প্রকৃতির আশীর্বাদস্বরূপ অনেক গাছপালা আমাদের জীবনে উপকার বয়ে আনে। তার মধ্যে অ্যালোভেরা যেন এক সবুজ জাদুকর, যার গুণাগুণের শেষ নেই। বহু প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদ, চীনা এবং গ্রিক চিকিৎসা শাস্ত্রে এর ব্যবহার হয়ে আসছে। সময়ের পরিক্রমায় আধুনিক বিজ্ঞানও স্বীকার করে নিয়েছে অ্যালোভেরার অগণিত স্বাস্থ্য উপকারিতা। এর পুরু পাতার ভেতরের স্বচ্ছ জেল আজ বিশ্বজুড়ে সৌন্দর্য ও চিকিৎসাক্ষেত্রে সমানভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরার সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যবহার হচ্ছে ত্বকের যত্নে। এটি ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা বজায় রাখে, রোদে পোড়া দাগ হালকা করে এবং ব্রণ ও অন্যান্য সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক। সংবেদনশীল বা জ্বালাভাবযুক্ত ত্বকে এটি তাৎক্ষণিক প্রশান্তি দেয়। এ কারণে অনেক প্রসাধন পণ্যে অ্যালোভেরা একটি অপরিহার্য উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া ক্ষতস্থান দ্রুত শুকিয়ে ফেলতে অ্যালোভেরার জেল ব্যবহার করা হয়।
চুল ও স্কাল্পের যত্নে
চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগাতে এবং মাথার ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর করতে অ্যালোভেরা দারুণ কার্যকর। এটি চুল পড়া কমায়, খুশকি দূর করে এবং চুলে প্রাকৃতিক ঝলমলে ভাব আনতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যবহারে চুল হয় মসৃণ, প্রাণবন্ত ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।
হজমে সহায়ক
অ্যালোভেরা শুধু বাহ্যিক যত্নেই নয়, বরং শরীরের ভেতরেও অসাধারণ কাজ করে। এর রস হজম শক্তি বাড়ায়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং অন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এটি শরীরের বিষাক্ত উপাদান বা টক্সিন দূর করতে কার্যকর একটি প্রাকৃতিক ডিটক্স উপাদান হিসেবেও কাজ করে।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
অ্যালোভেরায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা শরীরকে বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ই, বি-কমপ্লেক্স, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং অন্যান্য উপাদান, যা শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সক্রিয় রাখে।
সতর্কতা ও ব্যবহারবিধি
যে কোনো ভেষজ উপাদানের মতো অ্যালোভেরাও সঠিক নিয়মে এবং পরিমাণমতো ব্যবহার করা জরুরি। অতিরিক্ত গ্রহণ করলে ডায়রিয়া বা পেটের সমস্যাও হতে পারে। তাই দীর্ঘমেয়াদে অ্যালোভেরা গ্রহণের আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। v
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবহ র ত বক র উপ দ ন দ র কর
এছাড়াও পড়ুন:
ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ার পরই খেলতে রাজি হয়েছিল পাকিস্তান
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টসের আগ পর্যন্ত দারুণ নাটকীয়তায় ঘেরা ছিল পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে আইসিসি সে দাবি আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও দলের ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান পাইক্রফ্ট। এরপরই মাঠে নামতে রাজি হয় পাকিস্তান দল।
ঘটনার সূত্রপাত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। টসের সময় দুই অধিনায়কের করমর্দন হয়নি। আরও বড় বিতর্ক তৈরি হয় ম্যাচ শেষে। জয়ী ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন এড়িয়ে দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। সালমান আলী আগার নেতৃত্বে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও সূর্যকুমার যাদব, শিভাম দুবেসহ পুরো ভারতীয় দল সেই শিষ্টাচার মানেনি।
আরো পড়ুন:
আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
এমন ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান অধিনায়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করেন। পরে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায় পিসিবি। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ইচ্ছাকৃতভাবেই দুই অধিনায়কের হাত মেলানো আটকান, যা আইসিসির আচরণবিধি ও ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী।
যদিও আইসিসির ব্যাখ্যা ছিল ভিন্ন। তারা জানায়, এসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই কাজ করেছেন পাইক্রফ্ট। কিন্তু পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। এমনকি জানিয়ে দেয়, পাইক্রফ্ট দায়িত্বে থাকলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবে না তারা। এই হুমকির কারণে ম্যাচের শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।
লাহোরে রমিজ রাজা, নাজাম শেঠিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। পরে সমঝোতার পথ খোঁজা হয়। অবশেষে পাইক্রফ্ট স্বীকার করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই পরিস্থিতি এতদূর গড়ায়, এবং তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান। তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দল।
বুধবার রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের সেই শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে ভারতের সঙ্গী হয় সালমান-শাহীনরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।
ঢাকা/আমিনুল