কেন এমন হয়

সিগমুন্ড ফ্রয়েড, এরিক বার্নসহ বেশ কিছু মনোবিজ্ঞানীর মতে, আমাদের প্রত্যেকের ব্যক্তিত্বে একাধিক সত্তা বা ইগো স্টেট থাকে। যেমন আমাদের ভেতরে একাধারে রয়েছে অভিভাবক, পরিণত ও শিশুসত্তা। যখন আমরা দৈনন্দিন রুটিনে বা পেশাগত কাজে থাকি, তখন আমাদের ভেতরে পরিণত বা কর্মিসত্তাটি বেশি সক্রিয় থাকে। আমরা যুক্তি দিয়ে বিচার–বিশ্লেষণ করে চলি, কর্মঠ থাকি। কিন্তু যেই না ছুটি শুরু হয়, নিজের অজান্তেই আমাদের ভেতরের শিশুসত্তাটি ‘ইয়াহু’ বলে দৈনন্দিন রুটিনকেও ছুটি দিয়ে দেয়। যে ছুটির প্রতীক্ষায় সে দিন গুনছিল। ছুটি শেষ হলে আমাদের অন্তরের সেই শিশুটি নালিশ জানাতে থাকে। সে আরও ছুটি চায়, আরও স্বাধীনতা, আরও আনন্দ চায়। ঠিক যেমনটা শৈশবে হতো। কোনো খেলা থেকে আমাদের টেনে তোলা অভিভাবকদের জন্য ছিল বিশাল এক কর্মযজ্ঞ। কিন্তু বড় হওয়ার পর আমাদের টেনে তোলার জন্য অন্য কেউ থাকে না। অগত্যা নিজেই নিজের অভিভাবক বনে গিয়ে নিজেকে ধাক্কাধাক্কি করে কাজে পাঠাতে হয়।

আরও পড়ুনছুটির পর আলস্য কাটিয়ে উঠবেন কীভাবে২৪ জুন ২০২৪কী করব

প্রকাশ করুন: আপনি কেমন অনুভব করছেন, তা নিজের ভেতরে আবদ্ধ না রেখে কাছের মানুষজনের কাছে মন খুলে বলুন। লিখতে পছন্দ করলে লিখেও নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারেন। নিজেকে প্রকাশ করলে আপনার শিশুসত্তা স্বস্তি পাবে।

কৃতজ্ঞ থাকুন: ছুটির ফ্রেমবন্দী স্মৃতিগুলো দেখুন এবং নিরাপদে সুন্দর একটা সময় পার করে এসেছেন বলে তৃপ্ত ও কৃতজ্ঞ থাকুন। স্বজনদের কথা মনে পড়লে যোগাযোগ করে খোঁজখবর নিন। উৎসবের ছুটি শেষ মানেই কর্মজীবন থেকে ছুটি শেষ, তা কিন্তু নয়। সাপ্তাহিক ছুটি আনন্দে কাটানোর জন্য পরিকল্পনা করুন। কাজে উদ্দীপনা আনতে নিজেকে মনে করিয়ে দিন, আপনার কাজ কেন গুরুত্বপূর্ণ।

দেহঘড়ি মেরামত করুন: ছুটিতে ঘুম ও খাওয়াদাওয়ার রুটিন বদলে যায়। রাতে কম ঘুমিয়ে সকালে কাজে গেলে সহজেই ক্লান্তি আসে ও মেজাজ বিগড়ে যায়। ছুটি শেষে তাই নিয়ম ও সময় মেনে সুষম খাবার খাওয়া, রাতে প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং সামান্য হলেও শরীরচর্চা করে দেহঘড়ি সচল রাখা প্রয়োজন।

আমাদের অনুভূতি ও আচরণ অনেকাংশেই আমাদের চিন্তাধারার ওপর নির্ভর করে। কাজে ফেরা মানেই কঠিন ও ক্লান্তির জীবন, এমন চিন্তাধারা আমাদের মনোবল ভেঙে দিতে পারে। বরং কর্মদীপ্ত থাকা, কাজ ও বিশ্রামের ভারসাম্যের মধ্যেই প্রকৃত প্রশান্তি, এমন দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের পথচলাকে সহজ করে তোলে।

আরও পড়ুনঅফিসে যে ৬টি বিষয়ে সচেতন হলে আপনার মন খারাপ হবে না১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

শিশু শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত, থানায় অভিযোগ করায় নানাকে কুপিয়ে হত্যা

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় কয়েক বখাটের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন তার স্বজন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ছাত্রীর নানা আজগর আলীকে (৬০) কুপিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়ভাবে বখাটে হিসেবে পরিচিত আল-আমিন নামে এক যুবক ও তার সহযোগীরা। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের রায়দক্ষিণ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আজগর আলী রায়দক্ষিণ গ্রামে একটি চায়ের দোকান চালাতেন। অভিযুক্ত আল-আমিন একই গ্রামের মৃত কালু প্রামাণিকের ছেলে।

পুলিশ, নিহতের পরিবার এবং স্থানীয় সূত্র জানায়, যে শিশুটিকে উত্ত্যক্ত করত বখাটেরা, তার মা পাঁচ বছর আগে মারা যান। মেয়েটি নানা আজগর আলীর বাড়িতে থেকে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে পড়ত। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে শিশুটিকে প্রায় উত্ত্যক্ত এবং অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করত আল-আমিন। এ নিয়ে আজগর আলীসহ মেয়েটির স্বজন বেশ কয়েকবার প্রতিবাদ করলেও কোনো কাজ হয়নি। গত সোমবার মেয়েটির নানা আজগর আলী সিংগাইর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। মঙ্গলবার অভিযোগটি তদন্ত করার পর তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।    

এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয় আল-আমিন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আল-আমিন চার থেকে পাঁচটি মোটরসাইকেলে করে সহযোগীদের নিয়ে আজগর আলীর চায়ের দোকানে যায়। তারা বৃদ্ধ আজগর আলীকে দোকান থেকে বের করে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও লাটিসোঠা দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। হামলাকারীরা চলে গেলে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আজগর আলীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে রাতেই তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা আজগর আলীকে মৃত ঘোষণা করেন।

আজগর আলীর শ্যালক নজরুল ইসলাম জানান, মাদক সেবন, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িত বখাটে আল-আমিন। 

সিংগাইর থানার ওসি তৌফিক আজম বলেন, নিহতের বড় ছেলে আইয়ুব খান বুধবার আল-আমিনকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। ঘটনার পর থেকে আল-আমিন ও তার সহযোগীরা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ