পাবনার চাটমোহর উপজেলায় ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিখোঁজের পরদিন গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের একটি ভুট্টাক্ষেত থেকে মুখ ঝলসানো অবস্থায় শিশুটির বিবস্ত্র লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগীর বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায়। সে ছিল স্থানীয় একটি হেফজখানার প্রথম শ্রেণির ছাত্রী।

স্বজনরা জানান, সোমবার পহেলা বৈশাখ বিকেলে দাদাবাড়ি যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয় শিশুটি। এর পর আর ফেরেনি। বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার সকালে চাটমোহরের হরিপুর এলাকায় ভুট্টাক্ষেতের মধ্যে লাশ পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দিলে পুলিশ তা উদ্ধার করে। এ সময় তার মুখে পোড়া ক্ষতচিহ্ন এবং পরনের প্যান্ট গলায় পেঁচানো ছিল। 

পুলিশের ধারণা, ধর্ষণ ও শ্বাসরোধে হত্যার পর শিশুটির মুখ ঝলসে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের ধারণা, তার মুখ এসিড দিয়ে পোড়ানো হয়েছে।

চাটমোহর থানার ওসি মঞ্জুরুল আলম বলেন, শিশুটির স্বজন লাশ দেখে পরিচয় শনাক্ত করেছেন। লাশ উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

এদিকে ফেনীতে থাইল্যান্ডের নাগরিক এক নারীকে ধর্ষণ ও মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই নারীর করা মামলায় মোখসুদুর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে সোমবার গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মোখসুদুর ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের নোয়াবাদ মুসলিম মেম্বার ভূঁইয়াবাড়ির আব্দুর রবের ছেলে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, জন্মসূত্রে ভারতীয় হলেও থাইল্যান্ডের নাগরিক ওই নারী ২০২০ সাল থেকে হংকংয়ের একটি মুদি দোকানে ব্যবসা করেন। সেখানেই মোখসুদুরের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এর পর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং এক পর্যায়ে মোখসুদুর তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন। পরে মোখসুদুর বাংলাদেশে চলে এলেও তাদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল। বিয়ের কথা বলা হলে গত বছরের ২২ মার্চ তিনি প্রথমবার বাংলাদেশে আসেন। একইভাবে মোখসুদুর গত বছরের ১২ অক্টোবর আবার ওই নারীকে বাংলাদেশে নিয়ে এসে ধর্ষণ করেন। 

সবশেষ ১৩ এপ্রিল ওই নারী বাংলাদেশে এসে মোখসুদুরের ফেনীর বাড়িতে গেলে তাঁকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ সময় তাঁর মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলেন মোখসুদুর। 

ফেনী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সামসুজ্জামান জানান, ভুক্তভোগী ওই নারীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। 

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত রোববারের এ ঘটনায় উলফাত মোল্লা নামে এক দোকানিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে, প্রভাবশালী একটি মহল ভুক্তভোগীর পরিবারকে আইনগত পদক্ষেপ না নিতে চাপ দেয় এবং ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। ঘটনার রাতেই অভিযুক্ত উলফাতকে নিয়ে বাজারের সভাপতি কামরুল ইসলাম সাবু ও স্থানীয় মাতবর লাভলু, নাজির, তাইজেল, জাকির, বোরাকসহ ১০-১২ জন বাজারের মধ্যে সালিশ বৈঠকে বসেন। তারা সবার সম্মতিতে উলফাতকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

ভুক্তভোগীর চাচা বলেন, ‘ওই বৈঠকে আমাদের ডাকা হয়নি। ইজ্জত তো চলেই গেছে; টাকা দিয়ে কী হবে?’ এ ব্যাপারে মাতবর নাজিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি সালিশ বৈঠকের বিষয়টি অস্বীকার করেন।

লোহাগড়া থানার ওসি আশিকুর রহমান জানান, উলফাতকে সোমবার সন্ধ্যায় আটক করা হয়। ভুক্তভোগীর পরিবার লিখিত অভিযোগ না করায় তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মোজাম্মেল হোসেন নামে এক মুদি দোকানিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত জানুয়ারি মাসে মেয়েটিকে কয়েক দফায় ধর্ষণ করে মোজাম্মেল। এ ঘটনায় মঙ্গলবার তার বিরুদ্ধে কলমাকান্দা থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগীর বাবা। এর পর মোজাম্মেলকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। কলমাকান্দা থানার ওসি মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলায় ভাড়া বাসায় আলু তোলার কাজে নিয়োজিত নারী শ্রমিককে ধর্ষণের অভিযোগে বাবু মোল্লা নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত রোববার রাতে তাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার বাবুকে মুন্সীগঞ্জ আমলি আদালত-৪ এ তোলা হলে বিচারক নুসরাত শারমিন কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বাবু উপজেলার বালিগাঁও গ্রামের শামসুল মোল্লার ছেলে। টঙ্গিবাড়ী থানার ওসি মহিদুল ইসলাম জানান, ২০ মার্চ ধর্ষণের ঘটনার পর মামলা হলে বাবু পালিয়ে যায়। 

(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি)

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর এ ঘটন য় উপজ ল য় ওই ন র র কর ছ স মব র উলফ ত

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ