রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় জুলাই আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদ, জেন-জি ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে প্রশ্ন এসেছে। এ ছাড়া একাধিক প্রশ্নে ভুল ও সঠিক উত্তর নেই, এমন প্রশ্নও করা হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, ত্রুটিপূর্ণ প্রশ্নগুলোর ক্ষেত্রে সব পরীক্ষার্থী পূর্ণ নম্বর সুবিধা পাবেন।

আজ শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ‘এ’ ইউনিটের প্রথম শিফটের ভর্তি পরীক্ষায় এমন প্রশ্ন করা হয়েছে। ইউনিটটির দ্বিতীয় শিফটের ভর্তি পরীক্ষা বেলা আড়াইটা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

ভর্তি পরীক্ষার সাধারণ জ্ঞান অংশে প্রশ্ন করা হয়েছে, ‘শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে অঙ্কিত শিল্পকর্ম ‘উন্নত মম শির’-এর শিল্পী কে?’ উত্তর হিসেবে চারটি নাম ছিলÑ‘বীরেন সোম’, ‘কৌশিক সরকার’, ‘শহীদ কবির’, ‘চুনিলাল দেওয়ান’। উল্লেখ্য, আবু সাঈদের স্মরণে নির্মিত শিল্পকর্ম ‘উন্নত মম শির’ অঙ্কন করেছেন শিল্পী শহীদ কবির।

সাধারণ জ্ঞান অংশের আরেকটি প্রশ্নে এসেছে, ‘কোন সময়কালকে জেনারেশন-জি (জেন-জি)-এর ব্যাপ্তি ধরা হয়?’ উত্তর হিসেবে ছিলÑ ‘১৯৬০-১৯৮০’, ‘১৯৯৭-২০১২’, ‘২০০১-২০২০’ ‘২০১০-২০২৪’।

এ ছাড়া বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকান নিয়ে দুটি প্রশ্ন এসেছে। সাধারণ জ্ঞান অংশে প্রশ্ন করা হয়েছে, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয় কত তারিখে?’ এ ছাড়া আরেকটি প্রশ্নে বলা হয়েছে, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কতটি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে?’

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বাতিল এড়াতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করণীয় ও সতর্কতা৪ ঘণ্টা আগেএকাধিক ত্রুটিপূর্ণ প্রশ্ন

এবারের ‘এ’ ইউনিটের প্রথম শিফটের ভর্তি পরীক্ষায় কয়েকটি ত্রুটিপূর্ণ প্রশ্ন পাওয়া গেছে। সাধারণ জ্ঞান অংশে প্রশ্ন করা হয়েছে, ‘MNA কোন দেশের বার্তা সংস্থা?’ উত্তর হিসেবে চারটি অপশন ছিলÑ ‘নেপাল’, ‘মায়ানমার’, ‘ভুটান’, ‘মালদ্বীপ’। উল্লেখ্য, এমএনএ হচ্ছে মিডল্যান্ড নিউজ অ্যাসোসিয়েশন (এমএনএ মিডিয়া), যা ইংল্যান্ডভিত্তিক একটি সংবাদপত্র প্রকাশনা সংস্থা। এটি ১৮৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে বার্তা সংস্থার স্থলে বিমান সংস্থা হলে উত্তর হতো মিয়ানমার। এই অপশন উত্তরপত্রে ছিল। সে হিসেবে এমএনএর পূর্ণরূপ- ‘মিয়ানমার ন্যাশনাল এয়ারলাইনস’।

বাংলা অংশে একটি প্রশ্নে ভুল বানান দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন করা হয়েছে, ‘অমোঘ-মহাপ্রাণ ধ্বনিগুচ্ছ হলো-’। উল্লেখ্য, বাংলা বর্ণমালায় ‘অমোঘ’ শব্দের কোনো ধ্বনিগুচ্ছ নেই। এটি হবে অঘোষ।

আরও পড়ুনকুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন, সামান্য ত্রুটির তাৎক্ষণিক সমাধান ৮ মিনিট আগে

এ ছাড়া আরেকটি প্রশ্ন করা হয়েছে ‘দিলদরিয়া কোন সমাস?’ সঠিক উত্তর রূপক কর্মধারয় সমাস তবে উত্তরের অপশনগুলোতে তা ছিল না। একই অংশে আরেকটি প্রশ্ন করা হয়েছে- ‘আন্না শব্দটির সন্ধি বিচ্ছেদ কোনটি?’ শব্দটির সঠিক সন্ধিবিচ্ছেদ হলো—আর+না। এই উত্তরও প্রদত্ত চারটি অপশনে পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন ও ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ বেলাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রশ্নপত্রে কিছু ভুল আছে বলে শুনেছি। তবে সেগুলো এখনো দেখিনি। তবে এতে শিক্ষার্থীদের কোনো ক্ষতি হবে না। যেসব প্রশ্নে ভুল আছে, সেগুলোর পূর্ণ নম্বর সুবিধা সব শিক্ষার্থী পাবেন। এটি মূলত প্রিন্টিংজনিত সমস্যার কারণে হয়েছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ক ষ য় ট র ভর ত ইউন ট র সরক র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে

সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।

পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।

অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ  ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।

একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের  প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। 

অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে,  মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে  ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।

বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খেলাপি ঋণ ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে
  • সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
  • সংশোধিত সাইবার অধ্যাদেশও আন্তর্জাতিক মানের হয়নি
  • জার্মানির ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা মূল্যে পড়াশোনা, জেনে নিন সব তথ্য
  • ২০২৪ সালে মেটার কাছে ৩৭৭১ অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়েছে সরকার
  • কয়েক দশকের ছায়াযুদ্ধ থেকে এবার প্রকাশ্য সংঘাতে ইরান-ইসরায়েল
  • তিন চ্যাম্পিয়ন দলসহ যেসব তারকাকে দেখা যাবে না ক্লাব বিশ্বকাপে
  • ৫ বছরে ঋণের স্থিতি বাড়বে ৫৩.৭৭ শতাংশ: অর্থবিভাগ