পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে অলিভ রিডলি প্রজাতির বিপন্ন মৃত সামুদ্রিক কচ্ছপ ভেসে এসেছে। এক মণ ওজনের কচ্ছপটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৩ ফুট। এর গায়ের রঙ লালচে বাদামি ও চামড়া হলুদ রঙের।

রবিবার (৬ এপ্রিল) বিকেলে লেম্বুর বন সংলগ্ন সৈকতে স্থানীয়রা কচ্ছপটি দেখতে পায়। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিষয়টি বন বিভাগে অবহিত করেন।

স্থানীয়রা জানান, কচ্ছপটির গলায় কালো দাগ রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি জেলেদের জালে আটকে গভীর সাগরে মারা যায়। পরে জোয়ারের সময় তীরে ভেসে আসে। 

আরো পড়ুন:

শরীয়তপুরে ৩১টি বন্যপ্রাণী উদ্ধার 

‘কোরবানির ঈদে পশু আমদানির পরিকল্পনা নেই’

আমরা কুয়াকাটাবাসী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি হাফিজুর রহমান আকাশ জানান, এটি পূর্ণবয়স্ক অলিভ রিডলি প্রজাতির কচ্ছপ। বিষয়টি বনবিভাগে অবহিত করা হয়েছে। বনবিভাগের সমন্বয়ে এটি মাটি চাপা দেওয়া হবে।

কলাপাড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, এটি সামুদ্রিক সরীসৃপ। চেলোনিডি পরিবারের অন্তর্গত। চামড়া হলুদ থেকে বাদামি রঙের হয় এবং খোসা সাধারণত লালচে বাদামি হয়। এ কচ্ছপ প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত লিঙ্গের বাহ্যিক পার্থক্য দেখা যায় না। সবচেয়ে স্পষ্ট পার্থক্য হলো, প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের পুরু লেজ এবং মহিলাদের তুলনায় ছোট প্লাস্ট্রন (নিম্ন খোলস)।

মহিপুর বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম জানান, কচ্ছপটি মাটিচাপা দেওয়ার জন্য বিট কর্মকর্তা ও বনকর্মীদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
 

ঢাকা/ইমরান/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী

কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।

কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।

একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’

কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।

এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ