ঈশ্বরদী ও নন্দীগ্রামে ৫৩ চালকলের নিবন্ধন বাতিল
Published: 24th, April 2025 GMT
গত আমন মৌসুমে সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ না করায় ঈশ্বরদীর ৪৪টি চালকলের লাইসেন্স বাতিল করেছে খাদ্য বিভাগ। বুধবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহিনুর আলম।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, উপজেলার ১৪৩টি চালকলের মধ্যে চুক্তির আওতায় এসেছিল ৯৯টি। এর মধ্যে ৮৩টি চালকল চুক্তি অনুযায়ী, ১৬টি আংশিক ও ৪৪টি একফোঁটা চালও সরবরাহ করেনি। চলতি মৌসুমে ঈশ্বরদীতে মোট সংগ্রহ হয়েছে ৪ হাজার ৬৪৩ টন চাল, যা চুক্তির ৬৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। চুক্তির আংশিক চাল সরবরাহ করা চালকলগুলোর জামানতও অনুপাতে বাতিল করা হয়েছে।
লাইসেন্স বাতিল হওয়া একাধিক চালকল মালিক দাবি করেছেন, নানা জটিলতায় তাদের পক্ষে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাল সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। তবে জটিলতা কী তা স্পষ্ট করেননি তারা।
চালকল মালিক ইমদাদুল হক বলেন, মিলের যন্ত্রাংশে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। সময়মতো মেরামত করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া অনেক চালকলে শ্রমিক সংকট ছিল। এসব পরিস্থিতি বিবেচনায় না নিয়ে হঠাৎ করে লাইসেন্স বাতিল করা অন্যায় হয়েছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহিনুর আলম বলেন, যেসব চালকল কোনো চুক্তি করেনি কিংবা সরবরাহে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। সরকারি খাদ্যগুদামে খাদ্যশস্য সরবরাহ একটি দায়িত্বশীল কাজ। এতে অবহেলার সুযোগ নেই।
বগুড়ার নন্দীগ্রামে ৯টি চালকলের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাজেদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় লাইসেন্সভুক্ত মোট ১৫টি চালকল রয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি চালকল মালিক সরবরাহের জন্য চুক্তি করেন। বাকি ৯টি এ চুক্তি না করায় তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।
নন্দীগ্রামে আমন মৌসুমে ৪৭ টাকা কেজি দরে ৬৭২ টন সেদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যে মালিকদের সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহের আহ্বান করা হয়। এতে সাড়া দিয়ে ছয় চালকল মালিক ৩৪২.
নন্দীগ্রাম চালকল মালিক সমিতির সভাপতি বদরুদ্দোজা আল-তৌফিক বলেন, ‘আমরা ক্ষুদ্র মিলার। সরকারি চাল সরবরাহের শর্ত ও সময়সীমা অনেক কঠোর। কেজিতে তিন টাকা লোকসান দিয়ে সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ করেছি। আমরা সরকারকে সব সময় সহযোগিতা করতে চাই। বাস্তবতা বিবেচনা করে সময় ও সুযোগ দিলে ভালো হয়।’
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাজেদুল ইসলাম জানিয়েছেন, নিয়ম অনুযায়ী লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম রোধে কঠোর নজরদারি থাকবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ লকল ম ল ক চ ল সরবর হ নন দ গ র ম সরবর হ র চ লকল র সরক র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।
বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’
এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’
জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।