হুট করে মাত্র ৮ ঘণ্টার জন্য দেশে এসেছিলেন ঢালিউড তারকা শাবনূর। তিনি ফিরে যাওয়ার পর সে কথা জানাজানি হয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে জানা না গেলেও পরে বোঝা গেল, হুট করে কেন দেশে আসেন তিনি।

শাবনূর জানান, তার এবারের দেশে আসাটা অন্য সময়ের মতো ছিল না। অন্য সময় দেশে ফেরার খবরে আনন্দ থাকলেও এবার পুরোটা সময় কেটেছে অস্থিরতায়। অবস্থা এমন যে, যত দ্রুত ঢাকায় নামতে পারবেন, ততটাই মঙ্গল। অভিনেত্রী জানান, তার মা অসুস্থতায় ভুগছেন। আর এই কারণেই তাড়াহুড়ো করে মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য দেশে এসেছেন।

গত ২৮ মার্চ ঢাকায় নেমেছেন শাবনূর। ৮ ঘণ্টা পর ফিরেও গেছেন। যা মিডিয়ার কেউ সেভাবে টেরও পায়নি। গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্প্রতি আলাপকালে এসব তথ্য জানান শাবনূর।

অভিনেত্রীর মা, ভাই-বোন এবং তাদের পরিবারের সদস্যরাও অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করেন। কিন্তু গত ছয় মাস ধরে বাংলাদেশে থাকছেন শাবনূরের মা। এরইমধ্যে তিনি মায়ের অসুস্থতার খবর পান। তাই এই ঝটিকা সফরে তাকে ঢাকায় আসতে হয়।

মায়ের অসুস্থতা প্রসঙ্গে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘এক মাস ধরে আম্মা বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। প্রতিনিয়ত ফোনে কথাবার্তা হচ্ছিল। ঢাকার বড় বড় হাসপাতালের ৩-৪ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখিয়েছেন। কিন্তু কোনোভাবেই তারা আম্মার রোগ ধরতে পারছিলেন না। এদিকে শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে। একটা সময় বোঝা গেল, আম্মার নিউমোনিয়া হয়েছে। এর বাইরে আরও কয়েকটি সমস্যা ছিল। ২৮ মার্চ তো এমন অবস্থা হয়েছিল, আম্মা কথা বলার মতো শক্তি হারিয়ে ফেলেন। শ্বাসকষ্টে একদম কাবু হয়ে পড়েন। সেদিন আম্মার শারীরিক অবস্থাও জানতে পারছিলাম না। কারণ তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। আম্মার দেখাশোনার দায়িত্বে যিনি ছিলেন, তাকে শুধু বলেছি, আমি আসা পর্যন্ত আম্মার সঙ্গে থাকতে। আম্মাকে মানসিকভাবে শক্তি ও সাহস দিতে।’

মায়ের অসুস্থতা বাড়তে থাকায় সেদিনই বাংলাদেশে আসার সিদ্ধান্ত নেন শাবনূর। যোগ করে অভিনেত্রী বলেন, ‘এরপর টিকিট খোঁজা শুরু করি। সেদিন রাতেই অনেক কষ্টে টিকিট পেয়ে যাই। আমার বোন আর ভাইয়েরা বলছিল, এ অবস্থায় একা যেতে পারবা তো? তারা কেউ সঙ্গে আসবে নাকি? আমি বললাম, একাই যাব। কোনও সমস্যা হবে না। লাগেজ নিইনি, তাই কোনও কাপড়চোপড় নিইনি। বলা যায়, এককাপড়েই উড়াল দিই। পাসপোর্ট, টিকিট ও একটা ব্যাকপ্যাক সঙ্গী করেই আমি বাসা থেকে এয়ারপোর্টের উদ্দেশে রওনা হই। প্লেনের পুরোটা সময়, ট্রানজিটের সময়—কীভাবে যে কেটেছে, তা বলে বোঝাতে পারব না। আম্মার জন্য শুধু দোয়া করছিলাম।’

এবার এসে শাবনূর তার অসুস্থ মাকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে গেছেন। তা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঢাকায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম, চিকিৎসকেরা একের পর এক শুধু আম্মার টেস্ট করাতে বলছেন। একপর্যায়ে হাসপাতালে ভর্তি করাতেও বলেন। কিন্তু এ অবস্থায় আমি কোনোভাবে হাসপাতালে ভর্তি করাতে ভরসা পাচ্ছিলাম না।’

সবশেষে শাবনূর বলেন, ‘এরপরই অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে এখানে একটি হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম। চিকিৎসকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় মা এখন পুরোপুরি সুস্থ।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ বন র ন শ বন র র জন য আম ম র অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় ‘এয়ার পিউরিফায়ার’ বায়ুদূষণ কমাতে পারবে কি

রাজধানীর বায়ুদূষণ রোধে নগরীর অন্তত ৫০টি জায়গায় ডিএনসিসির এয়ার পিউরিফায়ার (বায়ু পরিশোধন যন্ত্র) স্থাপনের পরিকল্পনা স্বল্পমেয়াদি প্রচেষ্টা হিসেবে প্রশংসনীয় হলেও দীর্ঘ মেয়াদে টেকসই সমাধান নয় বলে বলছেন বায়ুগবেষকেরা। বায়ুদূষণ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে মূল কারণগুলোর বিরুদ্ধে সমন্বিত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরামর্শ তাঁদের।

গত সোমবার গুলশানে ঢাকা উত্তর সিটির নগর ভবনে এক পলিসি ডায়ালগে এসব যন্ত্র বসানোর পরিকল্পনার কথা জানান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। প্রতিটি যন্ত্র ১০০ গাছের সমপরিমাণ বায়ু পরিশোধন ও শীতলীকরণে সক্ষম বলে দাবি করা হয়েছে।

ডিএনসিসি প্রশাসক আরও জানান, এ উদ্যোগের জন্য পৃষ্ঠপোষক বা স্পনসর পাওয়া গেছে এবং চলতি মাসেই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তি সইয়ের পরিকল্পনা রয়েছে। এতে সিটি করপোরেশনের কোনো অর্থ খরচ হবে না।

এদিকে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন মোহাম্মদ এজাজ। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আমরা একটি পাইলট প্রকল্প করে দেখতে চাই, ফলাফল কী আসে। এ নিয়ে পরবর্তী সময়ে আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসব। যদি ইতিবাচক না হয়, আমরা ভিন্ন উদ্ভাবনের দিকে যাব।’

বায়ুদূষণ নিয়ে কাজ করা গবেষকেরা বলছেন, ঢাকার মতো ঘনবসতিপূর্ণ শহরে এ ধরনের পিউরিফায়ার স্থাপন করে সামগ্রিক বায়ুমানে উল্লেখযোগ্য উন্নতি আনা কঠিন। বায়ুদূষণ রোধে স্বীকৃত উপায়গুলোর মধ্যে এয়ার পিউরিফায়ার নেই। এটি ছোট পরিসরে সাময়িক স্বস্তি পেতে পরীক্ষামূলকভাবে বসানো যেতে পারে।এয়ার পিউরিফায়ার কী

এয়ার পিউরিফায়ার ক্ষুদ্র ধূলিকণা, জীবাণু ও দূষণ সৃষ্টিকারী গ্যাসীয় পদার্থ শোষণ করে বাতাসকে পরিশুদ্ধ করে। যন্ত্রগুলোতে সাধারণত ফিল্টার, কার্বন ফিল্টার বা ইলেকট্রোস্ট্যাটিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এয়ার পিউরিফায়ারের বড় আকারের ইউনিটগুলো নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে বায়ু শোধনে সক্ষম হলেও এগুলোর প্রভাব মূলত সীমিত এলাকাজুড়ে।

ডিএনসিসি সূত্রে জানা গেছে, এইচডিসিটি ৫১০০০ মডেলের ৫০টি স্থির বায়ু পরিশোধন যন্ত্র বসানো হবে রাজধানীতে, যা প্রতি মিনিটে ৩০ হাজার ঘনফুট বায়ু পরিশোধন করতে পারবে। যন্ত্রটি বাতাসে থাকা অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত পরিশোধন করতে সক্ষম বলে যন্ত্র বিবরণী থেকে জানা গেছে।

একেকটি যন্ত্রের ওজন ১ হাজার ৫০০ কিলোগ্রাম, যা গড়পড়তা একটি টয়োটা করোলা গাড়ির সমান। যন্ত্রটি চালাতে ২২০ ভোল্ট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে, অর্থাৎ এটি বাসাবাড়িতে চালানো ফ্রিজ বা ওয়াশিং মেশিনের মতো ভোল্টেজে চলবে।

যন্ত্রটির বিবরণীতে বলা হয়েছে, এটি উচ্চ জনসমাগম এলাকাগুলোর জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশিকা অনুযায়ী, এটি বাতাসে অতিক্ষুদ্র কণার উপস্থিতির স্তর স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।

যন্ত্রটি যানবাহন ও শিল্প খাতের ধোঁয়াসহ সিগারেটের মতো ক্ষতিকর ধোঁয়া বাতাস থেকে টেনে নিতে সক্ষম।

গুলশানে ঢাকা উত্তর সিটির নগরভবনে ‘দূষণমুক্ত ন্যায্য নগর গঠনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ভূমিকা’ শীর্ষক পলিসি ডায়ালগে বক্তব্য দেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ