ইউক্রেনে হামলা জোরদারের পর যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক আজ
Published: 10th, July 2025 GMT
ইউক্রেনে আবারও রাশিয়ার হামলা জোরদার করায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের ফাঁকে রুবিও-লাভরভ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। খরব: এএফপি
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এটাই রুবিওর প্রথম এশিয়া সফর। এমন এক সময়ে তিনি এ সফর করছেন, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এশিয়াসহ বিশ্বজুড়েই বাণিজ্যযুদ্ধ আরও জোরদার করছেন এবং ইতিমধ্যে ২২টি দেশের ওপর পাল্টা অতিরিক্ত শুল্কারোপ করেছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিক রুবিও কুয়ালালামপুরে আসিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের ফাঁকে লাভরভের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
এদিকে বুধবার রাতে রাশিয়ার হামলায় কিয়েভে অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। নগরের সামরিক প্রশাসন আজ সকালে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
ট্রাম্পের অভিযোগ, পুতিন ইউক্রেন নিয়ে আজেবাজে কথা বলছেন। তিনি ইউক্রেনকে আত্মরক্ষার জন্য আরও অস্ত্র দেওয়ার কথাও বলেছেন।
রুবিও ও লাভরভ সর্বশেষ মুখোমুখি সাক্ষাৎ করেছিলেন গত ফেব্রুয়ারিতে সৌদি আরবে। এই দুই শীর্ষ কূটনীতিক ফোনে একাধিকবার কথা বলেছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউক র ন য ক তর ষ ট র পরর ষ ট রমন ত র য ক তর ষ ট র পরর ষ ট র ইউক র ন ল ভরভ
এছাড়াও পড়ুন:
একাই মাসে শতাধিক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দেন তৈয়বুর
সুনামগঞ্জে জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে যাঁদের নাম প্রথমেই মনে আসে, তাঁদের একজন তৈয়বুর রহমান (২৬)। তিনি নিজে নিয়মিত রক্ত দেন, রক্ত সংগ্রহ করে দেন এবং মানুষকে স্বেচ্ছায় রক্তদানে উৎসাহিত করেন। রক্তের টানে মানুষের পাশে দাঁড়ানোতেই তাঁর আনন্দ।
একটি বেসরকারি ব্যাংকে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রক্তদানের এই মানবিক কাজকে নিজের করে নিয়েছেন তিনি। কয়েক বছর আগে একাই মানুষের জন্য রক্ত জোগাড় করতেন। এখন তিনি ব্লাড লিংক সুনামগঞ্জ নামের স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। ফলে কাজের পরিধি বেড়েছে কয়েক গুণ। মাসে একাই শতাধিক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দেন তিনি। সংগঠনে যুক্ত হওয়ার পর থেকে আড়াই হাজারের বেশি রোগীর জন্য রক্ত জোগাড় করে দিয়েছেন। তাঁর কাছে আছে প্রায় এক হাজার রক্তদাতার ঠিকানা, রক্তের গ্রুপ ও যোগাযোগের তালিকা। সুনামগঞ্জে স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী ও সংগঠকেরাও তাঁকে সহযোগিতা করেন।
তৈয়বুর রহমানের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষ্মণশ্রী ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে। তিনি ইসলামী ব্যাংক সুনামগঞ্জ শাখায় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। রক্তের প্রয়োজনে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ, পরিবহন বা দৌড়ঝাঁপ—সবকিছুর ব্যয়ই মেটান নিজের স্বল্প বেতন থেকে।
রক্তদানের শুরুর স্মৃতি বলতে গিয়ে তৈয়বুর রহমান জানান, ২০২০ সালে তিনি তখন নারায়ণগঞ্জে কর্মরত ছিলেন। এক সহকর্মীর অনুরোধে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর জন্য রক্ত দিতে ছুটে যান চাষাড়া এলাকায়। কিন্তু ওজন কম থাকায় রক্ত দিতে পারেননি। পরে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত এক শিশুর জন্য আবার হাসপাতালে যান এবং এবার রক্ত দিতে সক্ষম হন। প্রথমে কিছুটা ভয় ভয় ছিল তাঁর। পরে এটা কেটে যায়।
সুনামগঞ্জে বদলি হয়ে ফিরে এসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে মানুষের জন্য রক্ত সংগ্রহ করতে থাকেন বলে জানান তৈয়বুর রহমান। নিজের এলাকায় রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার আয়োজন ও সচেতনতা ক্যাম্পেইনও করেছেন। এখন পর্যন্ত তিনি ১৭ বার রক্ত দিয়েছেন। অধিকাংশই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের জন্য। ঈদের দিনও রক্ত দিয়েছেন তিনি। জেলা সদর হাসপাতাল ও শহরের সব বেসরকারি ক্লিনিকেই তাঁর নম্বর আছে। কোনো রোগীর জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে সেখান থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় ভূমিকা হলো রোগীর জন্য উপযুক্ত রক্তদাতা খুঁজে বের করা।
তৈয়বুর রহমান বলেন, রক্তদানের পর কিছু পরিবার এখনো তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখে, খবর নেয়। আবার কেউ কেউ রক্ত সংগ্রহে একটু দেরি হলে মনঃক্ষুণ্ন হন। কেউ রক্ত পেয়ে ধন্যবাদ দেওয়ারও প্রয়োজন মনে করেন না। তবু মন খারাপ করেন না তিনি। তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে তাহিরপুর উপজেলার এক প্রসূতি বোনকে রক্ত দিয়েছিলাম। এখনো ওই পরিবার যোগাযোগ রাখে। সময়-অসময় খোঁজ নেয়। এটা ভালো লাগে, এটা অন্য রকম রক্তের সম্পর্ক। এই কাজ করে আনন্দ পাই, তৃপ্তি পাই। যত দিন পারি, এই কাজ করে যাব।’
এখন পর্যন্ত ১৭ বার রক্ত দিয়েছেন তৈয়বুর রহমান