সেই টিপ-কাণ্ডের ঘটনায় লতা সমাদ্দারসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা
Published: 17th, April 2025 GMT
তিন বছর আগের সেই টিপ–কাণ্ডের ঘটনায় তেজগাঁও কলেজের শিক্ষক লতা সমাদ্দারসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হয়েছে। ওই ঘটনার পর বরখাস্ত হওয়া ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কনস্টেবল নাজমুল তারেক বাদী হয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এ মামলা করেন।
আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিএমএম আদালতের বেঞ্চ সহকারী তানভীর খান।
আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মামলায় লতা সমাদ্দারসহ বেশ কয়েকজন অভিনেতা–অভিনেত্রীর নাম রয়েছে। তাঁদের মধ্যে আছেন সুবর্ণা মুস্তাফা, সায়মন সাদিক, আনিসুর রহমান মিলন ও জ্যোতিকা জ্যোতি।
নাজমুল তারেক মামলায় উল্লেখ করেন, টিপ পরার ঘটনায় তাঁকে সমাজের কাছে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর ছবি ও বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে। এর মাধ্যমে পেশাগত ও সমাজজীবনে তিনি মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
আরও পড়ুন‘টিপ পরছোস কেন’ বলেই বাজে গালি দেন পুলিশের পোশাক পরা ব্যক্তি০২ এপ্রিল ২০২২২০২২ সালের এপ্রিলে রাজধানীর ফার্মগেটে নাজমুল তারেক টিপ পরা নিয়ে লতা সমাদ্দারকে হেনস্তা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। লতা সমাদ্দারের অভিযোগের পর নাজমুল তারেককে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর তিনি চাকরিচ্যুত হন। চাকরিচ্যুতির আদেশ চ্যালেঞ্জ করে নাজমুল তারেক প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। একই সঙ্গে চাকরি ফেরত চেয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে আবেদনও করেন তিনি।
টিপ–কাণ্ডের ঘটনায় চাকরি হারানোর পর নাজমুল তারেক নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তিনি বলেন, ঘটনায় কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তিনি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
আরও পড়ুনটিপ পরা নিয়ে নারীকে হেনস্তায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য বরখাস্ত০৪ এপ্রিল ২০২২.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নাসির-তামিমার মামলার শুনানি বিব্রত আদালত, বদলির আদেশ
অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার শুনানিতে বিব্রত বোধ করেছেন আদালত। মামলাটি অন্য আদালতে বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান এ আদেশ দেন।
সোমবার এ মামলায় নাসির হোসেন এবং তামিমা সুলতানার আত্মপক্ষ শুনানির দিন ধার্য ছিল। নাসির হোসেন এবং তামিমা সুলতানা আদালতে হাজির হন।
তাদের পক্ষে অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান দুলু আদালতে দুটি আবেদন করেন। এর মধ্যে বাদীপক্ষের আইনজীবী ইসরাত হাসানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে একটি আবেদন করা হয়। কারণ হিসেবে আজিজুর রহমান দুলু বলেন, “এ মামলার বিচার চলছে। এ অবস্থায় বাদীপক্ষের আইনজীবী গত ১৬ এপ্রিল মিডিয়াতে বলেন, নাসির হোসেন ব্যাভিচার করে তামিমাকে প্রলুব্ধ করে নিয়ে গেছেন। বিচার শেষে আদালত নির্ধারণ করবেন, নাসির তামিমাকে প্রলুব্ধ করে নিয়ে গেছেন কি না এবং ব্যাভিচার করেছেন কি না।”
একই সঙ্গে আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মামলার পুরো অভিযোগ না শুনিয়ে সারসংক্ষেপ পড়ে শোনানোর আবেদন করেন নাসির ও তামিমার আইনজীবী।
এদিকে, বাদীপক্ষের আইনজীবী আদালতে অভিযোগ করেন, আসামিপক্ষের আইনজীবী আগে বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেছেন। আইন অনুযায়ী তিনি এখন আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করতে পারেন না।
দুই পক্ষের শুনানি শেষে আদালত বলেন, উভয় পক্ষেরই আবেদন দেওয়ার অধিকার আছে। এটা বিজি কোর্ট। একটা মামলার শুনানি করতে যে ধৈর্য দরকার, এত সময় এই আদালতের নেই। এতে অন্য মামলায় ইফেক্ট পড়ে। আমি বিব্রত বোধ করে মামলাটা অন্য কোর্টে পাঠিয়ে দিই। এতে আপনারা কি নাখোশ হবেন?
তখন আইনজীবীরা জানান, এতে তাদের আপত্তি নেই। তখন আদালত বলেন, মামলাটা বদলি করে সিএমএম বরাবর পাঠিয়ে দিই। সিএমএম মামলাটি একটা কোর্টে পাঠিয়ে দেবেন।
এর আগে গত ১৬ এপ্রিল এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। মামলাটিতে ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।
২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তামিমা সুলতানা তাম্মির স্বামী রাকিব হাসান বাদী হয়ে আদালতে এ মামলা করেন। ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক (নিরস্ত্র) শেখ মো. মিজানুর রহমান তিন জনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। ২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারি আদালত নাসির-তামিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। তবে, এ মামলার অপর আসামি তামিমার মা সুমি আক্তারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
ঢাকা/এম/রফিক