গত বছরের জুলাইয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের শনাক্তে ‘ছায়া তদন্ত কমিটি' গঠন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ঢাবি সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে শিক্ষার্থীরা এ পাল্টা কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন।

ঘোষণা অনুযায়ী, ৩৪ সদস্যের একটি ছায়া তদন্ত কমিটি‌ আগামী ১ মাসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করবে।

আরো পড়ুন:

মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুনদাতাদের গ্রেপ্তার দাবি 

ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন দেওয়া ন্যক্কারজনক: সাদা দল

শিক্ষার্থীরা বলেন, জুলাইয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের অন্তত কয়েকশ নেতাকর্মী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। কিন্তু তদন্ত কমিটি মাত্র ১২৮ জনের তালিকা প্রকাশ করে, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের মতো রাঘব বোয়ালরা বাদ পড়ে। এর মধ্যে আবার ছয়জন রয়েছে, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহিরের। এমন রিপোর্ট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রহসনের নামান্তর।    

এ সময় ঢাবি শিক্ষার্থী সর্দার নাদিম মাহমুদ শুভ বলেন, “সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হাজারখানেক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটিতে আমরা মাত্র ১২৮ জনের নাম পাই। সঠিক তদন্তের জন্য আমরা এমন উদ্যোগ নিয়েছি।”

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেজওয়ান আহম্মেদ রিফাত বলেন, “আমরা ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে হামলার শিকার ও প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে একটি ছায়া তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। এই কমিটির প্রধান কাজ হবে জুলাই আগস্টে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িতদের তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা। আমরা আগামী ১ মাসের মধ্যে এই শ্বেতপত্রটি প্রকাশ করব।”

এ সময় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং গণমাধ্যমকর্মীদের উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ দিয়ে হামলাকারীদের তালিকা প্রণয়নে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিফাত বলেন, “সময় যত যাচ্ছে তথ্যপ্রমাণ মুছে যাচ্ছে। তাই আমরা একটা শ্বেতপত্র তৈরি করে রেখে দিতে চাই, যেন আগামী প্রজন্ম মনে রাখে কারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল। আমরা এটা পরে প্রশাসেনের কাছে জমা দেব। প্রশাসন চাইলে আমাদের রিপোর্ট বিবেচনায় নিয়ে তদন্তে নামতে পারে।” 

তিনি আরো বলেন, “আমরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িতদের শানাক্ত করার পাশাপাশি হামলায় পরোক্ষভাবে যারা জড়িত ছিল, যেমন লাঠিসোটা এগিয়ে দেওয়া, অনলাইনে উস্কে দেওয়া, ফেসবুক মেসেঞ্জারে হামলার বিষয়ে ইন্ধন দেওয়া ব্যক্তিদেরও এ তালিকায় রাখা হবে।”

শিক্ষার্থীদের তদন্ত কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড.

সায়মা হক বিদিশা বলেন, “শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগকে আমি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। তারা আমাদের কাজে সাহায্য করছে। শিক্ষার্থীরা যদি এ নিয়ে কাজ করে তথ্য-প্রমাণ বের করে, তাহলে এটা আমাদের তথ্যানুসন্ধান কমিটির কাজকে আরো সহজ করবে।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষ র থ দ র ওপর হ কম ট র

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে এটিএম বুথে ধর্ষণের অভিযোগ, অভিযুক্ত পলাতক

গাজীপুরের শ্রীপুরে অধিক বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক নারী পোশাক শ্রমিককে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একটি এটিএম বুথের নিরাপত্তা প্রহরীর বিরুদ্ধে।

সোমবার (১৬ জুন) সকালে ওই নারী শ্রমিকের বাবা বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। 

রবিবার (১৫ জুন) সকালে শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ গ্রামের এমসি বাজার এলাকায় তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন একটি ব্যাংকের এটিএম বুথে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ।

ভুক্তভোগী নারী স্থানীয় একটি কারখানায় ৬ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতেন। অভিযুক্ত নিরাপত্তা প্রহরী মো. লিটন (৩৫) তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন বুথে দায়িত্ব পালন করতেন। 

লিটন ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার ডুবাইল গ্রামের মৃত আব্দুল আউয়ালের ছেলে। বর্তমানে তিনি মুলাইদ গ্রামের আতাব উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন এবং ফাস্ট সলিউশন লিমিটেড নামের একটি নিরাপত্তা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের অধীনে চাকরি করতেন।

থানায় দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, এটিএম বুথে টাকা তোলার সূত্র ধরে এই নারী শ্রমিকের সঙ্গে পরিচয় হয় লিটনের। একপর্যায়ে লিটন ভুক্তভোগীকে ১২ হাজার টাকা বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রবিবার সকালে তার বাবার মোবাইলে ফোন করে ডেকে আনেন। সকাল ৬টার দিকে বুথে গেলে লিটন তাকে ভেতরে একটি ছোট কক্ষে বসিয়ে রাখেন এবং জানান যে, নতুন চাকরির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসে তার সাক্ষাৎকার নেবেন।

ভিকটিমের বাবা দুইবার মেয়ে চাকরির বিষয়ে খোঁজ নিলে লিটন জানান, চিন্তার কিছু নেই, সব ঠিক আছে। তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেব। এরপর আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে লিটন কক্ষে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। বাড়ি ফেরার পথে মেয়ে তার বাবাকে ঘটনাটি জানায়।

ঘটনার বিষয়ে ফাস্ট সলিউশন লিমিটেডের সুপারভাইজার মো. হানিফের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল বারিক জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্ত লিটন পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। দ্রুতই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরো জানান, ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সম্পন্ন করা হয়েছে।

ঢাকা/রফিক/টিপু  

সম্পর্কিত নিবন্ধ