সরকারের পরিকল্পনায় স্বস্তির কথা জানালেন ব্যবসায়ীরা
Published: 6th, April 2025 GMT
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন নতুন শুল্ক আরোপের পর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
রবিবার (৬ এপ্রিল) অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে এই স্বস্তির কথা তুলে ধরেন বৈঠকে উপস্থিত ব্যবসায়ী নেতারা।
বৈঠক শেষে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা আসলে যতোটা চিন্তিত ছিলাম, আজকের আলোচনা থেকে সেটার একটা পথনির্দেশনা পেয়েছি। যেটা আমার কাছে মনে হয়, ব্যবসায়ীদের কাছে সুখবর। আমি ব্যক্তিগতভাবে এটা বিশ্বাস করি।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমাদের সুযোগ সামনে রয়েছে। সব সময় বাংলাদেশ থেকে মনে করা হয়, তৈরি পোশাক একমাত্র পণ্য যেটা আমাদের রপ্তানির ঝুড়িতে রয়েছে। বিষয়টি কিন্তু তা না, অনেক পণ্য রয়েছে যেটা সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানেন না। আমি একটু আগে টুইটে দেখলাম ইতোমধ্যে ভারতে থেকে ৩০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রের মেডিসিন রপ্তানি হতো। সেগুলোর ট্যারিফ তারা দিয়ে দিয়েছে।’’
‘‘চারদিক থেকে সুযোগ আসছে। এখন আমাদের যে নীতি নির্ধারক রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার যে সুসম্পর্ক রয়েছে, আমি মনে করি এসব ব্যক্তির মাধ্যমে আমরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারব।’’ বলেন তপন চৌধুরী।
লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, ‘‘আজকে আমাদের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের স্বস্তির জায়গা তৈরি হয়েছে। সরকারের সুনির্দিষ্ট যে একটা পরিকল্পনা আছে, সেটা টাইম বাউন্ড পরিকল্পনা। আমরা বারবার বলেছি, এটার একটা সেলফ লাইফ আছে যদি আমরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে না করি তাহলে পিছিয়ে পড়ব। আজকে মনে করছি সেটা আমরা করতে পারব।’’
তিনি বলেন, ‘‘দেশের স্বার্থ আগে, সেখানে বাংলাদেশের স্বার্থটা মাথায় রেখে সুযোগগুলো খুঁজে বের করতে হবে। আমরা আজকে খুবই উৎসাহিত হয়েছি। আর একটা বিষয়ে আমরা সবাই একমত যে, বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা যেন না হারায়। একইসঙ্গে কোনো রকমের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের সাথে যেন আমাদের প্রতিযোগিতা না কমে। সেই আশ্বাস আমরা পেয়েছি সরকারের কাছ থেকে।’’
‘‘বেসরকারি খাত থেকে আমরা আত্মবিশ্বাসী যে লেবেল প্লেইং ফিল্ড থাকলে আমরা পেরেছি এবং পারব। সেই ফিল্ডটা তৈরি করার দায়িত্ব হচ্ছে সরকারের। বাকিটা আমাদের সেখানে একটা সম্মিলিত প্রচেষ্টা লাগবে। আমরা এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা আরো কী জিনিস কিনতে পারি, যা আমাদের দেশের স্বার্থে আমাদের কাজে লাগবে, একই সময়ে এই সুযোগটা কীভাবে কাজে লাগাব আর ভবিষ্যতে আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধি করে সেখানকার মানুষের মানোন্নয়ন করতে পারি ভাবতে হবে।’’
‘‘আমাদের উইন-উইন প্রোপজ দেওয়ার জন্যই আমরা আজকে এখানে সম্মেলিত হয়েছি। আমি মনে করছি আগামী ২৪ ঘণ্টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভালো একটা খবর আমাদের বায়ারদের দিতে পারব।’’
‘‘আমাদের রপ্তানি খাতে তৈরি পোশাকের বাইরে আরো কিছু নতুন পণ্য রয়েছে। সেটার সবচেয়ে বড় বাজার হতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেই বাজারটাকে ইগনোর করা যায় না, করতে চাইও না এবং আমরা করবোও না।’’ বলেন সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর।
নারী উদ্যোক্তা ও বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি ( বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি এবং মোহাম্মাদি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হক বলেন, ‘‘আমি এক লাইনেই শেষ করছি- প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প টুইট করবেন, এরকম একটি চিঠি এখান থেকে যাবে সেটার প্রতিক্ষায় থাকলাম।’’
ঢাকা/হাসনাত//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র র আম দ র ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি