৬২২ সালে মহানবী (সা.) মক্কা ছেড়ে মদিনায় যান। ইসলামে একে বলা হয় ‘হিজরত’। হিজরি সনের সূচনা হয় মহানবীর (সা.) হিজরতের সময়কে কেন্দ্র করেই। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.)-এর আমলে আনুষ্ঠানিকভাবে হিজরি সন গণনা শুরু হয়।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, বসরার গভর্নর আবু মুসা আশআরি (রা.) ওমরের কাছে এক পত্রে লেখেন, ‘আমিরুল মুমিনিন, আমাদের কাছে বহু পত্র আসে, যাতে তারিখ লেখা থাকে শাবান। কিন্তু তা চলমান বছরের, নাকি অতীতের—আমরা বুঝতে পারি না। তারপর ওমর (রা.
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘ওমর (রা.) হিজরি সন প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি তখন একটি পরামর্শ সভার আহ্বান করেন। সভায় নবীজি (সা.)-এর জন্ম, মৃত্যু, নবুওয়াত ও হিজরত—বিশেষত এই চারটি সময় থেকে বর্ষ গণনার প্রস্তাব আসে।
আরও পড়ুনকথার শেষে কেন ‘ইনশাআল্লাহ’ বলতে হয়০৭ এপ্রিল ২০২৫সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) বলছিলেন নবীজি (সা.)-এর ইন্তেকালের বছরের কথা, তালহা (রা.) বললেন নবুয়তের বছর থেকে এবং আলী (রা.) প্রস্তাব দেন হিজরতের বছর থেকে বর্ষ গণনা করা হোক। কিন্তু জন্ম ও নবুয়তের সন নিয়ে মতানৈক্য আছে। আর মৃত্যু শোকের স্মারক। শেষে সবাই আলী (রা.)-এর প্রস্তাবে ঐকমত্য পোষণ করেন, বর্ষ গণনা শুরুর ক্ষেত্রে হিজরতকে প্রাধান্য দেন। এভাবেই হিজরত থেকে হিজরি সন গণনা শুরু হয়। (আল-আইনি, উমদাতুল কারি: ১৭/৬৬)
বছরের প্রথম মাস মহররম হলো কীভাবে, সে সম্পর্কে একটি তথ্য আছে। নবীজি (সা.) হিজরত করেছিলেন রবিউল আউয়াল মাসে। ২৭ সফর থেকে শুরু করে ১২ রবিউল আউয়াল হিজরত সম্পন্ন হয়েছিল। বর্ষ গণনার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় হিজরতের ১৬ বছর পর ১৭ তম বছরের ১০ জমাদিউল আউয়াল মাসে। মাস হিসেবে রবিউল আউয়াল কিংবা জমাদিউল আউয়াল কোনোটি থেকেই বর্ষ গণনা শুরু করা হয়নি। কারণ সমকালীন আরবে মহররমই ছিল প্রথম মাস। পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং শৃঙ্খলা রক্ষার্থে সেই হিসাবটি অপরিবর্তিত রাখা হয়।’ (আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া ৪ / ৫১৭)
আরও পড়ুনআবিসিনিয়ার এক দাসীর গল্প০৭ এপ্রিল ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দেবীগঞ্জে ধানখেত থেকে তরুণীর মরদেহ উদ্ধার
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে ধানখেত থেকে সুলতানা আক্তার রত্না (২০) নামে এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের মাঝাপাড়া গ্রাম থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত রত্না ওই গ্রামের রবিউল ইসলামের মেয়ে ও দেবীগঞ্জ মহিলা কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, মরদেহের সঙ্গে একটি কাপড়ের ব্যাগ ছিল। যার ভেতরে রত্নার পরনের কাপড় ও দুইটি সেদ্ধ ডিম ছিল। এছাড়া, তিনি এক হাতে মোবাইল ফোনের কাভার ধরে ছিলেন। তবে, মোবাইল ফোনটি পাওয়া যায়নি।
আরো পড়ুন:
হবিগঞ্জে নিজ ঘরে মিলল গৃহবধূর গলাকাটা মরদেহ
পিয়াইন নদীতে ভেসে উঠল নিখোঁজ পর্যটকের লাশ
রত্নার বড় ভাই মামুন ইসলাম বলেন, ‘‘সকাল ৭টার দিকে প্রতিবেশী কাওসার তার জমিতে আগাছানাশক দিতে গিয়ে ধানখেতে এক মেয়েকে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তিনি ডাক-চিৎকার করলে গিয়ে দেখি, সেটি আমার বোন।’’
রত্নার বাবা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘‘‘গত রাত ১২টার দিকে বাইরে থেকে বাড়িতে ফেরার পর রত্না আমাকে ভাত বেড়ে দেয়। রাত দেড়টা পর্যন্ত সজাগ ছিলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, মেয়ের ঘরের দরজা খোলা। স্ত্রী জানায়, মেয়ে ঘরে নেই। এর কিছুক্ষণ পর খবর পাই, ধানখেতে এক মেয়ের মরদেহ পাওয়া গেছে। পরে দেখি, সেটা আমার মেয়ে।’’
দেবীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রবীর কুমার সরকার বলেন, ‘‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি হত্যাকাণ্ড। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শিগগিরই জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হবে।’’
ঢাকা/নাঈম/রাজীব