সেদিন যেভাবে আমরা সবাই ‘ক্লান্তিযাপন’ করলাম
Published: 21st, April 2025 GMT
জাপানি একটি কবিতায় পড়েছিলাম, ‘বল দেখি কোথা যাই/ কোথা গেলে শান্তি পাই?’ বাংলামোটরের বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবনের সামনে গিয়ে দাঁড়ালেই পঙ্ক্তি দুটি মনে পড়ে। কবি ও কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক একটি লেখায় লিখেছেন, ‘এই পৃথিবীতে একটা স্থান ছিল সবচেয়ে করুণ সুন্দর, তা হলো বাংলামোটরের বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের আগের ভবনটি। গাছগাছালিতে ঢাকা। ছায়াময়। মায়াময়। গাছের তলা দিয়ে ইটবিছানো বাঁকা পথ বেয়ে এগোলে লাল ইটের একটা দোতলা ভবন। তার আঙিনায় কত পুষ্পবিহঙ্গবৃক্ষ পুরাণ রচিত হয়েছে। দোতলায় লাইব্রেরি। নিচতলায় হলঘর। ডান দিকে ভিডিও লাইব্রেরি ইত্যাদি।’ কেন্দ্রের সামনে গেলে আমারও একই অনুভূতি হয়। হৃদয় শীতল হয়ে আসে, শান্তি বোধ হয়। জানি না, ভবনের সামনের নানা ফুলের গাছ, অকৃত্রিম নান্দনিকতা না বর্তমানে ফুটে থাকা অশোক ফুলের সৌন্দর্যের কারণে এমনটা ঘটে; না বই ভালোবাসি বলে; না আছে অন্য কোনো কারণ, যা ঠাওর করে উঠতে পারি না!
প্রথম যেদিন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে গিয়েছিলাম, একটিমাত্র বাসনা ছিল মনে, আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে স্যারকে সামনাসামনি দেখব। সুযোগ হলে দুটো কথা শুনব। সেদিন সুযোগ না মিললেও আলোর ইশকুলের বই পড়া (পাঠচক্র) কর্মসূচিতে নির্বাচিত হওয়ায় সামনাসামনি স্যারের কথা শোনার এবং স্যারের সামনে বলার সুযোগ পেয়েছি। কীভাবে? সে গল্প অন্যদিনের জন্য থাক। বরং বলার টুকু আজ বলি।
বাংলা নতুন বছরকে (১৪৩২) বরণ করে নেওয়ার জন্য বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ‘বর্ষবরণ’ অনুষ্ঠান হবে। আলোর ইশকুলসহ কেন্দ্রের নানা কর্মসূচির শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে থাকবে সাংস্কৃতিক পর্ব। সুমন ভাই মানে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের যুগ্ম পরিচালক (প্রোগ্রাম) মেসবাহ সুমন বললেন, ‘পাঠচক্র থেকেও অংশগ্রহণ করতে হবে। আপনাদের জন্য দশ মিনিট সময় বরাদ্দ হয়েছে।’ কী করব আমরা, কী করা যায় প্রশ্ন উঠল? অনেকেই নিরুত্তর, দু–একজন বললেন দলীয় সংগীত করা যেতে পারে। আমি কোনো চিন্তাভাবনা না করেই বললাম, বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত কয়েকটি চরিত্র নিয়ে একটা নাটক করা যেতে পারে। ‘স্ক্রিপ্ট কি রেডি আছে, স্ক্রিপ্ট কে করবে?’ জিজ্ঞেস করলেন সুমন ভাই। কখনো স্ক্রিপ্ট লিখিনি আমি। লেখালেখির অভিজ্ঞতা দিয়ে কি পারব? আত্মবিশ্বাসে হৃদয় ভরে উঠল। স্ক্রিপ্ট লেখার দায়িত্ব নিলাম। শুরুতে আগ্রহী কয়েকজন সভ্য মিলে অনলাইনে বৈঠক হলো। আইডিয়া খোলাসা করে বললাম। ‘লিখে ফেললে ভালো হয়। বুঝতে সুবিধা হবে।’ বললেন অনেকে। ল্যাপটপের সামনে বসে এক বসায় লিখে ফেললাম ‘ক্লান্তিযাপন’।
‘ক্লান্তিযাপন’ এর দৃশ্য.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র স মন
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ, চালক আটক
ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক কলেজছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কে রোববার রাতে যাত্রীবাহী বাসে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে স্থানীয় জনতা সড়কের তিনতালাব পুকুর পাড় নামক স্থানে বাসটি আটক করে এবং বাসের ড্রাইভারকে আটক করে সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে। এসময় বাসের হেলপার পালিয়ে যায়।
পরে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য ওই কলেজ ছাত্রী ও ড্রাইভারকে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
জানা যায়, ঢাকায় একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে ওই ছাত্রী। রোববার সকালে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে একটি বাসে উঠেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি যেতে বানিয়াচং যাওয়ার পথে শায়েস্থাগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে নামার কথা থাকলেও তিনি বাসের মধ্যে ঘুমিয়ে যান। ফলে বাস তাকে শায়েস্থাগঞ্জে না নামিয়ে শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টায় ওই কলেজছাত্রী একটি লোকাল বাসে উঠে। সেই বাসে কয়েকজন যাত্রী ছিল, বাসটি নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি নামক স্থানে পৌঁছালে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। এরপর ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে বাসের চালক ও হেলপার তাকে বাসে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
এ বিষয়ে ওই ছাত্রী জানায়, তিনি ঢাকায় একটি কলেজে লেখাপড়া করেন। তার পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকে তিনি ঢাকায় ঈদ করেছে। ঈদের ছুটিতে তিনি বাড়ি আসেননি এই জন্য আজকে গ্রামের বাড়িতে আসছিলেন।
বানিয়াচং থানার সেনাক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা কলেজছাত্রী ও বাস চালককে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেছি।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি দুলাল মিয়া জানান, ঘটনার পর বাস চালককে আটক করা হয়েছে এবং হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে মামলা লেখার কাজ চলছে।