শ্রমিকের আত্মহত্যা: ২ কর্মকর্তাকে অব্যাহতি, পরিবারকে সহায়তা
Published: 19th, April 2025 GMT
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় মনট্রিমস কারখানায় শ্রমিকের আত্মহত্যার ঘটনায় পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে দুই কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
শনিবার সকালে (১৯ এপ্রিল) কারখানার সামনে অব্যাহতির নোটিশ ও শোকাহত ব্যানার সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কারখানায় যথারীতি উৎপাদন কার্যক্রম চালু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) মধ্যরাতে ওই কারখানার দুই জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ফেসবুকে স্ট্যাস্টাস দিয়ে কারখানায় মো.
আরো পড়ুন:
খুলনায় ৩ ঘণ্টা বন্ধ ছিল বাস চলাচল
মধ্যপাড়া পাথর খনির ভূগর্ভে শ্রমিকের মৃত্যু
মারা যাওয়া মো. ইদ্রিস আলী (২৩) উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় সপরিবার ভাড়া বাসায় থেকে মনট্রিমস্ লিমিটেড কারখানার কাজ করতেন।
কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকরা জানায়, শ্রমিক ইদ্রিস আলী গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে তার ফেসবুক আইডিতে কারখানার অনিয়মের অভিযোগ ও কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক (প্লানিং) কামরুল ইসলাম ও উপ ব্যবস্থাপক (কার্টন সেকশন) হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। তিনি ফেসবুকে স্ট্যাস্টাস দেয়ার পর কেমিকেল জাতীয় কিছু খেয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ওই দুই কর্মকর্তাকে রাতেই চাকরি থেকে অব্যাহিত দেয়। এছাড়া সকালে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে নেটিশ সাঁটিয়ে দেয়। তাতে লেখা আছে, ‘‘আমাদের সহকর্মী মো. ইদ্রিস আলীর অকাল মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।’’
এছাড়া আরেকটি অফিস আদেশ দিয়েছেন। তাতে লেখা আছে, ‘‘সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত তদন্তের স্বার্থে কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক (প্লানিং) কামরুল ইসলাম ও উপ ব্যবস্থাপক (কার্টন সেকশন) হারুন অর রশিদকে চাকরি হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এদিকে শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বন্ধ থাকার পর আজ শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল থেকে যথারীতি কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকরা শতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করছেন।’’
ওই কারখানা শ্রমিক লাবিব হোসেন বলেন, ‘‘ইদ্রিসের মৃত্যুতে আমরা সবাই শোকাহত। ইতোমধ্যে কারখানা কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। তার পরিবারকেও আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।’’
কারখানা কর্তৃপক্ষ একটি লিখিত নোটিশে জানান, ইদ্রিসের পরিবারের সঙ্গে প্রাথমিক কথোপকথনে, তারা জানতে পেরেছেন, যে তিনি ব্যক্তিগত সমস্যায় ভুগছিলেন যা মানসিক যন্ত্রণার কারণ ছিল। কর্তৃপক্ষ তার পরিবারকে ইতোমধ্যে ৪ লাখ টাকা দিয়েছে। তার পরিবারের যোগ্য সদস্য, বিশেষ করে তার স্ত্রী ইচ্ছুক এবং সক্ষম হন, তাহলে উপযুক্ত চাকরি দেওয়া হবে।
মনট্রিমস্ লিমিটেড কারখানার মহাব্যবস্থাপক (জিএম) গোলাম সারওয়ার বলেন, ওই দুই কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে কারখানা খুলে দেয়া হয়েছে এবং শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছে। তার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আবু তালেব জানান, নিরাপত্তার স্বার্থে কারখানা এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়নি। শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছেন।
ঢাকা/রেজাউল/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত ক ত র পর ব র অব য হ
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড়ে বিবাহবিচ্ছেদের চার দিনের মাথায় লাউখেত থেকে নারীর লাশ উদ্ধার
পঞ্চগড়ে স্বামীর মৃত্যুর দুই বছর পর সন্তানদের রেখে গোপনে বিয়ে করে ঘর ছেড়েছিলেন এক নারী। দ্বিতীয় বিয়ের প্রায় এক মাস পর বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাঁদের। এ ঘটনার চার দিনের মাথায় বাড়ির পাশের লাউখেত থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ সোমবার দুপুরে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের ধামোর মধ্যপাড়া এলাকার একটি লাউখেত থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁর নাম তানজিনা আক্তার (৩৫)। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তানজিনার দ্বিতীয় স্বামী মিনাল হোসেনের বাবা দিলু হোসেনকে (৫৫) হেফাজতে নিয়েছে আটোয়ারী থানার পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, তানজিনা আক্তারের প্রথম স্বামী মজিবর রহমান প্রায় দুই বছর আগে মারা যান। তাঁদের দুটি ছেলে আছে। এর মধ্যে প্রায় এক মাস আগে স্থানীয় যুবক মিনাল হোসেনকে (২৭) গোপনে বিয়ে করে পার্শ্ববর্তী মির্জাপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন তাঁরা। এর পর থেকেই মিনালকে ছেড়ে দিতে তানজিনার ওপর চাপ দিতে থাকে মিনালের পরিবার। গত ৩০ অক্টোবর তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এর পর থেকেই মিনালকে এলাকায় দেখা যায়নি।
পুলিশ জানায়, আজ সকালে ধামোর-মধ্যপাড়া এলাকার একটি লাউখেতে কয়েকজন লাউ তুলতে গিয়ে এক নারীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দাদের জানান। এ সময় স্বজনেরা সেখানে গিয়ে লাশটি তানজিনার বলে শনাক্ত করেন। খবর পেয়ে বারঘাটি পুলিশ তদন্তকেন্দ্র ও আটোয়ারী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। প্রাথমিক সুরতহাল শেষে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম সরকার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক সুরতহালে ওই নারীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর মৃত্যুর কারণ জানতে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে থানায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।