কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ১০ শতক জায়গা দখল করে মহানগর আওয়ামী লীগের অফিস করার অভিযোগ উঠেছে। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ২০১৭ সালে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সফিউল আহমেদ বাবুলকে হাত করে জায়গাটি হাতিয়ে নিয়ে ৯ তলা ভবন নির্মাণ করেন। সেসময় মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন বাবুল।

শনিবার কুমিল্লা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন ন্যাশনাল ফ্রিডম ফাইটার্স (এফএফ) ফাউন্ডেশনের নেতারা। জায়গাটি ফিরে পাওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তারা।

লিখিত বক্তব্য দেন সংগঠনটির কুমিল্লা শাখার আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলী। তবে কমান্ডার সফিউল আহমেদ বাবুল বলেন, সাবেক এমপি বাহার জমির দলিল দিতে বাধ্য করেছিলেন, এই দলিলের বৈধতা নেই।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০১৭ সালের ২৯ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নামে বরাদ্দ পাওয়া জায়গাটি অনিয়মতান্ত্রিক উপায়ে কমান্ডার সফিউল আহমেদ বাবুলের কাছ থেকে ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকায় রেজিস্ট্রি দলিল করে নেন সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। জায়গাটি বিক্রির টাকা এনসিসি ব্যাংক কুমিল্লা শাখায় তাঁর (সফিউল আহমেদ বাবুল) ব্যক্তিগত হিসাবে জমা হয়। এ ঘটনায় ২০২৩ সালে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করা হয়।

মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, সাবেক এমপি বাহার ও সফিউল আহমেদ বাবুল যোগসাজশ করে মুক্তিযোদ্ধাদের জায়গাটি হাতিয়ে নিয়েছেন। এ বিষয়ে গত ১৩ এপ্রিল অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এর আগে ২০২২ সালের ২৩ জানুয়ারি কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কাছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয় ভবন ভেঙে বিক্রির প্রসঙ্গে মুক্তিযোদ্ধারা একটি অভিযোগ দেন, কিন্তু বাহারের প্রভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এফএফ ফাউন্ডেশনের সদস্য অধ্যাপক বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর হারুনুর রশিদ, মুকবুল আহমদ, মো.

হানিফসহ বিভিন্ন এলাকার অন্তত ২০ মুক্তিযোদ্ধা।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে কুমিল্লা সদর আসনের সাবেক এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার আত্মগোপনে থাকায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। 

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাবেক কমান্ডার সফিউল আহমেদ বাবুল। সমকালকে তিনি বলেন, ‘জায়গাটি বিক্রি ও দলিল দেওয়ার আইনগত ক্ষমতা ছিল না আমার। এ জমির মালিক কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। জেলা পর্যায় থেকে এ দলিল দেওয়া যায় না।’ তাঁর দাবি, সাবেক এমপি বাহার হুমকি দিয়ে তাঁর কাছ থেকে দানপত্র দলিল নিয়ে ওই জায়গায় মহানগর আওয়ামী লীগের অফিসের নামে ভবন করেন। আইনগতভাবে জায়গাটি মুক্তিযোদ্ধাদেরই রয়েছে। জায়গা বিক্রির অভিযোগ সঠিক নয়।

২০২১ সালের ২১ অক্টোবর গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে নতুন মহানগর আওয়ামী লীগের অফিস হিসেবে ভবনটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন ভবনটিতে হামলা ভাঙচুর ও লুট চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ব ক এমপ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ভুয়া ফুটবল দল গড়ে জাপানে আদম পাচার, পাকিস্তানে দালাল গ্রেপ্তার

পাকিস্তানে ফুটবল এজেন্ট পরিচয়ে মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ)। ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে অবৈধ অভিবাসীদের ফুটবল খেলোয়াড় সাজিয়ে জাপান পাঠাতেন ওয়াকাস আলী নামের ওই ব্যক্তি। তিনি শিয়ালকোটের পাসরুর শহরের বাসিন্দা। ১৫ সেপ্টেম্বর তাঁকে আটক করেছে এফআইএর গুজরানওয়ালা জোন।

এফআইএ এর এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, ওয়াকাস আলী ১৭ জন অভিবাসীর সঙ্গে যোগসাজশ করে বোয়াভিস্তা ফুটবল ক্লাবের আমন্ত্রণপত্র ব্যবহার করে জাপানের ১৫ দিনের ভিসা সংগ্রহ করেন।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ‘ডন’ এর খবরে বলা হয়, সেই সিনিয়র কর্মকর্তা দাবি করেন, ওয়াকাস আলী পাকিস্তান ফুটবল ফেডারেশনের (পিএফএফ) ভুয়া রেজিস্ট্রেশন, চিঠি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নকল অনাপত্তিপত্র ব্যবহার করেন।

আরও পড়ুনকাশির সিরাপ খেয়ে নিষিদ্ধ বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন এখন ফেরার অপেক্ষায়৪ ঘণ্টা আগে

সিনিয়র কর্মকর্তার ভাষ্য, প্রধান সন্দেহভাজন ওয়াকাস ‘গোল্ডেন ফুটবল ট্রায়াল’ নামে একটি ভুয়া ক্লাব গড়ে তোলেন এবং অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকের কাছ থেকে তিনি ৪০ থেকে ৪৫ লাখ রুপি নিয়েছেন। ওই ব্যক্তিরা ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি জাপানে গিয়ে আর পাকিস্তানে ফেরেননি। এফআই-এর গুজরানওয়ালা জোনের পরিচালক মুহাম্মদ বিন আশরাফ ডনকে বলেন, সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।

তদন্তে জানা গেছে, ওয়াকাস আলী একই ধরনের আরেকটি প্রতারণার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০২৫ সালের ১৫ জুন তিনি জাপানে ২২ সদস্যের একটি ভুয়া ফুটবল দল পাঠানোর চেষ্টা করেছিলেন। তবে জাপানের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ তাঁদের বিমানবন্দর থেকেই ফেরত পাঠায়। এরপর এফআইএ তদন্ত শুরু করে এবং ওয়াকাসকে গ্রেপ্তার করে মামলা রুজু করে।

আরও পড়ুনরেফারিকে মারধর, রাজশাহীকে জরিমানা, ৫ ফুটবলার ৪ ম্যাচ নিষিদ্ধ১৯ ঘণ্টা আগে

এফআইএ অফিশিয়ালদের বরাত দিয়ে গালফ নিউজ জানিয়েছে, জাপানের বিমানবন্দর থেকে ফেরত আসা সেই ২২ জনের সবাই ফুটবল কিট পরে নিজেদের পাকিস্তান ফুটবল ফেডারেশনের (পিএফএফ) খেলোয়াড় দাবি করেছিলেন এবং সঙ্গে ছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাল অনাপত্তিপত্র।

তবে জাপানের বিমানবন্দরে জিজ্ঞাসাবাদের সময় প্রতারণা ধরা পড়লে তাঁদের ফেরত পাঠায় অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। যদিও প্রশ্ন থেকে গেছে, এসব ‘ভুয়া’ খেলোয়াড় কীভাবে পাকিস্তানের বিমানবন্দর পেরোতে সক্ষম হলো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভুয়া ফুটবল দল গড়ে জাপানে আদম পাচার, পাকিস্তানে দালাল গ্রেপ্তার