মুম্বাই হামলায় অভিযুক্ত পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত তাহাউর রানাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতে প্রত্যর্পণ
Published: 10th, April 2025 GMT
পাকিস্তানে জন্মগ্রহণকারী যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরভিত্তিক ব্যবসায়ী তাহাউর রানাকে ভারতে প্রত্যর্পণ করা হয়েছে। ২০০৮ সালে মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলায় অভিযুক্ত এই ব্যক্তিকে বৃহস্পতিবার দিল্লিতে আনা হয়েছে। ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
শিকাগোতে ব্যবসা করলেও তাহাউর রানা ছিলেন কানাডার নাগরিক। ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত মুম্বাই হামলার সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ থেকে তাঁকে খালাস দিয়েছিলেন। কিন্তু হামলার সঙ্গে জড়িত একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সহায়তা দেওয়ার দায়ে আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। ২০০৮ সালে মুম্বাইয়ের ওই হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৬৬ জন।
তাহাউর রানাকে ২০১৩ সালে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ওই আদালত। কিন্তু স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে ২০২০ সালে ৬৪ বছর বয়সী রানাকে মুক্তি দেওয়া হয়। তখন ভারত তাঁকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানালে ওই বছরের শেষের দিকে তাঁকে আবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত ২০২৩ সালে তাহাউর রানাকে ভারতে প্রত্যর্পণের অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদনের আগপর্যন্ত তিনি নিরাপত্তা হেফাজতে ছিলেন।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওয়াশিংটনে বৈঠক করেন। এই বৈঠকের পর তাহাউর রানার প্রত্যর্পণ মঞ্জুর করেন ট্রাম্প।
এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তাহাউর রানা যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন। আদালত তাঁর আবেদন নাকচ করে দেন। ১৯৯৭ সালে হওয়া ভারত-মার্কিন প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাঁকে প্রত্যর্পণ করা হয়েছে।
তাহাউর রানা কেতাহাউর রানা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আত্মসমর্পণের পর কারাগারে খালেদা জিয়ার ভাগ্নে তুহিন
দুর্নীতি ও কর ফাঁকির পৃথক দুই মামলায় খালেদা জিয়ার ভাগ্নে শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন আদলাতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চেয়েছেন। আদালত তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকার পৃথক দুই বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে আপিলের শর্তে জামিন আবেদন করেন শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন। মামলার শুরু থেকে পলাতক ছিলেন তিনি। রায় ঘোষণার ১৭ বছর পর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তুহিন।
দুই মামলার মধ্যে প্রথমে কর ফাঁকির মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক কবির উদ্দিন প্রামাণিকের আদালতে তার আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এরপর অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক প্রদীপ কুমার রায়ের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে এ আদালতও তার জামিন নামঞ্জুর করেন।
এসময় আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তার চিকিৎসা ও ডিভিশন চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে তিনি হৃদরোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন বলে জানান আদালতকে। এ জন্য ব্যক্তিগত খরচে তাকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করা হয়। আদালত কারাবিধি অনুযায়ী ডিভিশন ও চিকিৎসার নির্দেশ দেন।
জানা যায়, কর ফাঁকির অভিযোগ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনের সময় তার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমশিন (দুদক)।
এর মধ্যে কর ফাঁকির মামলায় ২০০৮ সালে পৃথক দুই ধারায় তিন বছর ও পাঁচ বছর করে মোট আট বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। দুই ধারার সাজা একত্রে চলবে বিধায় তাকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের সাজা ভোগ করতে হবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন।
এছাড়া, অবৈধ সম্পদের মামলায় ২০০৮ সালে তাকে পৃধক দুই ধারায় তিন বছর এবং ১০ বছর অর্থাৎ ১৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
ঢাকা/এম/ইভা