অনেক প্রত্যাশা নিয়ে সরকারি ভর্তুকিতে জমির ধান কাটতে কম্বাইন হারভেস্টার যন্ত্র কিনেছিলেন হবিগঞ্জের কৃষকরা। তাদের সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। উল্টো কয়েকদিন পর পর মেরামত সংস্কারে খরচ বাড়িয়ে গলার কাঁটা হয়ে উঠেছে সেগুলো। কেনার পর থেকে অধিকাংশ মেশিন বিকল হয়ে পড়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন হারভেস্টার মালিকরা। অন্যদিকে, হারভেস্টার মেশিন বিকল থাকায় সময়মতো ধান গোলায় তুলতে পারছেন না কৃষকরা।

এসব হারভেস্টার মালিকদের অভিযোগ, প্রতিকার পেতে কৃষি বিভাগের কাছে সাহায্য চাইলেও ফল মেলেনি। মেশিন মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার কথা বলে দায়সারা জবাব দিচ্ছেন তারা। এ প্রকল্পের মধ্য দিয়ে কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়ন, অগ্রগতি সাধিত হওয়ার কথা ছিল। সেটি হয়নি, বরং কৃষকরা উল্টো দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।

জানা যায়, বিগত সরকার ধান কাটা ও মাড়াই সহজ করার লক্ষ্যে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প হাতে নেয়। সরকারের ভর্তুকির সহযোগিতা নিয়ে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন বিক্রেতা কোম্পানির সঙ্গে কিস্তির মাধ্যমে টাকা পরিশোধের চুক্তিতে জেলায় ৬৩২টি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে হবিগঞ্জ সদরে ৭০, শায়েস্তাগঞ্জে ৫, মাধবপুরে ৩০, চুনারুঘাটে ৩৬, বাহুবলে ৭৯, নবীগঞ্জে ১১৬, লাখাইয়ে ৮৬, বানিয়াচংয়ে ১০৬ এবং আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ১০৪টি হারভেস্টার যন্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে। 

একাধিক উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, ওই প্রকল্পের আওতায় কেনা হারভেস্টার মেশিন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মালিকদের অনেকে। জেলায় ৬৩২টি হারভেস্টার মেশিনের মধ্যে অর্ধেক বিকল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যন্ত্রপাতি মেরামত না করায় ধান কাটার কাজে আসছে না সেগুলো। সময়মতো ধান গোলায় তুলতে না পেরে ভোগান্তিতে পড়েছেন কৃষক। এছাড়া হারভেস্টার মেশিন বিকল থাকায় লাখ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মালিকরা। হারভেস্টার মেরামতে বার বার তাগিদ দিলে দায়সারা জবাব দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন। এমনটাই দাবি স্থানীয় হারভেস্টার মালিকদের।

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ধল গ্রামের হারভেস্টার মালিক হাবিবুর রহমান মুক্তার জানান, ২০২২ সালের ২৯ জানুয়ারি তিনি ৩২ লাখ ৫০ হাজার টাকার দামের হারভেস্টার সাড়ে ৪ লাখ টাকা জমা দিয়ে সরবরাহ করেন। ২০ লাখ টাকা সরকারের ভর্তুকি দেওয়ার কথা রয়েছে। বাকি টাকা তাঁর কিস্তিতে পরিশোধ করার কথা। অথচ, বোরোর প্রথম মৌসুমে তাঁর হারভেস্টার মেশিন বিকল হয়ে পড়ে। এতে করে তিনি ধান কাটতে পারেননি। 

একই অবস্থা লাখাই উপজেলার কদম আলী গ্রামের হারভেস্টার মালিক ইউপি সদস্য ছায়েদ আলীর। তিনি জানান, ২০২১ সালে আলীম ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড হারভেস্টার মেশিন সরবরাহ করে। মৌসুমের শুরুতে বোরো জমিতে নামালে মেশিনটি বিকল হয়ে পড়ে। বিষয়টি তিনি কোম্পানি কর্তৃপক্ষকে জানালেও কেউ মেরামত করেনি।

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের আবজল মিয়া জানান, ২০২১ সালে ইয়ানমার হারভেস্টার মেশিন সরবরাহ করেন তিনি। প্রথম মৌসুম থেকে মেশিনের যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে পড়ে। মাঝে মধ্যে মেরামত করে ধান কাটলেও ব্যাপক ভোগান্তি দেখা দেয়। একই এলাকার সিজিল মিয়া বলেন, ‘২০২১ সালে হারভেস্টার মেশিন সরবরাহ করি। মৌসুমের শুরুতে ধান কাটতে পারিনি। জমিতে নামার পর প্রায় সময়ই বিকল হয়ে পড়ে। এতে কৃষকরা অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। যন্ত্রপাতির দাম থাকায় সময়মতো মেরামত করতে পারিনি।’ 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় ৬৩২টি হারভেস্টার মেশিনের মধ্যে ৫২৮টি চালু রয়েছে। যেগুলো চলতি মৌসুমে ধান কাটার কাজে ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়া হবিগঞ্জ সদরে ১৭, মাধবপুরে ২, চুনারুঘাটে ১২, বাহুবলে ২৬, নবীগঞ্জে ২২, লাখাইয়ে ৭, বানিয়াচংয়ে ৬ ও আজমিরীগঞ্জে ১২টি হারভেস্টার বিকল রয়েছে। সরবরাহের সময় মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার সেগুলো মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম শ ন ব কল উপজ ল ক ষকর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কমেছে সবজির দাম

বাজারে সবজির দাম কমলেও সাধারণ সময়ের মতো ক্রেতাদের সমাগম দেখা যায়নি। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের ছুটি কাটিয়ে এখনো রাজধানীতে সব মানুষ ফিরেনি।

শুক্রবার (১৩ জুন) রাজধানীর নিউমার্কেট, কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে অধিকাংশ সবজির দাম কমেছে। তবে মাছের দাম সামান্য বেড়েছে। এখন বাজারে বেগুন মানভেদে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, গাজর (দেশি) ৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ৭০ থেকে ৮০ টাকা, প্রতিটি পিস লাউ ৫০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০, দেশি শশা ৫০ টাকা, বরবটি ৬০, ঢেড়শ ৪০, জালি কুমড়া ৫০ টাকা পিস, মিষ্টি কুমড়া কেজি ২৫ টাকা, পটল ৪০ টাকা, কাঁকরোল ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় সামান্য বেড়েছে মাছের দাম। এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকায়।চাষের পাঙাস কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, কৈ ২২০ টাকা, শিং ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৫০০ থেকে ৬০০টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আরো পড়ুন:

ঈদুল আজহায় দেশে ৯১ লাখ পশু কোরবানি

ঢাকা দক্ষিণে বর্জ্য সরানোর কাজ শেষ, ৩১ হাজার টন বর্জ্য অপসারণ

ব্রয়লার মুরগির দাম স্বাভাবিক রয়েছে।এখন প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়। সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১১৫০টাকা কেজি দরে। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়।

এদিকে, প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, রসুন ১৮০ ও দেশি আদা ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর সালেক গার্ডেন কাঁচাবাজারে কেনাকাটা করতে আসা গৃহিণী ফরিদা আক্তার রাইজিংবিডিকে বলেন, “বাজারে এখন সবজির দাম কম। চাহিদামতো নিতে পারছি।”

রাজধানীর নিউমার্কেটর সবজি বিক্রেতা আশরাফুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, “বাজারে সবজির সরবরাহ ভালো। দামও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে। তবে আজ বাজারে ক্রেতাদের সমাগম কম। কারণ এখন অনেক মানুষ ঈদের ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় আসেনি।এই সময় আমাদের অনেক বিক্রি হতো কিন্তু আজকে এখন পর্যন্ত বেশি বিক্রি করতে পারিনি।”

ঢাকা/রায়হান/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুপেয় পানির সংকট, কাজে আসছে না কোটি টাকার প্রকল্প
  • নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু
  • সুপারম্যানের কাছে আছে পৃথিবীর শক্তি সংকটের সমাধান
  • ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করলে কী কী ঘটতে পারে?
  • ইরান–ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা রূপ নিতে পারে দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতে
  • ইরানে হামলার আগে গোপনে ইসরায়েলে হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
  • ভারত থেকে আইফোন রপ্তানি কেন বাড়ছে
  • সুনামগঞ্জে তাজা গ্রেনেড উদ্ধারের পর নিষ্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী
  • কমেছে সবজির দাম
  • তিন চ্যাম্পিয়ন দলসহ যেসব তারকাকে দেখা যাবে না ক্লাব বিশ্বকাপে