ফিরে এলো সাড়ে ১২ হাজার বছর আগের শ্বেত-নেকড়ে
Published: 8th, April 2025 GMT
বিখ্যাত ধারাবাহিক ‘গেম অব থ্রোন’-এ সাদা রঙের নেকড়ে দেখে অনেকেই বিস্মিত হয়েছিলেন। কারণ, এ নেকড়ের অস্তিত্ব আর পৃথিবীতে নেই। তারা বিলুপ্ত হয়েছে প্রায় ১২ হাজার ৫০০ বছর আগে। এর পর কেবল ফসিলই ছিল তাদের এককালের অস্তিত্বের সাক্ষী। কিন্তু বিজ্ঞানীদের বিস্ময়কর চেষ্টায় তারা আবার অবিশ্বাস্যভাবে পৃথিবীতে ফিরে এসেছে; দৌড়াচ্ছে, হাঁটছে, খেলছে।
কথা হচ্ছিল বিলুপ্ত প্রাক-ঐতিহাসিক যুগের শ্বেত-নেকড়েদের নিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসভিত্তিক বায়োটেক কোম্পানি কলোসাল বায়োসায়েন্সের দাবি, বিশ্বে প্রথমবারের মতো বিলুপ্ত কোনো প্রাণীকে তারা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। বিজ্ঞানীদের দাবি, শ্বেত-নেকড়ের প্রাচীন ডিএনএ ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা তিনটি শাবকের জন্ম দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তারা ধূসর নেকড়ের জিন পরিবর্তন করতে ক্লোনিং ও জিন-সংস্কার প্রযুক্তিরও ব্যবহার করেন। এ ধূসর নেকড়ে হারিয়ে যাওয়া শ্বেত-নেকড়ের সবচেয়ে কাছের প্রজাতী। ফলে একটি বিশেষ হাইব্রিড প্রজাতির নেকড়ের জন্ম হয়েছে, যা সেই বিলুপ্ত শ্বেত-নেকড়ের মতো।
কলোসাল বায়োসায়েন্স জানায়, শ্বেত-নেকড়ে বা আইনোসিওন ডায়ারাসের আদি নিবাস ছিল উত্তর আমেরিকায়। এরা আকৃতিতে ধূসর-নেকড়ে থেকে বড়; মাথা খানিকটা মোটা ও চোয়াল শক্তিশালী।
স্থানীয় সময় সোমবার কোম্পানিটি আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেয়। তারা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে তারা বিলুপ্ত প্রাণীদের পুনরায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছেন। ২০২১ সাল থেকে তারা বিলুপ্ত তাসমেনিয়ান টাইগার, দোদো, মেমোথের মতো প্রাণীদের ফেরাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
শ্বেত-নেকড়ের ফেরা প্রসঙ্গে কলোসালের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও বেন লাম বলেন, এ সাফল্য একটা বড় মাইলফলক। এতে প্রমাণ হয় যে, তাদের প্রযুক্তি কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ১৩ হাজার বছর পুরানো (শ্বেত-নেকড়ের) দাঁত থেতে ডিএনএ সংগ্রহ করি। আমাদের সংগ্রহে এগুলোর ৭২ হাজার বছর আগের খুলি ছিল। এসব থেকে এ শ্বেত-নেকড়ে শাবকদের জন্ম।’ সূত্র: সিএনএন
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
তিনি হিমালয়ে উঠেছেন সাইকেল নিয়ে
বরফের ওপর সাইকেল নিয়ে সন্তর্পণে এগোচ্ছেন। একটু হড়কে গেলেই অবধারিত মৃত্যু, গিরিখাত বেয়ে একেবারে নিচে। কখনো সাইকেল চালিয়ে, কখনো কাঁধে নিয়ে হাঁটতে হচ্ছিল। এভারেস্ট অঞ্চলের কংমা লা পাস অতিক্রম করার সময় একটু ভয় ভয় লাগছিল। কারণ, এখানটায় এসে মৃত্যুর অনেক ঘটনা আছে। ট্রেইলটা বেশ কঠিন। ১০ কেজি ওজনের সাইকেল কাঁধে, আর ছয়–সাত কেজির ব্যাগ নিয়ে ওপরে উঠতে হচ্ছিল।
‘ভয়ের সঙ্গে আবার সুন্দর মুহূর্তও আছে। পাসগুলো থেকে নামার সময় ভালো লাগত। অপূর্ব সুন্দর সব দৃশ্য,’ বলছিলেন আরিফুর রহমান উজ্জল (৪১)। কুমিল্লার মানুষ, উজ্জল নামেই পরিচিত। গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে সাইকেল নিয়ে চষে বেড়িয়েছেন এভারেস্ট অঞ্চলসহ হিমালয়ের নানা ট্রেক। এসব ট্রেকে সাধারণত পর্বতারোহীরা পায়ে হেঁটে যান। উজ্জল গেছেন দ্বিচক্রযানে চেপে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় সর্বশেষ কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি প্রায় দুই মাসের অভিযান শেষ করে কাঠমান্ডুতে এসেছেন।
চ্যালেঞ্জিং এই অভিযানে ছিল কাদামাখা পাথুরে পথ, অতি উচ্চতা, অক্সিজেন স্বল্পতা, ভূমিধস, বরফে ঢাকা পথ, গ্লেসিয়ার ও একদম খাড়া টানা একেকবার ৩–৪ কিলোমিটার রাস্তা। অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে রাতে না ঘুমিয়ে পরদিন ট্রেক করতে হয়েছে। বরফ ও রৌদের তাপ, জ্বর, হাতে ফ্রস্টবাইট, পায়ে মাসাল ক্র্যাম্প, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে, বাতাসের সঙ্গে যুদ্ধ করে তাঁকে একেকটা পাস অতিক্রম করতে হয়েছে। অনেক পর্বতারোহীর কাছে এটি স্রেফ পাগলামি। এই অভিযানে উজ্জলকে কখনো সাইকেল চালাতে হয়েছে, কখনো কাঁধে বইতে হয়েছে, কখনোবা ঠেলে উপরে তুলতে হয়েছে।
মানাসলু সার্কিট ট্রেইলপর্বতারোহণ এমনিতেই কষ্টসাধ্য কাজ। নিজের শরীরটা ওপরে টেনে তোলাই যেখানে বিরাট চ্যালেঞ্জ, সেখানে উজ্জল সাইকেল নিয়ে এক অভিযানেই ঘুরেছেন এভারেস্টসহ হিমালয়ের তিনটি ট্রেইলে। তিনি ঘুরেছেন নেপালের মানাসলু ও অন্নপূর্ণা সার্কিট ট্রেইল। নেপালের পশ্চিমের এই দুটি ট্রেইলে ঘোরা শেষ করে পাড়ি দিয়েছেন ৭০০ কিলোমিটার পূর্বে এভারেস্টের তিন পাসে। পাস তিনটি হচ্ছে কংমা লা পাস, চো লা পাস এবং রেঞ্জো লা পাস।
৭ সেপ্টেম্বর থেকে অভিযান শুরু করেন এই সাইক্লিস্ট। তার আগে ঢাকা থেকে বিমানে করে গেছেন কাঠমান্ডু। শুরুতেই মানাসলু সার্কিট ট্রেইল। এটা গিরিপথ, রাস্তা। মানাসলু পর্বতকে ঘিরে যে রাস্তা সেটাকে সার্কিট বলে। এই মানাসলুর সর্বোচ্চ বিন্দু, যার উচ্চতা ১৭ হাজার ৩৯০ ফুট। সেখানে নিজের প্রিয় দ্বিচক্রযানটির চাকার ছাপ রেখে এসেছেন। ১৭৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সার্কিট ট্রেইলটি শেষ করতে তাঁর ১১ দিন লেগেছে।
রেঞ্জো লা পাস