দেশের ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি ফিন্যান্সের মুনাফা বেড়েছে। গত বছর শেষে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় সোয়া ৩৬ কোটি টাকা মুনাফা করেছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় সাড়ে ৬ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সালে আইপিডিসি ৩৪ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইপিডিসি গতকাল বুধবার তাদের গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করেছে। সেখানে মুনাফার এই তথ্য তুলে ধরা হয়। আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পাশাপাশি গত বুধবার প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় শেয়ারধারীদের জন্য বছর শেষে ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ৫ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ। মুনাফা বাড়লেও প্রতিষ্ঠানটির লভ্যাংশ অপরিবর্তিত রয়েছে। ২০২৩ সালেও প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারধারীদের ৫ শতাংশ বোনাস ও ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা ও লভ্যাংশের খবর আজ বৃহস্পতিবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে। ডিএসইতে দেওয়া তথ্যে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী করতে এবারও তারা বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। ঘোষিত লভ্যাংশ শেয়ারধারীদের মধ্যে কারা পাবেন, সেটি ঠিক হবে রেকর্ড তারিখে। প্রতিষ্ঠানটি রেকর্ড তারিখ ঘোষণা করেছে আগামী ৮ মে। ওই দিন শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির লেনদেন বন্ধ থাকবে এবং ওই দিন যাঁদের হাতে কোম্পানিটির শেয়ার থাকবে, তাঁরাই ঘোষিত এই লভ্যাংশ পাবেন। আর লভ্যাংশ বিতরণ করা হবে বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএমে অনুমোদনের পর। এজিএম অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২ জুন।

এদিকে লভ্যাংশ ও মুনাফার খবরে আজ ঢাকার শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে। এদিন লেনদেন শুরুর প্রথম এক ঘণ্টায় আইপিডিসির প্রতিটি শেয়ারের দাম ৬০ পয়সা বা পৌনে ৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ১০ পয়সায়। এ সময়ের মধ্যে কোম্পানিটির প্রায় ৯ লাখ শেয়ারের হাতবদল হয়। যার বাজারমূল্য ছিল দেড় কোটি টাকা।

আইপিডিসির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ থেকে ২০২৪—এই ছয় বছরের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি সর্বোচ্চ মুনাফা করেছিল ২০২২ সালে। ওই বছর প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা ৯০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছিল। এরপর ২০২৩ সালে তা ৬১ শতাংশ কমে ৩৪ কোটি টাকায় নেমে আসে। সেখান থেকে গত বছর মুনাফা প্রায় সোয়া দুই কোটি টাকা বেড়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র ২০২৩ স ল আইপ ড স গত বছর

এছাড়াও পড়ুন:

আসামি না হয়েও স্বেচ্ছায় কারাগারে যাওয়া সেই যুবক প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে মাদকের একটি মামলায় আসামি সেজে আদালতে আত্মসমর্পণের পর কারাগারে যাওয়া এক যুবককে জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখিয়েছেন আদালত। তাঁর নাম মো. রাকিব। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রকৃত আসামি মো. সুমনের হয়ে আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন রাকিব। আদালতের আদেশে ১ জুলাই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে আটক রাকিবকে জালিয়াতি ও প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেন। আসামিকে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।

আদালত সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট নগরের আকবর শাহ থানার কৈবল্যধাম এলাকায় একটি পিকআপ ভ্যানে অভিযান চালিয়ে ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে র‌্যাব, যার মূল্য ৪ লাখ টাকা। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় গাড়িচালক রাহাত ইসলামকে। পালিয়ে যান চালকের সহকারী (হেলপার) মো. সুমন। এ ঘটনায় র‌্যাব কর্মকর্তা বাদী হয়ে আকবর শাহ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এতে রাহাত ইসলাম ও মো. সুমনকে আসামি করা হয়।

আদালত পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে পলাতক আসামি সুমনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরই মধ্যে সুমনের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। বিষয়টি জানতে পেরে সুমন নিজেকে কারামুক্ত রাখতে তাঁর পরিবর্তে নোয়াখালীর রাকিবকে আদালতে আত্মসমর্পণ করায় ১ জুলাই। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তফা শুনানি শেষে আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। সুমনের হয়ে রাকিব আত্মসমর্পণের সময় তাঁর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ওয়াহিদ মুরাদ।

আদালতে একজনের পরিবর্তে আরেকজন আত্মসমর্পণের বিষয়টি ধরা না পড়লেও কারাগারে গিয়ে ধরা পড়ে। জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেজে (তথ্যভান্ডার) ভোটারদের আঙুলের ছাপ সংরক্ষিত আছে। এ পদ্ধতিকে বলা হয় ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেনটিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেম। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করে চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে আঙুলের ছাপে ধরা পড়েছে অনেক বন্দীর আসল পরিচয়। এসব ঘটনায় মামলাও হয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি মাসের জুলাই পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করে জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আসা ১৬ জনের আঙুলের ছাপে শনাক্ত করা হয়।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো. ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আদালত থেকে কারাগারে আসা প্রত্যেক নতুন আসামির আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। সেখানে আসামির জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা আসল পরিচয় উঠে আসে। ইকবাল হোসেন আরও বলেন, ‘সুমনের হয়ে কারাগারে আসা রাকিব স্বীকার করেছেন তিনি মাদক মামলার প্রকৃত আসামি নন। ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি সুমন সেজেছেন। তাঁকে বলা হয়েছে, দ্রুত কারাগার থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হবে। তাই তিনি রাজি হয়েছেন। বিষয়টি চিঠি দিয়ে আদালতকে জানানো হয়েছে।’

আরও পড়ুনচট্টগ্রামে ‘আয়নাবাজি’, ধরা পড়েছে আঙুলের ছাপে০৮ নভেম্বর ২০২৩

কারাগার থেকে চিঠি পাওয়ার পর মামলা করার নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মিজানুর রহমান। একই সঙ্গে আসামিকে আত্মসমর্পণকারী আইনজীবী ওয়াহিদ মুরাদের কাছে কারণ ব্যাখ্যা চেয়েছেন আদালত। আদালতের প্রসিকিউশন শাখার আকবর শাহ থানার জিআরও সাইদুর রহমান বাদী হয়ে গত রোববার রাতে নগরের কোতোয়ালি থানায় প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় মো. রাকিব ও মো. সুমনকে আসামি করা হয়। সুমন এখনো পলাতক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কর্মস্থলে অনুপস্থিত, পাঁচ প্রকৌশলী ও এক স্থপতি বরখাস্ত
  • গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৫ প্রকৌশলী ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের স্থপতি বরখাস্
  • মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা
  • দলবদলের বাজারে চেলসিই রাজা, শীর্ষ দশে আর কারা
  • গাজায় হামলার নিন্দা জানালেও ইসরায়েলের সঙ্গে কেন বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে এসব দেশ
  • গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়ালো
  • আসামি না হয়েও স্বেচ্ছায় কারাগারে যাওয়া সেই যুবক প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার
  • আলোচিত ষোড়শী আইনার পারিশ্রমিক কত?
  • গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল: বলছে ইসরায়েলভিত্তিক দুই মানবাধিকার সংস্থা
  • পৃথিবী থেকে ৩৭ কোটি মাইল দূরে থাকা মহাকাশযানের ক্যামেরা যেভাবে মেরামত করেছে নাসা