জনতা ব্যাংকের ঋণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংক খাতের আলোচিত গ্রাহক এননটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠান মেসার্স সুপ্রভ মিলাঞ্জ স্পিনিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জালাল উদ্দিনসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জনতা ব্যাংক থেকে ঋণের নামে ১১৫ কোটি ৯১ লাখ ১০ হাজার ৫৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, ব্যবসার পুঁজি না থাকা সত্ত্বেও কোনো যাচাই–বাছাই না করে জনতা ব্যাংক মেসার্স সুপ্রভ মিলাঞ্জ স্পিনিং লিমিটেডকে ঋণ দিয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটির মালিক ও ব্যাংক কর্মকর্তারা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জনতা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে টাকা আত্মসাত করেছেন। মামলার বাকি চার আসামি হলেন মেসার্স সুপ্রভ মিলাঞ্জ স্পিনিং লিমিটেডের পরিচালক আবদুল্লাহ সিদ্দিক, জনতা ব্যাংকের সাবেক এসইও মোহাম্মদ শামীম হোসেন, সাবেক সহকারী মহাব্যবস্থাপক আবদুর রশীদ ও সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো.

মাহফুজুর রহমান।

আরও পড়ুনজমি বেচে এননটেক্সকে ঋণ শোধের সুযোগ দিল জনতা ব্যাংক০৪ জুন ২০২৪

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জনতা ব্যাংকের সবচেয়ে বড় গ্রাহক এননটেক্স গ্রুপ। জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রুপটির নেওয়া প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা ঋণের পুরোটাই এখন খেলাপি। এ জন্য ব্যাংকটি পড়েছে বিপদে। এ অবস্থায় এই ঋণের দায়–দায়িত্ব নির্ধারণে গ্রুপটির ঋণের ওপর পরিপূর্ণ নিরীক্ষা (ফাংশনাল অডিট) করার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে আড়াই বছরেও নিরীক্ষা শেষ করতে পারেনি জনতা ব্যাংক।

এখন গ্রুপটির ২২টি প্রতিষ্ঠানের কোনোটির মালিকানা ও শেয়ারের যেন পরিবর্তন না হয়, সেই নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি ২২টি প্রতিষ্ঠানের ঋণে এননটেক্স গ্রুপের কর্ণধার ইউনুছ বাদলের ব্যক্তিগত গ্যারান্টি নেওয়াসহ জনতা ব্যাংককে বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হলে সরকার নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে

জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, তাহলে সরকার তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।

আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ‘জরুরি সভায়’ এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান খান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।

তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে। এসব সুপারিশ জমা দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আজ জরুরি বৈঠকে বসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ