বাংলাদেশের ই-কমার্স: কোথায় আছি, কোথায় যেতে চাই
Published: 22nd, April 2025 GMT
পর্ব–১
একসময় বাংলাদেশের ব্যবসা মানেই ছিল দোকানপাট আর মেলায় বিকিকিনি। কিন্তু ডিজিটাল যুগের হাতছানিতে আজ সেই বাণিজ্য এসেছে মোবাইলের পর্দায়, ল্যাপটপের ক্লিকে। ই-কমার্স এখন আর বিলাসিতা নয়, এটি মানুষের নিত্যব্যবহার্য। দেশের তরুণ উদ্যোক্তারা এই পরিবর্তনের প্রধান চালিকা শক্তি। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এত দূর এসেও আমরা কি যথেষ্ট প্রস্তুত? আমাদের বর্তমান অবস্থান কোথায়, আর সামনে যাওয়ার পথ কী?
বাংলাদেশে ই-কমার্সের অগ্রযাত্রা
বাংলাদেশে ই-কমার্সের সূচনা হয় মূলত ২০০৯-১০ সাল থেকে। প্রথম দিকে কিছু ওয়েবসাইট–নির্ভর ব্যবসা শুরু হলেও ফেসবুকের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম–নির্ভর ক্ষুদ্র ব্যবসার জোয়ার আসে। বর্তমানে প্রায় ২ লাখের বেশি ই-কমার্স উদ্যোগ সক্রিয়, যার মধ্যে ৬০ শতাংশের বেশি ফেসবুকভিত্তিক। (সূত্র: ই–ক্যাব অ্যানুয়াল রিপোর্ট ২০২৩)
মোবাইল আর্থিক সেবার ভূমিকা
ই-কমার্সের প্রসারে বিকাশ, নগদ, রকেটের মতো মোবাইল আর্থিক সেবার অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, প্রতিদিন গড়ে ৫–৬ লাখ অনলাইন লেনদেন হয়, যার অধিকাংশই ই-কমার্স সম্পর্কিত। এই প্রবাহ গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত ই-কমার্স বিস্তারের রাস্তা তৈরি করেছে।
কোভিড-১৯ এবং ই-কমার্স বিপ্লব
কোভিড-১৯ মহামারিকালে যখন মানুষ ঘরবন্দী ছিল, তখন ই-কমার্সই হয়ে ওঠে প্রধান কেনাকাটার মাধ্যম। খাদ্যপণ্য, ওষুধ, পোশাক, এমনকি গৃহস্থালিসামগ্রীর চাহিদা অনলাইনে দ্রুত বেড়ে যায়। লাইটক্যাসল পার্টনারসের গবেষণামতে, কোভিড–পূর্ব সময়ের তুলনায় ই-কমার্স লেনদেন তখন ৩০–৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
অর্জন এবং সম্ভাবনা
* কর্মসংস্থান: প্রায় ২০–২৫ লাখ মানুষ সরাসরি বা পরোক্ষভাবে ই-কমার্সের সঙ্গে যুক্ত। (ই–ক্যাব, ২০২৩)
* নারী ক্ষমতায়ন: ৫০ হাজারের বেশি নারী উদ্যোক্তা অনলাইন ব্যবসায় সক্রিয়।
* এসএমই অন্তর্ভুক্তি: প্রায় ৪০ শতাংশ ই-কমার্স উদ্যোগ এসএমই মালিকানাধীন।
* ফিনটেক বিস্তার: ৯৫ শতাংশ লেনদেন এখন ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে। (বাংলাদেশ ব্যাংক রিপোর্ট ২০২৩)
* লজিস্টিকস উন্নয়ন: পেপারফ্লাই, রেডএক্স, পাঠাও কুরিয়ার সেবা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।
মূল চ্যালেঞ্জ
* গ্রাহক আস্থা সংকট: অনিয়মিত পণ্য সরবরাহ, ভুয়া বিজ্ঞাপন ও টাকা ফেরত (রিফান্ড) জটিলতা এখনো বড় সমস্যা।
* ডিজিটাল নিরাপত্তাঝুঁকি: সাইবার নিরাপত্তার দুর্বলতার কারণে ব্যক্তিগত তথ্য চুরির ঝুঁকি রয়েছে।
* রেজিস্ট্রেশন ও করের জটিলতা: এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসায়িক লাইসেন্স ও ট্যাক্স রেজিম সহজ নয়।
* আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের বাধা: পেপ্যাল, স্ট্রাইপের মতো বৈশ্বিক লেনদেন অনুপস্থিতি।
* দক্ষ মানবসম্পদের ঘাটতি: ই-কমার্স পরিচালন, ডিজিটাল বিপণন ও ডেটা অ্যানালিটিকসে দক্ষতা প্রয়োজন।
মোহাম্মদ নূরুজ্জামান.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ই কম র স র ল নদ ন ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
২০২৬ এশিয়ান গেমসেও থাকছে ক্রিকেট
ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য সুখবর, ২০২৬ সালের এশিয়ান গেমসেও থাকছে ক্রিকেট ইভেন্ট। অলিম্পিক কাউন্সিল অব এশিয়া (ওসিএ) তাদের ৪১তম বোর্ড সভায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সোমবার অনুষ্ঠিত ওই সভাতেই নিশ্চিত করা হয়েছে বিষয়টি। ২০২৬ সালে জাপানের আইচি-নাগোয়ায় বসছে এশিয়ার সবচেয়ে বড় ক্রীড়াযজ্ঞের আসর। ১৯ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে এই আসর।
এশিয়ান গেমসে এটি হবে চতুর্থবারের মতো ক্রিকেটের উপস্থিতি। এর আগে ২০১০ সালে চীনের গুয়াংঝু ও ২০১৪ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচনে অনুষ্ঠিত আসরেও ছিল ক্রিকেট, যদিও তখন ম্যাচগুলো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি। ৮ বছর পর, ২০২৩ সালের চীনের হাংঝু এশিয়ান গেমসে আবারও ফিরেছিল ক্রিকেট। সেই আসরে ম্যাচগুলো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির মর্যাদা পায়।
২০২৩ সালের হাংঝু গেমসে পুরুষদের বিভাগে স্বর্ণ জিতে ভারত, রৌপ্য পায় আফগানিস্তান এবং ব্রোঞ্জ ঘরে তোলে বাংলাদেশ। নারীদের বিভাগেও সেরা হয় ভারত। বাংলাদেশ পায় ব্রোঞ্জ, আর শ্রীলঙ্কা পায় রৌপ্য। ওই আসরে নারী ও পুরুষ দুই বিভাগেই অংশ নিয়েছিল আরও কয়েকটি দেশ—পাকিস্তান, নেপাল, মালদ্বীপ, মঙ্গোলিয়া, হংকং, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ইন্দোনেশিয়া।
এদিকে ক্রিকেট কেবল এশিয়ান গেমসেই নয়, জায়গা করে নিয়েছে ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকেও। সেখানে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে নারী ও পুরুষ দুই বিভাগেই প্রতিযোগিতা হবে ছয়টি করে দলের। তবে অংশগ্রহণকারী দল বাছাইয়ের পদ্ধতি এখনো ঘোষণা করা হয়নি।