সাবেক সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী ও সুবিদ আলী ভূঁইয়ার সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ বুধবার এ আদেশ দেন।

আদালত রাজশাহী–১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী নিগার সুলতানা চৌধুরীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। একই সঙ্গে আটটি দলিলে কেনা ওমর ফারুক চৌধুরীর জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া ওমর ফারুক চৌধুরীর ৫৭টি ব্যাংক হিসাব এবং নিগার সুলতানা চৌধুরীর আটটি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়েছে, ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে মাদক কারবার, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে তারা।

সুবিদ আলীর সম্পদ জব্দের আদেশ

দুদকের তথ্য অনুযায়ী, কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি ও তিতাস) সুবিদ আলী ভূঁইয়া ও তাঁর স্ত্রী মাহমুদা আখতারের ১৩টি দলিলে থাকা জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া মাহমুদা আখতারের নামে থাকা শেয়ারও অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। সুবিদ আলী ভূঁইয়া ও তাঁর স্ত্রীর ১২টি ব্যাংক হিসাবে ৩৬ কোটি টাকার অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে ১ কোটি ৪২ লাখ ৫৪ হাজার টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সুবিদ আলী ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

এ ছাড়া কক্সবাজারের সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট ও ইউরো এশিয়া শিপিং এজেন্টের মালিক মো.

আবদুল মান্নান পাটোয়ারী ও তাঁর স্ত্রী শিউলী আক্তারের সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ওমর ফ র ক চ ধ র স ব দ আল

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ