বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের এক নেত্রীসহ ৩ জন‌কে ছাত্রদল কর্মীরা আটক ক‌রে পুলিশে সোপর্দ করেছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

আটক ছাত্রীর নাম টিকলি শরিফ। তি‌নি বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। টিক‌লি খুলনা মহানগর শাখা ছাত্রলীগের উপ-ছাত্রীবিষয়ক সম্পাদক এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। ব‌রিশাল বিশ্ব‌বিদ‌্যাল‌য়ে ছাত্রলী‌গের ক‌মি‌টি ছিল না।

জানা গেছ‌ে, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে’ ব‌বি‌তে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।

ছাত্রদলের দাবি, টিকলি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হয়ে ক্যাম্পাসে গোপনে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ছাত্রদলের কয়েকজন সদস্য তাকে আটকের পর প্রক্টরের উপস্থিতিতে পুলিশে হস্তান্তর করেন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা একই বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের দুই শিক্ষার্থী—মামুন ও তরিকুলকে আটক করা হয়।

অভিযোগের বিষয়ে টিকলি শরিফ জানান, তার মঙ্গলবার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা। লাইব্রেরিতে পড়ছিলেন। সন্ধ্যায় বাইরে বের হলে জুনিয়রদের সঙ্গে দেখা হয়,। তা‌দের স‌ঙ্গে চা খেতে গেলে সেখান থেকে তাকে আটক করা হয়।
ছাত্রলী‌গের স‌ঙ্গে সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে ব‌লেন, গণতান্ত্রিক প্রেক্ষাপটে যে কেউ ভালোবাসা থেকে সংগঠনের কাজ করতে পারে।

ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমি‌টির সাবেক সদস্য মিনহাজুল ইসলাম বলেন, টিক‌‌লি ক্যাম্পাসে ফি‌রে গোপন কার্যক্রম চালায়। জুনিয়ররা তাকে দেখে আটক করে প্রক্টর ম্যামের মাধ্যমে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.

সোনিয়া খান সনি বলেন, কিছু শিক্ষার্থী আমাকে জানানোর পর আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্তদের হস্তান্তর করি। পরবর্তী ব্যবস্থা পুলিশ আইন অনুযায়ী গ্রহণ করবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আটক ছ ত রদল স গঠন আটক ক

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ