নববর্ষ উপলক্ষে হা-ডু-ডু খেললেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা। টাঙ্গাইলের তোরাপগঞ্জ স্কুল মাঠে মঙ্গলবার এই খেলার আয়োজন করে সদর উপজেলার বাগবাড়ি চৌবাড়িয়া যুব সমাজ। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের হা-ডু-ডু খেলার কথা শুনে ভিড় জমান দর্শকরা। করতালি দিয়ে উৎসাহ যোগান তারা।

যারা খেলায় অংশ নিয়েছেন তাদের বেশিরভাগই ভিক্ষুক। নেই কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। হা-ডু-ডু অথবা টক টক শব্দ শুনেই প্রতিপক্ষকে ঝাঁপটে ধরে নিজেদের সীমার মধ্যে আটকে রাখার চেষ্টা করেন। টাঙ্গাইলে অনেক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধি মানুষ আছেন যারা তাদের খেলার খবর শুনলেই ছুটে যান মাঠে। তাদের অনেকেই শারিরিকভাবে খুবই শক্তিশালী। প্রতিপক্ষ খেলোয়াড় দম দিলেই বুঝতে পারেন তারা। রেফারি তাদের শুধু ধারণা দিয়ে দেন যে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়কে নিজেদের সীমানার মধ্যে সাতজনে মিলে ধরে রাখতে পারলে দুই পয়েন্ট এবং দম দিয়ে প্রতিপক্ষের কাউকে ছুয়ে আসতে পারলে এক পয়েন্ট। এই ধারণার ওপর ভিত্তি করেই খেলে থাকেন তারা।

টাঙ্গাইল জেলা কাবাডি দলের কোচ মোস্তফা কামাল বলেন, এই খেলোয়াড়দের কোনো প্রশিক্ষণ নেই। কোথাও খেলার কথা শুনলেই তারা ছুটে যান খেলেতে। খেলার আগে তাদের মাঠের দৈর্ঘ-প্রস্থ নিয়ে ধারণা দেওয়া হয়। মাঝামাঝি একটি সীমানা ও বিভিন্ন নিয়ম-কানুন বুঝিয়ে দেওয়া হয়। যেহেতু তারা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, তাই টক টক ও হা-ডু-ডু শব্দ শুনেই প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়কে অনুমান করে ধরে ফেলেন। তবে জেলার ১২টি উপজেলা থেকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী লোকদের মধ্যে থেকে বাছাই করে জেলা ক্রীড়া সংস্থা একটি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসন করা প্রয়োজন।

কথা হয় ঢাকা বিভাগীয় কাবাডি, অ্যাথেলেটিক্স ও ভলিবল কোচ বিপ্লব কুমার দাশের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, দুঃখজনক হলেও সত্য যে জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই। প্রশিক্ষণ দিলে তারাও দেশে-বিদেশে প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।

ব্যতিক্রম খেলা দেখতে আসা মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘দীর্ঘদিন পরে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের হা-ডু-ডু খেলা দেখে ভালো লেগেছে। আমরা চাই এমন হাডুডু খেলার আয়োজন আগামীতেও হোক।’ শিক্ষার্থী সুমাইয়া বলেন, ‘বাবা-মায়ের সঙ্গে খেলা দেখতে এসেছি। খুব উপভোগ করেছি।’

খেলার আয়োজক আব্দুল লতিফ মিয়া জানান, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মানুষ এত সুন্দর খেলতে পারে যা না দেখলে বিশ্বাসই হতো না। শত শত মানুষ খেলা উপভোগ করেছে। 

খেলোয়ারদের স্মৃতিশক্তি এত প্রখর প্রতিপক্ষকে ধরতে গিয়ে কেউ আউট হয়নি। জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাধ্যমে তাদের প্রশিক্ষণের দাবি জানান তিনি।

কাতুলী ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল লতিফ মিয়ার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল। উদ্বোধন করেন সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রৌফ।

ফরহাদ ইকবাল বলেন, নববর্ষে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য এমন ব্যতিক্রমী খেলার আয়োজন করেছে। অনেক দিন পর গ্রামের মানুষ হা-ডু-ডু খেলা উপভোগ করতে পেরেছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: খ ল র আয়

এছাড়াও পড়ুন:

বাবা পটুয়া কামরুল হাসান স্মরণে মেয়ে শুমোনা হাসানের গান

ভালোবাসা, স্মৃতি ও উত্তরাধিকারকে কেন্দ্র করে এক আবেগঘন পরিবেশে পটুয়া কামরুল হাসানের কন্যা শুমোনা হাসান তার বাবাকে উৎসর্গ করে একটি হৃদয়স্পর্শী গান প্রকাশ করেছেন।

বাবা দিবস উপলক্ষে আজ দ্য ডেইলি স্টার সেন্টারে একটি অনুষ্ঠানে ‘কত দূর বাবা তোমার বাড়ি’ শিরোনামে গানটি প্রকাশ করা হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শুমোনার পরিবার, ঘনিষ্ঠজন, এবং সম্মানিত গণমাধ্যমকর্মীরা।

গানটি শুমোনার নিজস্ব রচনা, সুর এবং কণ্ঠে পরিবেশিত। এতে ফুটে উঠেছে একজন কন্যার তার বাবার সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো, তাদের ভালবাসা, সংগ্রাম এবং অনন্য সম্পর্কের গল্প। গানের প্রতিটি কথা ও সুর যেন এক আবেগের যাত্রাপথ।

অনুষ্ঠানে শুমোনা বলেন, ‘এই মুহূর্তটি আমার এবং আমার পরিবারের জন্য এক বিজয়ী এবং আবেগময় সময়। বাবার আত্মা সবসময় আমাকে পথ দেখিয়েছে। এই গানটি তার প্রতি আমার ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতার ছোট্ট বহিঃপ্রকাশ।’

শুমোনা জানান, ভবিষ্যতেও তিনি এই ধারা অব্যাহত রেখে তাঁর বাবার স্মৃতিকে সম্মান জানাতে চান সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ