সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটার প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) এর মধ্যে নতুন কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান বা প্রকল্প স্থাপন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। এ বিষয়ে দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করবে পরিবেশ মন্ত্রণালয়।

সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সভাপতিত্বে জাতীয় পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন কমিটির নির্বাহী কমিটির ১৬তম সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

সভায় সুন্দরবনের পরিবেশগত সুরক্ষায় ২০১৭ সালের জাতীয় পরিবেশ কমিটির ৩.

৪.৪ নম্বর সিদ্ধান্ত এবং ২০২১ সালের নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়েছে। নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞদের দ্বারা সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটার ইসিএ এলাকার মধ্যে স্থাপিত শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহের পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ করা হবে। আদালতের আদেশ থাকার কারণে প্রভাব নিরূপণের পর স্থাপিত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।

এছাড়াও, সভায় জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট বিধিমালা সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশোধনের পর সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা ও এনজিওগুলো যৌথভাবে প্রকল্প প্রস্তাব দিতে পারবে। শব্দদূষণ রোধে পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণে সকল মন্ত্রণালয় থেকে মতামত নেওয়া হবে।

সভায় পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের এনফোর্সমেন্ট বাজেটে অতিরিক্ত বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হবে। বন অধিদপ্তরের কর্মচারীদের ঝুঁকিভাতা চালু ও বৃদ্ধির প্রস্তাবও পাঠানো হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ভবন নির্মাণে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ ব্লক ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। এ বিষয়ে মে মাসে সচিব পর্যায়ে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক ই আজম বীরপ্রতীক এবং কৃষি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে সচিব ফারজানা মমতাজ; বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান; স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী; গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম-সহ কমিটির সদস্য হিসেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে গত সভার সিদ্ধান্ত ও সভার কার্যপত্র উপস্থাপন করেন কমিটির সদস্য সচিব ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) ড. ফাহমিদা খানম।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ব শ স ন দরবন স ন দরবন র পর ব শ কম ট র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বহর নিয়ে সাবেক যুবদল নেতার সুন্দরবন ভ্রমণ

জীব ও প্রাণ-বৈচিত্র্য রক্ষার অংশ হিসেবে সুন্দরবনকে বিশ্রাম দিতে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা চলছে। ১ জুন থেকে শুরু হওয়া নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। এই সময়ে বনজীবী থেকে শুরু করে পর্যটক, কেউই সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন না। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সুন্দরবন ঘুরেছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন। তাঁর সফরসঙ্গী ছিলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা যুবদল ও মৎস্যজীবী দলের অন্তত ৩০ নেতাকর্মী।

গত শুক্রবার তারা ভ্রমণে যান। সুন্দরবনের কলাগাছিয়া টহল ফাঁড়িতে অবস্থানকালে নিজেদের ছবি রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করার পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সুন্দরবনে প্রবেশ নিয়ে জানতে চাইলে যুবদলের সাবেক নেতা আমিনুর রহমান জানান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক উপসচিব সুন্দরবনে যাওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। এডিসি পদমর্যাদার একজনের মাধ্যমে বন বিভাগের কাছ থেকে ১০ জনের অনুমতি মেলে। ওই দলে তিনি যুক্ত হওয়ার পর স্থানীয় কিছু কর্মী-সমর্থক তাঁর সঙ্গে ট্রলারে উঠে পড়েন। এ সময় তাদের আর নামিয়ে দেওয়া যায়নি। 

উপসচিব বা তাঁর জন্য নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সুন্দরবনে যাওয়া উচিত ছিল কিনা– জানতে চাইলে আমিনুর বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা চলার তথ্য আমাদের জানানো হয়নি।’ কথা বলার জন্য ওই উপসচিবের নাম ও যোগাযোগ নম্বর চাইলে তিনি দেননি।

এ বিষয়ে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের জিয়াউর রহমান বলেন, এক উপসচিবের একান্ত সচিব (পিএস) পরিচয়ে ১০ জনের জন্য সুন্দরবন ভ্রমণের অনুমতি চাওয়া হয়। অনেকটা ‘অনুরোধে ঢেঁকি গেলা’র মতো করে তাদের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে একই সঙ্গে কয়েক রাজনৈতিক ব্যক্তির সুন্দরবনে যাওয়ার বিষয়টি তারা জানতে পারেন। ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের এমন আবদারে তারা অসহায় হয়ে পড়েন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বহর নিয়ে সাবেক যুবদল নেতার সুন্দরবন ভ্রমণ