বিএনপি-জামায়াতসহ সকলকে দেশের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: মির্জা আব্বাস
Published: 23rd, April 2025 GMT
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘আমাদের দেশটা এখন খুব খারাপ অবস্থায় আছে। দেশের জনগণের, জাতির, দলের প্রত্যেকটা নেতা-কর্মীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। যদি বাংলাদেশের জনগণকে বিভক্ত করা যায়, এদেশকে আবারও ভারতীয় আধিপত্যবাদের হাতে চলে যেতে হবে। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ থাকতেই পারে। কিন্তু, যে দলই হোক, বিএনপি-জামায়াত, এনসিপিসহ অন্যান্য সকল দলকে জাতীয় স্বার্থে, দেশের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
আজ বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে গণতন্ত্র ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্র, সংস্কার ও বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমানকে নিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমরা আজকে থেকে বিশ বছর আগে তাকে যেরকম দেখেছি বিশ বছর পরে দেখছি অনেক তফাৎ। আজকে তারেক রহমান সত্যি সত্যি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন এবং সঠিকভাবে পালন করছেন। যারা একসময় তাকে পছন্দ করতেন না, তারাও আজকে বলতে বাধ্য হচ্ছেন যে তারেক রহমানের মধ্যে ম্যাচিউরিটি এসেছে। এটা শুনতে ভালো লাগে আমাদের।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘আজকে দেশে একটা বিষয় বেশ আলোচনায় এসেছে; নির্বাচন না সংস্কার। তবে আমি বলতে চাই নির্বাচনের বিকল্প কেবল নির্বাচনই হতে পারে। অন্য কোনো কিছু হতে পারে না। নির্বাচনের বিকল্প নির্বাচন। এখন কথা বললেই বলবে যে, মির্জা আব্বাস সংস্কারের বিরুদ্ধে কথা বলে, সংস্কার চায় না। কিন্তু না, আমাদের জন্য, নির্বাচনের জন্য, দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য যে সংস্কারটুকুর প্রয়োজন আমরা সেই সংস্কারটুকু চাই-ই।’
তিনি বলেন, ‘আমি একবার বলেছিলাম যে, আপনারা যে সংস্কারের কথা বলছেন সব সংস্কারতো মানা যাবে না। সেই কথাটিকে টুইস্ট করে আমাদের বিদেশে অবস্থানর তথাকথিত সাংবাদিক এমনভাবে বলল, বিএনপি সংস্কার চায় না, মির্জা আব্বাস সংস্কার চায় না। এমন কী সালমান এফ রহমানের টাকা খেয়ে যার স্বাস্থ্য-চেহারা মোটা হয়েছে তিনি প্রায়ই ফেসবুকে এসে বলেন, কেন মির্জা আব্বাস মানবেন না? আমি বলতে চাই, তোমার যেমন বিদেশে পালিয়ে থেকে কথা বলার অধিকার আছে, আমার কী দেশে থেকে কথা বলার অধিকার নাই?’ আমি এই দেশে মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে জেলে থেকেছি সহকর্মীদের নিয়ে। পালিয়ে যাইনি। আপনারা তো পালিয়ে গিয়ে লম্বা লম্বা কথা বলতেছেন। আমি আপনাদের প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই, যারা দেশের বাইরে আছেন, ইউটিউবার যারা আছেন; ভাই আমরা রাজনীতি ছেড়ে দেব, আপনারা দেশে আসেন। আপনাদের অনেক জ্ঞান, অনেক বুদ্ধি। আপনাদের জ্ঞান বুদ্ধি আমাদের অনেক প্রয়োজন। আপনারা দয়া করে দেশে আসেন। বুদ্ধি দেন, কথা বলেন, কাজ করেন, মেনে নেব।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এনসিপির একজন বলে ফেললেন, এখন নির্বাচন করা সম্ভব না। কারণ প্রশাসনের সব জায়গায় বিএনপির লোক বসে আছেন। আরে ভাই, ১৭ বছর আওয়ামী লীগ দেশ শাসন করল, আপনি বিএনপির লোক কই পাইলেন? আমি বুঝলাম না। এই সমস্ত কথা নেহাতই বাচ্চাদের কথার মতো বলছেন।’
তিনি বলেন, ‘ইদানিং একটা গ্রুপ ফেসবুকে বলার চেষ্টা করছে যে, বিএনপি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। আরে ভাই, ১৭ বছর এদের (আওয়ামী লীগ) যন্ত্রণায় পাগল হয়ে গেছি। পরিবার-পরিজনসহ অশান্তিতে ভুগেছি। বিএনপি অনেকের পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে আওয়ামী লীগের অত্যাচারের কারণে। বরং আমি বলতে চাই আওয়ামী লীগকে যারা দেশে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। এই দেশে আওয়ামী লীগের অবস্থান থাকতে পারে না। এবং শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের সব নেতা-কর্মীসহ প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গ, তাদের সবার বিচার হতে হবে।’
সোশ্যাল মিডিয়ার একটিভিস্টদেরকে উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এদের কাজ হলো দেশের মধ্যে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে রাখা। এদের থেকে আমাদেরকে সাবধান থাকতে হবে। জাতির বিবেক এখনো অন্ধ হয়ে যায়নি। দু’একজন লোকের কথায় সব শেষ হয়ে যায়নি। শেষ হয়ে যাবে না।’
ড.
গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ওবায়দুর রহমান টিপুর সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ আপন র স ব এনপ র র জন য আম দ র রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
দখল-দূষণে বিপন্ন লক্ষ্মীপুরের খাল ও নদী উদ্ধারে অভিযান
লক্ষ্মীপুরের খাল ও নদী দখল-দূষণে বিপন্নপ্রায়। এ কারণে আসছে বর্ষায় জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ১০ দিনব্যাপী অভিযান পরিচালনার কর্মসূচি নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে জেলা শহরের মাদাম ব্রিজ এলাকায় রহমতখালী খাল পরিচ্ছনতা কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে।
পৌর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও পৌর প্রশাসক মো. জসীম উদ্দিন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামশেদ আলম রানা, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ ফারাবী প্রমুখ।
আরো পড়ুন:
পদ্মায় টর্নেডো, ভিডিও ভাইরাল
বন্ধুদের সঙ্গে পদ্মায় নেমে স্কুলছাত্র নিখোঁজ
পৌর প্রশাসক মো. জসীম উদ্দিন বলেন, আসন্ন বর্ষায় জলাবদ্ধতা থেকে সকলকে রক্ষায় এই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সবার সহযোগিতায় সফল অভিযান সম্পন্ন হলে জলাবদ্ধতার পাশাপাশি মশার উপদ্রব থেকেও পৌরবাসী রক্ষা পাবে।
এ সময় প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বলেন, খাল-নদী দখল ও দূষণরোধে একযোগে ১০ দিনব্যাপী পুরো জেলায় অভিযান চলবে। স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী কর্ম পরিকল্পনায় কাজ করা হচ্ছে। প্রথম ধাপে উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে অভিযান পরিচালনার। স্থানীয় এলাকাবাসী, তরুণ প্রজম্মসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ অভিযানে সহায়তা করার আহ্বান জানান তিনি।
অভিযানের ফলে আসন্ন বর্ষায় জলাবদ্ধতা থেকে সকলকে রক্ষা ও কৃষকের ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন জেলা প্রশাসক।
লক্ষ্মীপুরে মেঘনা, ডাকাতিয়া ও ভুলুয়া নদী এবং রহমতখালী, বীরেন্দ্রখালসহ অনেক খাল ও নদী রয়েছে। জেলায় ১১৮ বর্গকিলোমিটার নদীপথ রয়েছে। নদীপথ জেলার মোট আয়তনের ২৩ শতাংশ। এর মধ্যে ডাকাতিয়া নদীর ৫৭টি পয়েন্ট, রহমতখালী খালের অর্ধশতাধিক ও ভুলুয়া নদীর ৩৭টি পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব স্থানে পর্যায়ক্রমে অভিযান চলবে।
ঢাকা/লিটন/বকুল