বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থে বিএনপি যেকোনো কাজ করতে রাজি আছে। আমরা ৩১ দফার মধ্যে বলেছি, এই দফাগুলোর বাইরে যদি কেউ ভালো প্রস্তাব দিতে পারেন, অবশ্যই তা আমরা জনগণের স্বার্থে গ্রহণ করব। আমরা বারবার বলছি, দেশের মানুষের ভালো কিছুর জন্য যদি ভালো কিছু কেউ নিয়ে আসেন, তা আমরা সাদরে গ্রহণ করব।’

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাইবান্ধা, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে বিএনপির ৩১ দফাসংক্রান্ত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপির ৩১ দফা মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের মানুষ যখন তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন, যখন আমরা বলতে পারব, এ দেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা কমবেশি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তখনই আমরা বলতে পারব, বাংলাদেশের একটু সামান্য অংশ অর্জিত হয়েছে। এখনো কিন্তু বহু পথ বাকি। বহু কিছু অর্জন করার বাকি আছে। যখন এ দেশের সন্তানদের, এ দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে পারব, নারীদের ক্ষমতার উন্নয়ন করতে পারব। তখনই আমরা বলতে পারব “টেক ব্যাক বাংলাদেশ” কিছুটা হলেও বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে।’

তারেক রহমান বলেন, ‘অনেক অদৃশ্য শত্রু, অনেক শক্তি, প্রতিপক্ষ আজ আস্তে আস্তে দৃশ্যমান হচ্ছে। আমরা যদি আমাদের ঐক্যবদ্ধ না করি, ঐক্যবদ্ধ না হই, তাহলে আমরা ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে পারব না। এই ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে না পারলে বিগত ১৫ বছরের অত্যাচার, নির্যাতন, কষ্ট—সবকিছু বৃথা হয়ে যাবে। কোনো অশুভ কিছু থাকলে তাকে সরিয়ে দিতে হবে।’

নেতা-কর্মীদের কাছে প্রশ্ন রেখে বিএনপির শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আপনারা কি বিশ্বাস করেন, এই ৩১ দফা যদি আমরা কমবেশি বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হই, তাহলে আমরা দেশের এবং দেশের মানুষের ভাগ্যের কিছুটা হলেও পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হবো। কীভাবে আপনারা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাবেন, তা আপনাদের পরিকল্পনা করতে হবে। এখানে প্রশ্ন এসেছে যে ভিন্ন ধর্মবর্ণের মানুষ, সবাই আমরা বাংলাদেশি। কাউকে বাদ দিয়ে নয়। সে দলের হোক, অন্য ধর্মের হোক। প্রত্যেকের পরিচয় আমরা বাংলাদেশি। তাই প্রত্যেকের কাছে আপনাদের যেতে হবে। কারণ, প্রত্যেকটি মানুষের সমর্থন আমাদের প্রয়োজন। যত বেশিসংখ্যক মানুষের সমর্থন আমরা অর্জন করতে সক্ষম হবো, তত ভালোভাবে, শক্তিশালীভাবে আমরা এই ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবো।’

আজ সকাল থেকে রংপুর বিভাগের গাইবান্ধা, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে পৃথকভাবে প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে সংশ্লিষ্ট জেলা বিএনপি। গাইবান্ধায় জেলা স্টেডিয়ামে, লালমনিরহাটে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এবং কুড়িগ্রামে শহরের আলমাস কমিউনিটি সেন্টারে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে সংশ্লিষ্ট জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। পরে তিন জেলার নেতা-কর্মীদের স্থানীয় সমস্যা সম্পর্কে নানা প্রশ্নের উত্তর দেন তারেক রহমান।

এক নেতার প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, যোগ্যতার ভিত্তিতে দলীয় পদ দেওয়া হবে। ধর্মীয় বিবেচনা করে নয়। কৃষির উন্নয়নসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বিএনপির বড় সংস্কার খাল খনন। এতে কৃষির সংস্কার হয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আগামী দিনে খাল খনন করা হবে। যাতে পানির স্রোত নিয়ে আসে। কৃষক সময়মতো পানি পায়।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, তিস্তা নিয়ে বহু রাজনীতি হয়েছে। বিএনপির উদ্যোগে উত্তরাঞ্চলে তিস্তা বাঁচাও আন্দোলন হয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।

এক নারীনেত্রীর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে নারী আসনের সংখ্যা ৫০ থেকে ১০০-তে বৃদ্ধি করা হবে। দেশে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সের অনেক মানুষ ফ্রিল্যান্সিং করছেন। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

মায়ামির স্বপ্নভঙ্গ, ইতিহাস গড়লো ভ্যানকুভার এফসি

কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের রোমাঞ্চকর সেমিফাইনালে লিওনেল মেসি ও তার দল ইন্টার মায়ামিকে উড়িয়ে দিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে নাম লিখিয়েছে কানাডার ক্লাব ভ্যানকুভার এফসি। বৃহস্পতিবার (বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টা), মায়ামির চেইস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে দর্শকদের উপহার দেওয়া হয় গোল, নাটক এবং ৩২টি ফাউলের নাটকীয় এক সন্ধ্যা।

প্রথম লেগে নিজেদের মাঠে ২-০ গোলে জয় পেয়ে আগেই সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল ভ্যানকুভার। তাই দ্বিতীয় লেগে ইন্টার মায়ামির জন্য লক্ষ্যটা ছিল বেশ কঠিন, কমপক্ষে তিন গোলের ব্যবধানে জয়। কিন্তু সেই লক্ষ্য অধরাই থেকে গেল। উল্টো ৩-১ গোলের হার সইতে হলো ডেভিড বেকহ্যামের মালিকানাধীন দলটিকে। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ ব্যবধানে উড়েই ফাইনালে উঠে যায় কানাডার ক্লাবটি।

ম্যাচের শুরুটা অবশ্য ইন্টার মায়ামির জন্য আশা জাগানিয়া ছিল। নবম মিনিটেই মেসি ও সুয়ারেজের দারুণ কম্বিনেশনের ফসল হিসেবে জর্ডি আলবা গোল করে এগিয়ে দেন দলকে। প্রথমার্ধ শেষে ১-০ গোলের লিডে এগিয়ে ছিল স্বাগতিকরা।

আরো পড়ুন:

দুয়োতে ম্যাচ হেরে কনফাকাফ থেকে বিদায়ের শঙ্কায় মেসিরা

২০২৬ বিশ্বকাপ খেলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানালেন মেসি

কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে শুরু থেকেই দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নিয়ে মাঠে নামে ভ্যানকুভার। ম্যাচের ৫১ মিনিটে ব্রেইন হোয়াইট গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান। এরপর মাত্র দুই মিনিটের ব্যবধানে ইন্টার মায়ামির রক্ষণভাগের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যান পেদ্রো ভিতে। এরপর ম্যাচে ফিরে আসার অনেক চেষ্টা করেও সফল হতে পারেনি মেসির দল।

৭১ মিনিটে ভ্যানকুভারের হয়ে তৃতীয় ও শেষ গোলটি করেন সেবাস্তিয়ান বারহেল্টার। যা ম্যাচের নিয়তি নির্ধারণ করে দেয়। এরপর ইন্টার মায়ামি একাধিকবার আক্রমণ করলেও প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক ও শক্ত রক্ষণদেয়াল ভাঙতে ব্যর্থ হয়।

ম্যাচটিতে দুই দলই ১৬টি করে ফাউল করে। যা মিলিয়ে মোট ফাউলের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩২। ইন্টার মায়ামি ১৭টি শট নেয়, যার মধ্যে ৬টি ছিল অন টার্গেটে এবং মাত্র একটিই জালে ঠাঁই পায়। অন্যদিকে, ভ্যানকুভারের ১০টি শটের ৬টিই লক্ষ্যে ছিল এবং এর মধ্যে তিনটি জালে জড়ায়।

এই হারের ফলে কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের ফাইনালে খেলার স্বপ্নভঙ্গ হলো মেসি-সুয়ারেজদের। আর ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালের টিকিট কাটলো ভ্যানকুভার এফসি।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ