হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে কমেছে পাসপোর্টযাত্রী পারাপার
Published: 17th, April 2025 GMT
ভিসা জটিলতায় দিনাজপুরের হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে কমেছে পাসপোর্টযাত্রী পারাপার। গত ৫ আগস্টের পর শুরু হয় এই ভিসা জটিলতা। এর আগে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৬৫০ যাত্রী পারাপার হলেও বর্তমানে তা কমে ১৫০ থেকে ১৮০ জন যাত্রী পারাপার হচ্ছে।
তবে এসব যাত্রী শুধুমাত্র মেডিকেল ও স্টুডেন্ট ভিসায় যাতায়াত করছেন। টুরিস্ট ও বিজনেস ভিসা বন্ধ থাকায় কমেছে যাত্রী পারাপার, বলছেন ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। এদিকে বিজনেস ও টুরিস্ট ভিসা বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন আমদানিকারকসহ সাধারণ মানুষ।
হিলি স্থলবন্দর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর। এই বন্দর দিয়ে ভারতের সাথে আমদানি-রপ্তানির কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। বিগত বছরের ৫ আগস্টের পর ভারত সরকার নতুন করে ভিসা ইস্যু না করার কারণে বিপাকে পড়েছেন বন্দরের আমদানিকারকরা। এতে করে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে কমেছে পাসপোটযাত্রী পারাপার। তবে যেসব ব্যবসায়ীদের বিজনেস ভিসার মেয়াদ এখনও আছে, তারাই শুধু যাতায়াত করতে পারছেন।
হিলির স্থানীয় রমেন বসাক বলেন, “ভারতে আমার অনেক আত্মীয় স্বজন আছেন। টুরিস্ট ভিসা বন্ধ থাকায় আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা করতে ভারত যেতে পারছেন না।”
কয়েকজন পাসপোর্টধারী স্টুডেন্ট বলছেন, আগে তাদের অভিভাবকরা টুরিস্ট ভিসা নিয়ে দেখা করতে যাওয়া-আসা করতেন। এখন ভিসা বন্ধ থাকায় তারা আর দেখা করতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে তাদেরকেই স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে বাবা-মাসহ আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করতে হচ্ছে।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি কারক এসএম রেজা আহমেদ বিপুল বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে ভারতের টুরিস্ট ও বিজনেস ভিসা বন্ধ থাকায় আমরা ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে পড়েছি। ভারতীয় পণ্যগুলো মোবাইলের মাধ্যমে ভিডিও বা ছবি দেখে আমদানি করতে হচ্ছে। অনেক সময় আমদানিকৃত এসব পণ্য নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে আমাদের।”
হিলি ইমিগ্রেশন ওসি আরিফুল ইসলাম বলেন, “ভিসা বন্ধ থাকার কারণে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে বর্তমানে পাসপোর্টযাত্রী পারাপার কমেছে। তবে যদি ভারত সরকার ভিসা ইস্যু করে তাহলে আবারও যাত্রী পারাপার আগের মতো স্বাভাবিক হবে।”
ঢাকা/মোসলেম/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বন ধ থ ক য় ব জন স আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা
অবৈধ পথে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ১৪ তরুণ। কিন্তু দুবাই হয়ে লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর পাঁচ মাস ধরে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনদের দাবি, দালালের প্রলোভনে পড়ে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সন্ধান না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
ইউরোপের কোনো দেশে গেলে সচ্ছলতা আসবে, এমন ধারণা নিয়ে প্রতিবছর মাদারীপুর থেকে শত শত তরুণ সেখানে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন। তবে অবৈধ পথে ইউরোপ যেতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। কেউবা দালালের খপ্পরে পড়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে কাটাচ্ছেন বন্দিজীবন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্য বলছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত জেলার ৪৫ জন লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরেছেন অন্তত ৩৫০ তরুণ। নিখোঁজ আছেন তিন শতাধিক।
সবশেষ নিখোঁজ তরুণদের সবার বাড়ি রাজৈরের বাজিতপুর ইউনিয়নে। তাঁরা হলেন পাখুল্লা গ্রামের জাহাঙ্গীর ব্যাপারীর ছেলে সালমান ব্যাপারী, চৌরাশী গ্রামের মোসলেম শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার, একই গ্রামের মজিবর বয়াতীর ছেলে সাজ্জাদ বয়াতী, জাকির মাতুব্বরের ছেলে বাদল মাতুব্বর, কানাই রায়ের ছেলে লিটন রায়, নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে বাঁধন বাড়ৈ, কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের আলম চৌকিদারের ছেলে ইমন চৌকিদার, অহিদুল মাতুব্বরের ছেলে নয়ন মাতুব্বর, আজিজ খালাসির ছেলে খলিল খালাসি, সোনা মিয়া চৌকিদারের ছেলে সোহেল চৌকিদার, নয়াকান্দি বাজিতপুর গ্রামের গৌরাঙ্গ বাড়ৈর ছেলে গৌতম বাড়ৈ, একই গ্রামের সামচু সরদারের ছেলে ইমরান সরদার, শ্রীনাথদী বাজিতপুরের জলিল বয়াতীর ছেলে আল আমিন বয়াতি ও শ্রীনদী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ঘরামির ছেলে আলী ঘরামি। তাঁদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে।
স্বজনদের অভিযোগ, মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বাজিতপুর এলাকার বাবুল হাওলাদার ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৬ লাখ টাকা করে নেন। পরে লিবিয়ায় বন্দী করে আদায় করেন আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এর পর থেকে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত বাবুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
মাদারীপুরের ১৪ তরুণ ইতালি যেতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দালালের হাত ধরে ঘর ছাড়েন। নিখোঁজ তরুণদের সন্ধানে তাদের ছবি হাতে স্বজনেরা