“জন্ম হোক সুরক্ষিত, ভবিষ্যৎ হোক আলোকিত” প্রতিপাদ্য নিয়ে পালিত হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস ২০২৫।

বুধবার (৯ এপ্রিল) দিবসটি উপলক্ষে অ্যাডভোকেসি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞার (প্রগতির জন্য জ্ঞান) উদ্যোগে “জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত” শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।

গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এই ওয়েবিনারে জানানো হয়, বাংলাদেশে বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের অন্যতম কারণ উচ্চ রক্তচাপ। মোট মৃত্যুর ৭১ শতাংশের জন্য উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ দায়ী হলেও এটি মোকাবেলায় অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ মোট স্বাস্থ্য বাজেটের মাত্র ৪.

২ শতাংশ। বিদ্যমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এ খাতে বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো অপরিহার্য।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২৪ সালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, অসংক্রামক রোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের অন্যতম একটি লক্ষ্য হচ্ছে ২০২৫ সালের মধ্যে ৮০ ভাগ স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে (সরকারি এবং বেসরকারি উভয়ই) অসংক্রামক রোগের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ওষুধের সরবরাহ নিশ্চিত করা।

প্রতিবেদনটিতে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার অংশ হিসেবে অসংক্রামক রোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ অঙ্গীকারবদ্ধ হলেও এ খাতে অর্থ বরাদ্দ এবং বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যবহারে সাফল্য দেখাতে পারেনি।

ওয়েবিনারে আরও জানানো হয়, উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ মোকাবেলায় ইতোমধ্যে তৃণমূল পর্যায়ে বিনামূল্যে এ রোগের ওষুধ প্রদানের কাজ শুরু হলেও উদ্বেগজনক এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশের সকল কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ নিশ্চিত করা জরুরি। এজন্য টেকসই অর্থায়ন প্রয়োজন।

ওয়েবিনারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার (সিবিএইচসি) এর লাইন ডিরেক্টর ডা. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, “সরকার উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সের পাশাপাশি কমিউনিটি ক্লিনিকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে। এই মুহূর্তে ওষুধের কিছুটা ঘাটতি আছে তবে আমরা দ্রুতই তা কাটিয়ে উঠতে পারব।”

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, “উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ যেন না বাড়ে সে জন্য খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনাচরণে পরিবর্তন আনার পাশাপাশি বাজেট বৃদ্ধির বিষয়ে বিশেষভাবে জোর দিতে হবে।”

ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্টস স্কুল অব পাবলিক হেলথ এর অধ্যাপক ডা. মলয় কান্তি মৃধা বলেন, “গবেষণায় দেখা গেছে বাংলাদেশে অঞ্চল, বয়স, শিক্ষা এবং লিঙ্গভেদে উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপের পার্থক্য আছে। গবেষণালব্ধ ফলাফলের ভিত্তিতে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে প্রতিকার এবং প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।”

জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, “বাজেট বৃদ্ধির মাধ্যমে উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্স ও কমিউনিটি ক্লিনিকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।”

ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন প্রজ্ঞা’র কোঅর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভা। 

দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এই ওয়েবিনারে অংশ নেন।

ঢাকা/হাসান/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর দ দ

এছাড়াও পড়ুন:

হাসপাতালে ডায়রিয়ার প্রকোপ শয্যা ও স্যালাইন সংকট

আক্কেলপুরে ডায়রিয়ার প্রকোপ ক্রমেই বাড়ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর ভিড় বেড়েছে। শয্যাসংকটে রোগীদের মেঝে ও বারান্দায় থাকতে হচ্ছে। এদিকে হাসপাতালে খাওয়ার স্যালাইনের সংকট দেখা দিয়েছে। বাইরে থেকে বেশি দামে রোগীদের স্যালাইন কিনতে হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে শয্যা রয়েছে ৫০টি। গতকাল সোমবার পর্যন্ত এখানে ভর্তি ছিলেন ৭৫ জন রোগী। এর মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ২৯ জন। শয্যা না পেয়ে তাদের অনেককেই বারান্দায়, মেঝেতে ঠাঁই নিতে হয়েছে। এ সময় কথা হয় রামশালা গ্রামের আসমা খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাতে ডায়রিয়া ও বমি শুরু হলে হাসপাতালে ভর্তি হই। রোগী বেশি থাকায় শয্যা পাইনি। বারান্দার মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছি। হাসপাতাল থেকে একটি স্যালাইন পেলেও ৪টি স্যালাইন বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে। একই অভিযোগ করেন তেমারিয়া গ্রামের নুর বানু। তিনি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ১০ মাস বয়সী মেয়েকে রোববার হাসপাতালে ভর্তি  করেছেন। এদিকে রোগীর চাপ বাড়লেও এ হাসপাতালে রয়েছে চিকিৎসক সংকট। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ ২৬টি পদের বিপরীতে মাত্র ৩ জন চিকিৎসক সেবা দিচ্ছেন। রয়েছে তীব্র স্যালাইন সংকট। রোগীদের বাইরে থেকে স্যালাইন কিনতে হচ্ছে। 
হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কলেরা স্যালাইনের জন্য সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি মাসে চাহিদা দেওয়া হয়েছিল চার হাজার পিস। এর মধ্যে এক হাজার মি.লি. স্যালাইন ২ হাজার পিস ও ৫০০ মি.লি. স্যালাইন ২ হাজার পিস। পাওয়া গেছে মাত্র ৬০০ পিস। ইতোমধ্যে ৩০০ পিস রোগীদের মধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে। 
আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আসিফ আদনান জানান, হঠাৎ করে আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। অন্য সময়ের তুলনায় ৩ গুণ বেশি ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে আসছে। রোগীর চাপ বাড়লেও চিকিৎসক সংকট রয়েছে। স্যালাইনের সরবরাহও কম। রোগীদের বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। নানা সীমাবদ্ধতায় সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম অবস্থা আমাদের। তিনি ডায়রিয়া হলে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থেকে কিছু নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। 
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শফি মাহমুদ বলেন, চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে কয়েকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সরকারিভাবে নিয়োগ না হওয়ায় আমরাও প্রয়োজনীয় চিকিৎসক পাচ্ছি না। স্যালাইনের সরবরাহ বাড়াতে চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদানির সঙ্গে চুক্তি ক‌রে শুল্ক ফাঁকি
  • শিল্প খাতের উৎপাদন যেন ব্যাহত না হয়
  • কারাগারে গাঁজা সরবরাহ করতে গিয়ে নিজেই কারাগারে
  • ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা কী
  • ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ নেই, ৯০ কারখানায় ছুটি
  • মঙ্গলবার ৭ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব জায়গায়
  • পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে আরও ২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনছে ভারত
  • পর্তুগাল ও স্পেনে নজিরবিহীন বিদ্যুৎ বিপর্যয়, পর্যুদস্তু জনজীবন
  • হাসপাতালে ডায়রিয়ার প্রকোপ শয্যা ও স্যালাইন সংকট
  • ৯ মাসে ওয়ালটনের মুনাফা হয়েছে ৬৯৬.৪৪ কোটি টাকা