনো লিখিত অভিযোগ না থাকলেও তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগও দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে।

সাবেক রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, “গত ৩ মার্চ ১১টা পর্যন্ত আমি উপাচার্য স্যারের সঙ্গে নথিপত্র নিয়ে কাজ করেছি। তখনও আমি উপাচার্য স্যারের মধ্যে তেমন কিছু দেখতে পাইনি। দুপুর পৌনে ২টার দিকে হঠাৎ উপাচার্য স্যার, ‍উপ-উপাচার্য ম্যাম ও কোষাধ্যক্ষ স্যার এবং গনিত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আনোয়ার (যাকে অতিরিক্ত রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে) কক্ষে প্রবেশ করেন। এরপর উপাচার্য স্যার নিজ হাতে আমাকে চিঠি হস্তান্তর করে বলেন এখন থেকে অধ্যাপক আনোয়ার রেজিস্ট্রার হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করবেন। আপনি কিছুদিন ছুটিতে থাকবেন। আমি ওই মুহূর্তে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেছিলাম।”

আরো পড়ুন:

কুবির ইনকিলাব মঞ্চের নেতৃত্বে হান্নান-ওসমান

২১ দিনের ছুটি চলাকলে কুবি প্রক্টরের ৫ নির্দেশনা

তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট কোনো অভিযোগ কিংবা কোনো অভিযোগকারী নেই। কোনো কারণ দর্শনোও হয়নি বা আমাকে কিছুই বুঝতে দেওয়া হয়নি। এ জাতীয় অফিস আদেশ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং পূর্ণ পরিকল্পিত। ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে শুধু রাজনৈতিক কারণে আমি ২০০৯ সাল থেকে ওএসডি পরবর্তীতে প্রায় ১২-১৩ বছর নানা বঞ্ছনার শিকার হয়েছি।”

তিনি আরো বলেন, “বর্তমান প্রশাসন ৩-৪ মাস হলো এসেছে। আমি জুলাই-২৪ বিল্পবের পর ১১ আগস্ট যোগদান করেছি। এ স্বল্প সময়ের মধ্যে কি হলো, তা আমি বুঝতে পারছি না। আমাকে কেনো বাধ্যতামূলক ছুটিতে থাকতে হবে, আর কেনো আমি ক্যাম্পাসেও প্রবেশ করতে পারব না, তা জানি না। একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার প্রতি ন্যূনতম সুবিচার করা হয়নি।”

একইদিন (৩ মার্চ) ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে মো. মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তদন্ত করতে পাঁচ সদস্যের একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠিত করা হয়।

কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক এম এম শরীফুল করিমকে। এছাড়া সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান।

কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. সোহরাব উদ্দিন, একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর মোহতাসিম বিল্লাহ এবং অর্থ ও হিসাব দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া।

ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির প্রধান অধ্যাপক এমএম শরীফুল করিম বলেন, “আমাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, উনার বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ রয়েছে সেগুলোর ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং করতে বলা হয়েছে। আমরা একটি মিটিং করে প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছি। তবে, এখনো আমরা ফিরতি চিঠি পাইনি। কোষাধ্যক্ষ অফিস থেকে চিঠি পেলে আমরা কাজ শুরু করবো।”

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. হায়দার আলী বলেন, “উনার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করা হয়েছে মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে। আপাতত ওএসডি করা হয়েছে। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি যদি প্রমাণ না পায়, তাহলে তিনি আবারো জয়েন করবেন।”

ঢাকা/রুবেল/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ য ক ট ফ ইন ড উপ চ র য স য র

এছাড়াও পড়ুন:

অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন

প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।

শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।

আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।

দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।

২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।

প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।

আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।

সূত্র: এনবিসি নিউজ

আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ