জব্বারের বলীখেলার মেলা: রাস্তা থেকে দোকান তুলে দিল পুলিশ, বসবে শুধু মাঠে
Published: 24th, April 2025 GMT
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলীখেলার মেলা উপলক্ষে এবার সংলগ্ন ফুটপাত বা সড়কে ভাসমান দোকান বসতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে পুলিশ। এরই মধ্যে মেলার মাঠ–সংলগ্ন সড়ক ও ফুটপাত থেকে দোকান তুলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ বলছে, এবার দোকানপাট বসবে শুধু মেলার মাঠে।
আজ বৃহস্পতিবার থেকে মেলা শুরু হওয়ার কথা। মেলা উপলক্ষে তিন-চার দিন আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন জায়গার ব্যবসায়ীরা নানান পণ্য নিয়ে এসেছেন। অনেকে সংলগ্ন ফুটপাত ও সড়কে অবস্থান নিয়েছেন, দোকান খুলেছেন। তবে গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে পুলিশ গিয়ে তাঁদের দোকানপাট তুলে দেয়।
লালদীঘির সড়ক বিভাজকে চুড়ির দোকান খুলেছিলেন আল-আমিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা থেকে চার দিন আগেই মালামাল নিয়ে এসেছেন। রাস্তা বন্ধ করে বসেননি জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে বসতে না দেওয়ার কথা আগে জানালে তিনি আসতেন না।
পাশের কে সি দে সড়কে হাঁড়িপাতিল আর গৃহসজ্জার সামগ্রী নিয়ে বসেছিলেন খায়রুল। তিনিও ঢাকা থেকে এক ট্রাক মালামাল নিয়ে মেলায় এসেছেন। খায়রুল বলেন, রাতে পুলিশ এসে তাঁদের চলে যেতে বলেছে। ওই সময় হুড়োহুড়িতে কিছু মালামাল নষ্ট হয়েছে। এত মালামাল নিয়ে এখন কীভাবে ফিরবেন, এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা হচ্ছে তাঁর।
পুলিশের ভাষ্য, মেলার মাঠে দোকান বসাতে কোনো বাধা নেই। আশপাশের সড়ক ও ফুটপাতে দোকান বসানো যাবে না। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) আলমগীর হোসেন বলেন, ‘রাস্তায় দোকান না বসানোর জন্য আগে থেকেই মেলা কমিটিকে বলা হয়েছে, মাইকিংও করা হয়েছে। ফুটপাতে দোকান বসালে, লোকজন রাস্তায় এসে দাঁড়াবে। রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই ফুটপাত থেকেও দোকান তুলে দেওয়া হচ্ছে।’
মেলা কমিটির আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘ঐতিহ্য মেনে জব্বারের বলীখেলার মেলা প্রতিবছর হয়ে আসছে। এবার রাস্তায় দোকান না বসানোর জন্য আমরা সংশ্লিষ্টদের বলে দিয়েছি।’
প্রতিবছর ১২ বৈশাখ ঐতিহ্যবাহী এই বলীখেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বকশিরহাটের আবদুল জব্বার সওদাগর ১৯০৯ সালে এই বলীখেলার প্রবর্তন করেছিলেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে তরুণ ও যুবকদের উদ্বুদ্ধ করতে কুস্তি বা বলীখেলা শুরু করেছিলেন লালদীঘি মাঠে। সেই থেকে প্রতিবছর বৈশাখ মাসের ১২ তারিখ বলীখেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। কালের বিবর্তনে এই বলীখেলা এই অঞ্চলের ঐতিহ্যের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এবার জব্বারের বলীখেলা ১১৬ বছরে পা রাখতে চলেছে। আগামীকাল শুক্রবার লালদীঘি মাঠে এবারের বলীখেলা অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে লালদীঘির মাঠ ঘিরে তিন দিনের বৈশাখী মেলা বসেছে।
২০২০ ও ২০২১ সালে করোনার কারণে দুই বছর এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দুই বছর বলীখেলা হয়নি। এ ছাড়া ধারাবাহিকভাবে এই বলীখেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
আরও পড়ুনচট্টগ্রামে জব্বারের বলীখেলা ২৫ এপ্রিল১৬ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ত বল খ ল র ফ টপ ত
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে ঢাকাগামী টিকিটে বাড়তি ভাড়া আদায়, ৩ কাউন্টারকে জরিমানা
রাজশাহীতে ঈদফেরত যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে তিন বাস কাউন্টারকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় উপস্থিত যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দেওয়া হয়।
শুক্রবার দুপুরে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় রাজশাহী বিআরটিএর পক্ষ থেকে এই অভিযান চালানো হয়। বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আলপনা ইয়াসমিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
অভিযানে দেশ ট্রাভেলস, গ্রামীণ ট্রাভেলস ও ন্যাশনাল ট্রাভেলসের প্রত্যেক কাউন্টারকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
জানা গেছে, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি কয়েকজন যাত্রী গোপনে সেনাবাহিনীকে অভিযোগ করেন। পরে কাউন্টার থেকে আদায় করা অতিরিক্ত টাকা তাদের ফেরত দেওয়া হয়েছে।
বিআরটিএর ম্যাজিস্ট্রেট আলপনা ইয়াসমিন বলেন, কথা ছিল ঈদ উপলক্ষে পরিবহন মালিক সমিতি নতুন করে ভাড়া নির্ধারণ করবে। ভাড়া ঈদের আগে ও পরে একইরকম হওয়ার কথা। কিন্তু এই তিনটি গাড়ির কাউন্টারের এসি গাড়ির ভাড়া অতিরিক্ত আদায় করা হয়েছে। ঈদের আগে তাদের এসি গাড়ির ভাড়া ছিল ১ হাজার ১০০ টাকা। কিন্তু ঈদের পরে তা বাড়িয়ে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা নেওয়া হচ্ছিল। এ অপরাধের জন্য আইনে সর্বোচ্চ জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে ১০ হাজার টাকা। কাউন্টারগুলোকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার হিমাচল ট্রাভেলস ও হানিফ ট্রাভেলস নন এসি ভাড়া বেশি আদায় করেছিল। হানিফ ট্রাভেলসের চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকার ভাড়া ছিল ৮৩০ টাকা। কিন্তু তারা রাজশাহী থেকেই ওই পরিমাণ ভাড়া আদায় করছিল। হিমাচল ট্রাভেলসের কোনো কাউন্টার ছিল না। তারা অন্য বাসের সঙ্গে মিলে যাত্রী পরিবহন করছিল। এই দুটি বাসকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
শুক্রবার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় সম্পর্কে জানতে চাইলে দেশ ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা বলেন, সারা বছর ডিসকাউন্ট দিয়ে ১ হাজার ১০০ টাকায় যাত্রী পরিবহন করেন। ঈদ উপলক্ষে তারা সেই ডিসকাউন্ট উঠিয়ে দিয়েছেন। সেই কারণেই ভাড়া ১ হাজার ৭০০ টাকা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ম্যাজিস্ট্রেট আলপনা ইয়াসমিন বলেন, তারা মিটিংয়ের সময় এই কথাটা বলেননি। তাই তাদের জরিমানা করা হয়েছে।