পয়লা বৈশাখ উদযাপনে হিন্দুদের জন্মাষ্টমীর ধর্মাচার মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ‘সর্বজনীনতা’র নামে সবার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। পয়লা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রাকে পরবর্তীতে মঙ্গল শোভাযাত্রায় রূপ দেওয়া ভারতীয় ষড়যন্ত্র আখ্যা ‌দি‌য়ে ইউনেস্কোর স্বীকৃতির পুনর্বিবেচনা ও ভুল সংশোধনের জন্য কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিতে স‌রকা‌রের প্রতি আহ্বান জা‌নি‌য়ে‌ছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশে।

বৃহস্প‌তিবার (১০ এপ্রিল) হেফাজতের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান এক বিবৃ‌তি‌তে এ আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় প্রতি বছরই তাদের দেবতা শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীতে সাড়ম্বরে মঙ্গল শোভাযাত্রা পালন করে থাকেন। সংখ্যালঘুর যেকোনো ধর্মীয় উৎসব পালনের স্বাধীনতা ও অধিকারের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু পয়লা বৈশাখ উদযাপনে হিন্দু সম্প্রদায়ের এই ধর্মাচারকে তথাকথিত ‘সর্বজনীনতা’র নামে সবার ওপর চাপিয়ে দিয়েছে ফ্যাসিস্ট সেকুলার বাঙালি জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী। মূলত আমাদের জাতীয় চেতনা ও ঐতিহ্য থেকে মুসলিম সংস্কৃতি ও ভাবধারাকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতে এই সেকুলার সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদ কায়েম করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ সেকুলার ফ্যাসিবাদের আঁতুড়ঘর হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।’

তারা আরো বলেন, “১৯৮৯ সালের পয়লা বৈশাখে প্রথম পালিত আনন্দ শোভাযাত্রাকে পরবর্তীতে মঙ্গল শোভাযাত্রায় রূপ দেওয়াকে আমরা ভারতীয় ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখি। ঢাবির চারুকলা সবসময় মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করলেও পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আবেদনের ভিত্তিতে ২০১৬ সালে জাতিসংঘের ইউনেস্কো পয়লা বৈশাখের বানোয়াট মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ‘অধরা সাংস্কৃতিক ঐহিত্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। তাই ইউনেস্কোর স্বীকৃতির পুনর্বিবেচনা ও ভুল সংশোধনের জন্য সংস্থাটির কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিতে আমরা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার প্রতি জোর আহ্বান জানাচ্ছি।”

হেফাজত নেতারা বলেন, “প্রাথমিক সমাধান হিসেবে ‘মঙ্গল’ শব্দ পরিবর্তন করে পয়লা বৈশাখের আদি ও আসল আনন্দ শোভাযাত্রা ফিরিয়ে আনতে ভূমিকা রাখতে পারে সরকার। আনন্দ শোভাযাত্রা অন্তত সাম্প্রদায়িক ছিল না। জাতীয় উৎসব উদযাপনে যেকোনো ধরনের মূর্তিবাদী সংস্কৃতির আমরা বিরোধিতা করি। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের দেশে জাতীয় কোনো উৎসবে ইসলামের তৌহিদী চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক এমন কোনো চিহ্ন রাখা যাবে না। সেকুলারদের বৈশাখী মঙ্গল শোভাযাত্রা হিন্দুদের বিভিন্ন দেবতা ও ধর্মীয় পশু-পাখির মূর্তি ও প্রতিকৃতিতে সয়লাব থাকে। অথচ সেকুলার হয়েও তাদের এতে কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু নানাভাবে ইসলামবিদ্বেষ প্রকাশে ঠিকই তারা তৎপর। হাজার বছরের সংস্কৃতির মিথ্যা দাবিতে তারা সবসময় মঙ্গল শোভাযাত্রার দালালি করেছে। আমরা এসব বিজাতীয় সংস্কৃতি চর্চা ঠেকাতে ইসলামের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধারণ করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান করছি।”

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আনন দ শ ভ য ত র ইউন স ক ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

‘আগামীর বাংলাদেশে মিডিয়াকে দালাল হিসেবে দেখতে চাই না’ 

জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‍“আগামীর বাংলাদেশে মিডিয়াকে দালাল হিসেবে দেখতে চাই না। মিডিয়াকে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে দেখতে চাই না।” 

তিনি বলেন, “২৪ পূর্ববতী কয়েকটি মিডিয়া অন্ধের মতো একটি দলের দালালি করেছে। তাদের সংবাদকর্মীরা যেসব মিডিয়ায় এখন কাজ করেন আজকে তারা সেটা বলতেও লজ্জা পান। আমরা চাই ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে কোনো মিডিয়ার এমন করুণ দশা না হোক।”

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

বান্দরবান নিয়ে বক্তব্য: দুঃখ প্রকাশ করলেন সারজিস আলম

৭২-এর মুজিববাদী সংবিধান রেখে সংস্কার সম্ভব নয়: সারজিস

সারজিস আলম বলেন, “টাঙ্গাইলে মারুফ হত্যার আসামিদের ধরার তৎপরতা আমরা লক্ষ্য করিনি। এখনো টাঙ্গাইলের কিছু ব্যক্তি, কিছু দল ও কিছু গোষ্ঠী জুলাই-আগস্টে নিহতদের বিচারকে সামনের দিকে না নিয়ে বাধাগ্রস্ত করছে। তারা মামলা বাণিজ্য করছে। আমরা চিনে রাখছি কারা এই মামলা বাণিজ্য করছে।” 

তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের সময় খুনি হাসিনা পালিয়ে গিয়েছিলেন। এ জন্য ওই সময় আমাদের কিছু সিদ্ধান্ত দ্রুত নিতে হয়েছিল। তবে এখন আমরা প্রত্যেকটা স্টেপ পর্যবেক্ষণ করছি। কোন মিডিয়া কার হয়ে কাজ করছে, কোন প্রশাসন জনগণের উদ্দেশ্য সার্ভ না করে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য সার্ভ করছে, সেটা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের কাছে চাঁদাবাজীর একটাই পরিচয়, সেটা হচ্ছে তারা চাঁদাবাজ। এই বাংলাদেশে আর কাউকে চাঁদাবাজী করতে দেওয়া হবে না। কেউ যদি চাঁদাবাজকে প্রটেকশন দেওয়ার চেষ্টা করেন তাদের চাঁদাবাজির ভাগিদার হিসেবে বিবেচিত করা হবে।”  

এনসিপির এই নেতা বলেন, “শুধু বাংলাদেশ নয়, দেশের বাইরেও টাঙ্গাইল ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্পের জন্য পরিচিত। প্রয়োজনীয় পৃষ্টপোষকতার অভাবে এই তাঁত শিল্প ধীরে ধীরে ধ্বংস করা হয়েছে।” 

সারজিস বলেন, “এই দেশে শুধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মূল্যায়ন করা হয়েছে। অথচ মানুষ যাদের দেখে রাজনীতি শিখবে শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মতো মানুষদেরকে এক কোণে রাখা হয়েছে। ভাসানীর মতো লোকদের ইতিহাস থেকে এক কোণে রাখা সম্ভব না।” 

প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “২৪ পরবর্তী নতুন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বাংলাদেশের জন্য দেখতে চাই, দেশের মানুষের জন্য দেখতে চাই। আমরা প্রশাসনকে কোনো দল, ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর দালাল হিসেবে দেখতে চাই না। কোনো দল বা গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য দেখতে চাই না।

সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

ঢাকা/কাওছার/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাইয়ের ১১ নাটক নিয়ে শিল্পকলায় উৎসব
  • ১৬ কোটি টাকায় সারা দেশে ফুটবলের তিন টুর্নামেন্ট
  • দুদিনের সফরে কলকাতায় ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু
  • ভৌতিক গল্প নিয়ে কানাডায় নুহাশ
  • তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন
  • এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী প্রস্তুতি নিতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন
  • সিডনিতে ড্র অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কেউ না থাকায় হতাশ প্রবাসীরা
  • ‘মুক্তির উৎসব’ করতে সহযোগিতা চেয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাবেক সমন্বয়কের আবেদন
  • ‘আগামীর বাংলাদেশে মিডিয়াকে দালাল হিসেবে দেখতে চাই না’ 
  • এবার পরিবার নিয়ে ঘরে বসেই ‘উৎসব’