Prothomalo:
2025-11-02@01:15:40 GMT

টেসলা কতটা ‘মেড ইন আমেরিকা’

Published: 12th, April 2025 GMT

যুক্তরাষ্ট্রে এখন ব্যবসা নিয়ে অনেক আলাপ শোনা যাচ্ছে। কোন প্রতিষ্ঠান কতটা আমেরিকান, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অন্য দেশের আমদানির ওপরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সহযোগী ইলন মাস্কের টেসলা গাড়ি এই সময় সবচেয়ে বেশি চাপের ওপরে রয়েছে। টেসলার বিভিন্ন কারখানায় যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি উৎপাদন করা হলেও অন্য সব দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টেসলা বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করে বলে জানা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রে টেসলার বিস্তৃত কারখানা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে গাড়ি উৎপাদন করা হচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়ার ফ্রেমন্ট টেসলার প্রধান কারখানা। এখানে মডেল এস, মডেল ৩, মডেল এক্স এবং মডেল ওয়াইয়ের মতো গাড়ি সংযোজন করা হয়। নেভাদার গিগাফ্যাক্টরিতে প্যানাসনিকের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে একটি প্ল্যান্ট রয়েছে টেসলার। এখানে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি সেল, পাওয়ারওয়াল ও মেগাপ্যাকের মতো শক্তি সঞ্চয়কারী পণ্য তৈরি করে টেসলা। টেক্সাসের গিগাফ্যাক্টরিতে সাইবারট্রাক এবং মডেল ওয়াই তৈরি করা হচ্ছে। নিউইয়র্কের গিগাফ্যাক্টরিতে প্রাথমিকভাবে সৌর প্যানেল উৎপাদনের জন্য প্রতিষ্ঠিত করা হলেও এখন জ্বালানির বিভিন্ন পণ্য ও উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে টেসলার কারখানা রয়েছে। চীনের গিগাফ্যাক্টরি সাংহাই ২০১৯ সালে চালু হয়। এখানে মডেল ৩ ও মডেল ওয়াই নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে টেসলার প্রথম কারখানা। এখানকার গাড়ি চীনের বাজারসহ ইউরোপ ও এশিয়ায় রপ্তানি করা হচ্ছে। জার্মানিতে আছে গিগাফ্যাক্টরি বার্লিন-ব্রান্ডেনবার্গ। ২০২২ সালে হওয়া এই ফ্যাক্টরিতে মডেল ওয়াই নির্মাণ করা হচ্ছে। জার্মান প্রকৌশল ও স্থায়িত্বের ওপর গুরুত্ব দিয়ে এই কারখানা চালু করা হয়। এখানে স্থানীয়ভাবে ব্যাটারি তৈরি করা হচ্ছে।

এ ছাড়া মেক্সিকো ও ভারতে টেসলার কারখানা চালুর কথা রয়েছে। কানাডায় টেসলার ব্যাটারি তৈরির ব্যবস্থা আছে। এখানে ৪৬৮০ ব্যাটারি সেল তৈরি হচ্ছে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য টেসলার ফ্যাক্টরি ভবিষ্যতে তৈরির কথা শোনা যায়। ব্যাটারি উপকরণের জন্য টেসলা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। লিথিয়াম, কোবাল্ট, গ্রাফাইট এবং নিকেলের জন্য চীনের গানফেং লিথিয়াম ও হুয়ায়ু কোবাল্টের মতো কোম্পানি টেসলার প্রধান সরবরাহকারী।

টেসলার লিথিয়াম সংগ্রহ করছে অস্ট্রেলিয়া থেকে। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের বৃহত্তম লিথিয়াম উৎপাদক। টেসলার পিলবারা মিনারেলস এবং মিনারেল রিসোর্সের মতো কোম্পানির সঙ্গে অংশীদারত্ব রয়েছে। নিকেল ও কোবাল্টের জন্য টেসলা পরিবেশবান্ধব উপায়ে কাঁচামাল সংগ্রহের জন্য কানাডার খনি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সই করেছে। টেসলাকে ভ্যালে কানাডা কম কার্বনযুক্ত নিকেল সরবরাহ করে। কঙ্গো প্রজাতন্ত্র থেকে টেসলার জন্য কোবাল্ট সংগ্রহ করা হচ্ছে। টেসলা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে এসব খনিজ উপাদান সংগ্রহ করছে।

টেসলার অটো যন্ত্রাংশ ও উপাদান বিশ্বের নানা দেশ থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। ওয়্যারিং, প্লাস্টিকের যন্ত্রাংশ ও ধাতব উপাদান মেক্সিকো থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। জার্মানির গিগাফ্যাক্টরি বার্লিন টেসলা মোটর এবং ড্রাইভ ইউনিটের জন্য উপাদান তৈরি করছে। টেসলা ও জাপানের প্যানাসনিক যৌথভাবে গিগাফ্যাক্টরি নেভাদায় ব্যাটারি সেল তৈরি করছে। এ ছাড়া জাপানের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ইলেকট্রনিকস ও সেন্সর ব্যবহার করে টেসলা। দক্ষিণ কোরিয়ার এলজি এনার্জি সলিউশন ও স্যামসাং এসডিআইয়ের কাছ থেকে টেসলা ব্যাটারি উপাদান ও ডিসপ্লে প্রযুক্তি গ্রহণ করছে। ভারতের টাটা অটোকম্প, সোনা কমস্টার ও ভারত ফোর্জের মতো কোম্পানি টেসলার ডিফারেনশিয়াল সিস্টেম এবং ছোট প্লাস্টিকের যন্ত্রাংশের মতো উপাদান সরবরাহ করে।

টেসলার গাড়িতে ব্যবহৃত বিরল মৃত্তিকা উপাদান ও বিশেষায়িত উপকরণ সংগ্রহ করা হচ্ছে ব্রাজিল থেকে। ইন্দোনেশিয়া থেকে নিকেল সংগ্রহ করা হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নিকেল উৎপাদকদের মধ্যে অন্যতম। টেসলা সুইডেন থেকে গ্রিন ইস্পাত ও বিরল মৃত্তিকা সংগ্রহ করছে।

সূত্র: সিএনবিসি, রয়টার্স, ন্যাসড্যাক

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপ দ ন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ফার্নেস তেলের বাড়তি দামের চাপে পিডিবি

প্রতি লিটার ফার্নেস তেলে ৭০ টাকা খরচ পড়ছে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রে। একই তেল বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সরবরাহ করছে ৮৬ টাকা দরে। অর্থাৎ প্রতি লিটারে ১৬ টাকা বাড়তি দিতে হচ্ছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি)।

প্রতি মাসে গড়ে ৬০ হাজার টন ফার্নেস তেল নিচ্ছে পিডিবি। এতে পিডিবির বাড়তি খরচ হচ্ছে ৯৬ কোটি টাকা। অঙ্কটি বছরে হাজার কোটি টাকা ছাড়াতে পারে।

সর্বশেষ গত বছরের ২ আগস্ট ফার্নেস তেলের দাম নির্ধারণ করে বিপিসি। এরপর গত এক বছরে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলেও দেশে তা সমন্বয় করা হয়নি। বিপিসি সূত্র বলছে, গত জানুয়ারিতে প্রতি টন ফার্নেস তেলের দাম ছিল ৪৮৬ ডলার। এখন তা কমে হয়েছে ৩৭৩ ডলার। এর মানে গত ১০ মাসেই বিশ্ববাজারে দাম কমেছে ২৩ শতাংশ, অথচ দেশে কমানো হয়নি।

জ্বালানি খাত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত বছর বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি গেছে ৬২ হাজার কোটি টাকা। এ বছরও বিদ্যুৎ খরচ কমাতে হিমশিম খাচ্ছে পিডিবি। একদিকে পিডিবির কাছে তেল বিক্রি করে বাড়তি মুনাফা করছে সরকারি সংস্থা বিপিসি; অন্যদিকে সরকারি আরেক সংস্থা পিডিবিকে নিয়মিত ভর্তুকি দিতে পারছে না সরকার। এতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিল নিয়মিত পরিশোধ করতে পারছে না পিডিবি।

বিপিসি সূত্র বলছে, গত জানুয়ারিতে প্রতি টন ফার্নেস তেলের দাম ছিল ৪৮৬ ডলার। এখন তা কমে হয়েছে ৩৭৩ ডলার। এর মানে গত ১০ মাসেই বিশ্ববাজারে দাম কমেছে ২৩ শতাংশ, অথচ দেশে কমানো হয়নি।

‘এটা তো অপরাধ’

চুক্তি অনুসারে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রকে জ্বালানি তেল সরবরাহের ব্যবস্থা করে দেয় পিডিবি। আর বিদ্যুৎকেন্দ্র নিজেরা আমদানি করলে ৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জসহ তাদের তেলের দাম পিডিবি পরিশোধ করে দেয়।

বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র মালিকদের সংগঠন (বিআইপিপিএ) সূত্র জানিয়েছে, প্রতি লিটার ফার্নেস তেলে গত জানুয়ারিতে তারা নিয়েছিল ৮৫ থেকে ৮৭ টাকা। তারা এখন পিডিবির কাছ থেকে গড়ে নিচ্ছে ৭০ টাকা। পিডিবির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তাও দামের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

একটি সরকারি সংস্থা লিটারে ১৬ টাকা বেশি নেয় কেমন করে? এটা তো অপরাধ। এ লুণ্ঠনের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিতএম শামসুল আলম, জ্বালানি উপদেষ্টা, ক্যাব

পিডিবি ও বিপিসি সূত্র বলছে, গত বছর বিপিসির কাছ থেকে ৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫১২ টন ফার্নেস তেল নিয়েছিল পিডিবি। এ বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে ৫ লাখ ৭২ হাজার ৫৫৮ টন। এর মানে বছরের ৯ মাসে পিডিবি মোট ফার্নেস তেল নিয়েছে ৫৭ কোটি ২৫ লাখ ৫৮ হাজার লিটার। পুরোটা সময়ই বাড়তি দাম শোধ করে আসছে পিডিবি। বাকি ৩ মাসে আরও ১৩ কোটি লিটার ফার্নেস তেল সরবরাহের কথা রয়েছে। দাম না কমালে পিডিবিকে ৩ মাসেই বাড়তি দিতে হবে ২০৮ কোটি টাকা।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, একটি সরকারি সংস্থা লিটারে ১৬ টাকা বেশি নেয় কেমন করে? এটা তো অপরাধ। এ লুণ্ঠনের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। জ্বালানি বিভাগও এর দায় এড়াতে পারে না।

বিইআরসি নীরব

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ হিসেবে ২০০৩ সালে গঠিত হয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। গণশুনানি করে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ করার কথা এ কমিশনের। তবে প্রবিধানমালা চূড়ান্ত না করায় জ্বালানি তেলের (অকটেন, পেট্রল, ডিজেল, কেরোসিন) দাম নির্ধারণ করে জ্বালানি বিভাগ। আর ফার্নেস তেলের দাম নির্ধারণ করে বিপিসি। যদিও সরকার পরিবর্তনের পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে ফার্নেস তেলের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা বিইআরসির হাতে দেওয়া হয়।

বিইআরসির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বিইআরসির লাইসেন্স নেই বিপিসির। তাই তাদের প্রস্তাব ধরে গণশুনানি আয়োজনের আইনগত সুযোগ নেই।

বিপিসির কর্মকর্তারা বলছেন, ফার্নেস তেলের দাম নির্ধারণের পরের মাসেই দাম নির্ধারণের ক্ষমতা বিইআরসির হাতে দেয় সরকার। তাই বিপিসির দাম সমন্বয়ের আর সুযোগ নেই। দাম নির্ধারণে বিইআরসির কাছে প্রস্তাব করা হলেও শুনানি হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ
  • যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান
  • ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিতে পেন্টাগনের সায়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প
  • সবজির দাম কমতির দিকে, আটার দাম কেজিতে বাড়ল ৫ টাকা
  • যবিপ্রবিতে বাতাস হলেই বিদ্যুৎ চলে যায়, অভিযোগ শিক্ষার্থীদের
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫ ঘণ্টা পর গ্যাস সরবরাহ শুরু
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মহাসড়কে নির্মাণকাজের সময় গ্যাস লাইনে ছিদ্র, সরবরাহ বন্ধ হয়ে ভোগান্তিতে গ্রাহক
  • বসুন্ধরার আই ব্লকে হেরিটেজ সুইটসের ২য় শাখা উদ্বোধন
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত, গ্যাস সরবরাহ বন্ধ
  • ফার্নেস তেলের বাড়তি দামের চাপে পিডিবি