সিনেমার নোংরা পলিটিকস আমার ক্যারিয়ারকে ধ্বংস করে দিয়েছে: আমিন খান
Published: 23rd, April 2025 GMT
‘বলিউডে এখন সুশান্ত সিং রাজপুতকে নিয়ে সবাই যে হাহুতাশ করছে, আমার জীবনটাও তেমন হতে পারত। চলচ্চিত্রজগতে আমিও অনেক নোংরা পলিটিকসের শিকার হয়েছি। মনোবল শক্ত ছিল, পরিবার পাশে ছিল, তাই হয়তো আত্মহত্যা করিনি। আমার মতো করে লড়ে গেছি। চলচ্চিত্রে জায়গা করে নিয়েছি।’ কথাগুলো বাংলাদেশের একসময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আমিন খানের।
একসময় শুটিংয়ে অ্যাকশন, কাট শুনে অভ্যস্ত চিত্রনায়ক আমিন খান এখন ব্যস্ত চাকরিজীবনে। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বড় দায়িত্বে আছেন। মাঝে ২০২৩ সালে মাস আগে নতুন করে আলোচনায় আসেন আরাভ খান কাণ্ডে। সে সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে সোনা ব্যবসায়ী আরাভ খানকে নিয়ে বেশ কিছু খবর। নামের মিল থাকায় অনেকে মনে করছেন, ওই আরাভ খান বাংলাদেশের চিত্রনায়ক আমিন খানের ভাই, যা নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে আমিন খানের পরিবারকে। সে সময় প্রথম আলোকে আমিন খান বলেছিলেন, ‘দুবাইয়ের আরাভ খান আমার ভাই নন। কী যে এক ঝামেলায় পড়েছি! আরাভ খান নামের আমার কোনো ভাই নেই। যে আরাভ খান মনে করে অনেকেই আমার কাছে জানতে চাচ্ছেন তিনি কি আমার ভাই, সেই আরাভ খানকে আমি চিনি না। গণমাধ্যমের খবরে জানতে পারলাম তাঁর কথা। অনেকেই ভুল করে তাঁকে আমার ভাই মনে করছেন, জানতে চাইছেন—এই ঘটনায় বিব্রত বোধ করছি। আমার ভাইয়ের নাম আশরাফুল ইসলাম। সে একটি সিনেমায় অভিনয় করেছিল। সেখানে তার নাম আরাভ থাকতে পারে। এখান থেকে কেউ কেউ মনে করছেন তিনিই আমার ভাই। এ ঘটনায় সবার ভুলটা ভাঙানো দরকার।’
আমিন খান এখন সে রকমভাবে চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে নেই। স্ত্রী স্নিগ্ধা খান, দুই ছেলে রাইয়ান খান আর মাঈন খানকে নিয়ে বর্তমানে ঢাকার উত্তরায় থাকেন। দুই ছেলে স্কুলে পড়ে। আমিন খান বললেন, ‘চলচ্চিত্রের জীবনটা খুব মিস করি। ওটাই আমাকে নতুন জন্ম দিয়েছে। নায়ক আমিন খান হয়ে বাঁচতে চাই।’
আমিন খান.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক আম ন খ ন চলচ চ ত র আম র ভ ই আর ভ খ ন
এছাড়াও পড়ুন:
প্রযুক্তি কি ডিমেনশিয়া বাড়িয়ে দিচ্ছে? ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে বিস্ময়কর তথ্য
প্রযুক্তির কল্যাণে হুটহাট বড় পরিবর্তন আসা নতুন কিছু নয়। করোনা মহামারির আগে বাসা থেকেও যে অফিস করা সম্ভব, সেটা মানতে চাইতেন না অনেকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হোম অফিস হয়েছে স্বাভাবিক। একই ঘটনা ঘটেছে ডিজিটাল দুনিয়ায়। একসময় যেকোনো তথ্য খুঁজে বের করার জন্য শরণাপন্ন হতে হতো সার্চ ইঞ্জিনের; এআই সেই উত্তর সবিস্তারে দিয়ে দিচ্ছে মুহূর্তেই। ফলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন শুধু জীবনকে সহজতর করছে না, বাঁচিয়ে দিচ্ছে সময় ও পরিশ্রমও। কিন্তু এই বেঁচে যাওয়া সময় ও পরিশ্রম মস্তিষ্কের ওপর ঠিক কীভাবে প্রভাব ফেলছে?
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস ও বেলোর ইউনিভার্সিটির এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, এত দিন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানব মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমার যে গুঞ্জন ভেসে বেড়িয়েছে, তার কোনো সত্যতা নেই। ‘নেচার হিউম্যান বিহেভিয়ার’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ নামে যে হাইপোথিসিস আছে, তার কোনো প্রমাণ নেই গবেষকদের কাছে। বরং পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষদের স্মার্টফোন, কম্পিউটার কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার তাঁদের স্বাভাবিক স্মৃতিভ্রম অনেকটা স্তিমিত করে।
ডিজিটাল ডিমেনশিয়া কী২০১২ সালে প্রথম ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ তত্ত্ব নিয়ে হাজির হন জার্মান স্নায়ুবিজ্ঞানী ও মনোবিদ ম্যানফ্রেড স্পিৎজার। মূলত যে হারে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে এবং মানুষ যান্ত্রিক পর্দার সামনে প্রতিদিনের বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছে, তাতে প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে অনেকটাই। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় তথ্যগুলোও মনে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে অনেকে। যেমন ফোন নম্বর। একসময় প্রিয়জনের ফোন নম্বর আমাদের মুখস্থ থাকত। এখন ফোন নম্বর ঠাঁই পায় মুঠোফোনের কনটাক্ট লিস্টে। ফোন নম্বর মনে রাখার চেষ্টাই করে না কেউ। আবার অনেকক্ষণ যান্ত্রিক পর্দার সামনে থাকলেও সেখান থেকে শেখার ইচ্ছা থাকে না অনেকের। চোখের সামনে যা আসছে, স্ক্রল করে চলে যাচ্ছে পরের কোনো কনটেন্টে। এতে মনোযোগ হারিয়ে যায় দ্রুত। আর প্রযুক্তির এমন অতিব্যবহার যে স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দিচ্ছে, একেই ধরা হয় ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ হিসেবে।
আরও পড়ুনডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহারের সময় ২০-২০-২০ নিয়ম মানাটা কেন জরুরি২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩গবেষণা যা বলছেপ্রায় ৪ লাখ ১১ হাজার পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষের ওপর চালানো ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যে স্মৃতিভ্রম দেখা দেয়, তার অনেকটাই হ্রাস করে প্রযুক্তির ব্যবহার। প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের ফলে স্মৃতিশক্তি কমে আসার আশঙ্কা প্রায় ৫৮ শতাংশে নেমে আসে।
স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া বরং আরও কিছু সূচকের (যেমন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিক অবস্থা) ওপর নির্ভর করে। মজার ব্যাপার হলো, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার থেকেও বেশি কার্যকর প্রযুক্তির ব্যবহার।
তবে এর সবকিছুই নির্ভর করছে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের ওপর। পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা বেশির ভাগ সময়ই অনলাইনে কাটান ইউটিউব ভিডিও অথবা ফেসবুক স্ক্রল করে। এতে তাঁদের মস্তিষ্কের ব্যবহার হয় না বললেই চলে। মস্তিষ্ক সচল রাখতে পারে এমন কনটেন্টে তাঁদের মনোযোগ সরিয়ে নিতে পারলে আনন্দ যেমন পাবেন, তেমনই ডিজিটাল দুনিয়া সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিও পালটে যাবে। এ ছাড়া অনলাইনের হাজারো গুজব ও উসকানি থেকে মুক্ত থাকবেন তাঁরা।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট
আরও পড়ুনমাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩