Samakal:
2025-04-30@23:33:17 GMT

চার দশকের যাত্রায় ‘অবসকিওর’ 

Published: 24th, April 2025 GMT

চার দশকের যাত্রায় ‘অবসকিওর’ 

‘‘সম্বল বলতে ছিল অ্যাকুস্টিক গিটার আর হারমোনিয়াম; যা দেখে অনেকেই বলেছিল, এ দিয়ে কী গান হবে? আশ্বাস দিয়ে বলেছিলাম, এতেই হবে। গান গাওয়ার জন্য এই দুই বাদ্যযন্ত্রই বা কম কী? দেখি না শুরু করে, কী হয়। ব্যস, এরপর শুরু হয়ে গেল আমাদের প্র্যাকটিস পর্ব। সে সময় আমরা না ছিলাম বড় শিল্পী, না বড় মাপের মিউজিশিয়ান। তবু আমরা ছিলাম খুব সাহসী; যাদের উৎসাহ, উদ্দীপনায় এতটুকু কমতি ছিল না। জন বালা এক পাদ্রির কাছে গিটার শিখেছিল। যতটুকু শিখেছিল, তা শুনে আশার জাল বুনেছিলাম নতুন কিছু করার। এরপর সোহেল আজিজকে হারমোনিয়াম বাজাতে দেখে, দলের কি-বোর্ডিস্ট করে নেওয়ার পরিকল্পনা করি। একইভাবে আজম বাবু ড্রামস বাজানো শিখেছে জেনে টেনেহিঁচড়ে দলে নিয়ে আসি। তখন পর্যন্ত আমার সম্পর্কে সবার জানাশোনা এটুকু যে, চাইম ব্যান্ড ইংরেজি গান গায়। এখন সেই ব্যান্ড ছেড়ে দিয়েছি। বাংলা গান গাওয়ার নেশায় গড়তে চাইছি নতুন এক ব্যান্ড। আমাকে নিয়ে নতুন ব্যান্ড গড়ে তুলতে সব রকম সহযোগিতা করছে বড় ভাইয়ের বন্ধু মাসুদ। দলের প্রযোজনে সে মাসুদও রিদম গিটার বাজানো ছেড়ে বেস গিটার হাতে তুলে নিয়েছে। এসব শুনে আর অভিনব কিছু করার আশায় তুষার, সোহেল আলম, আহসানরা দলে ভিড়েছিল। যেহেতু গানের জগতে আমরা অনেকটা আনকোড়া, বড় কোনো পরিচয় নেই, তাই দলের নামকরণ করা হয় ‘অবসকিউর’। ৮ বছর পর যার নামের বানান বদলে করা হয় ‘অবসকিওর’। এই হলো ব্যান্ডের জন্মবৃত্তান্ত।’’

বললেন অবসকিওরের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী সাঈদ হাসান টিপু। 

গত চার দশক ধরে যিনি এখন ব্যান্ডের হাল ধরে আছেন। এই দীর্ঘ সময়ে পুরোনো সদস্যদের কেউ চলে গেছেন গানের ভুবন ছেড়ে, কেউ ভিন্ন দেশে, কেউ আবার চিরবিদায় নিয়েছেন পৃথিবী থেকে। তারপরও অবসকিওরের সংগীতযাত্রা থেমে থাকেনি। টিপুর নেতৃত্বে একে একে পেরিয়ে এসেছে চার দশকের পথ। ১৯৮৫ থেকে ২০২৫–এ পথপরিক্রমায় ‘অবসকিউর’, ‘অবসকিউর-২’, [প্রথম দুটি অ্যালবামে ব্যান্ডের নামের বানান ‘অবসকিউর’ ছিল; তৃতীয় অ্যালবাম থেকে নামের বানান বদলে ‘অবসকিওর’ লেখা শুরু হয়] ‘স্বপ্নচারিনী’, ‘ফেরাতে তোমায়’, ‘অবসকিওর আনপ্লাগড’, ‘অপেক্ষায় থেকো’, ‘ইচ্ছের ডাকাডাকি’, ‘ফেরা’, ‘অবসকিওর ও বাংলাদেশ’, ‘মাঝরাতে চাঁদ’, ‘ক্রাক প্ল্যাটুন’, ‘স্টপ জেনোসাইড’ ও ‘টিটোর স্বাধীনতা’ নামের অ্যালবাম প্রকাশের পাশাপাশি বেশ কিছু মিক্সড অ্যালবামে গান গেয়ে শ্রোতাদের ভালোবাসা কুড়িয়েছেন এ ব্যান্ড সদস্যরা। সে কারণে তাদের কাছে সব সময় নতুন কিছুর প্রত্যাশা ছিল শ্রোতাদের। বিশেষ করে যখন অনেকে জেনে গেছেন, এ বছর চার দশকের মাইলফলক স্পর্শ করছে ‘অবসকিওর’ তখন আরও বাড়তি কিছু পাওয়ার আশা করছেন অনুরাগীরা।

সে কারণে টিপুর কাছে প্রশ্ন ছিল, চার দশক পূর্তিতে নতুন, পুরোনো সদস্যদের নিয়ে ব্যান্ডের রি-ইউনিয়ন কনসার্ট, স্মারক অ্যালবাম প্রকাশ বা অন্য কিছু করার পরিকল্পনা আছে কিনা? এর জাবাবে একটু হতাশা নিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেক কিছু তো করতে চাই। দেশের যে পরিস্থিতি তাতে করে কতটুকু কী করতে পারব বলা কঠিন। ব্যান্ডের রি-ইউনিয়ন করার ইচ্ছা থাকলেও স্পন্সর পাবো কি? এ প্রশ্ন বারবার মনে ঘুরপাক খায়। কারণ তৈলমর্দন, অনুরোধ, আবদার করে কিছু আদায় করা যে স্বভাবে নেই। এই যে আমরা এতগুলো ব্যান্ড অ্যালবাম প্রকাশ করেছি, তার বিনিময়ে যেটুকু পাওয়ার ছিল, তা কী পেয়েছি? পাইনি। চিরকাল ঠকেছি, তবু অভিযোগ তুলিনি। আমাদের গানগুলো শ্রোতার কাছে পৌঁছে দিতে পারার আনন্দকে বড় করে দেখেছি। তারপরও নিরাশাবাদী নই বলে রি-ইউনিয়নের পাশাপাশি গানের ভুবনের চিত্র বদলে যাবে– এ আশায় প্রহর গুণে যাচ্ছি।’

 টিপুর এ কথা থেকে যা স্পষ্ট তাহলো, সময় এবং দেশের প্রেক্ষাপট বদলে গেলে, চমকপ্রদ কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে ব্যান্ড সদস্যদের। সেটি কবে? তার দিনক্ষণ এখনই নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না। এর মাঝেও একটি সুখবর দিয়েছেন তিনি। তাহলো, স্মারক অ্যালবামের প্রকাশনা। যেটি বছরের শেষ প্রান্তে ভিনাইল রেকর্ড হিসেবে প্রকাশিত হবে। তার আগে শ্রোতার জন্য উপহার হিসেবে অনলাইনে প্রকাশ হচ্ছে নতুন সংগীতায়োজনে রেকর্ড জনপ্রিয় ১০টি গানের অ্যালবাম ‘রিইনকার্নেশন’। টিপুর কথায় সংগীতের এই দীর্ঘ সফরে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আসতে হয়েছে। যেখানে গানই ছিল আমাদের প্রধান চালিকা শক্তি। শ্রোতাদের ভালোবাসা ছিল শক্তি, সাহস ও প্রেরণার উৎস। চার দশকের মাইলফলক স্পর্শের মুহূর্তটি স্মরণীয় করে রাখতে চেয়েছি আমরা। সেই ভাবনা থেকে ‘রিইনকার্নেশন’ অ্যালবামের প্রকাশনা।

যাদের নিয়ে অবসকিওর 
টিপু - কণ্ঠশিল্পী 
শান্ত ও আবির - লিড গিটারিস্ট
নাদিম -বেস গিটারিস্ট
বিনোদ ও আকাশ - কি-বোর্ডিস্ট
রাব্বী - ড্রামার

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব য ন ড দল চ র দশক র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ছয় গোলের থ্রিলারে জমজমাট ড্র বার্সেলোনা-ইন্টারের

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল মানেই উত্তেজনার পারদ চড়া—আর বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে সেটিকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়। কাতালানদের ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে দর্শকরা উপভোগ করলেন এক দুর্দান্ত গোলবন্যার ম্যাচ। ম্যাচ শেষে ফল—৩-৩ গোলে ড্র।

মৌসুমের রেকর্ড ৫০ হাজার ৩১৪ দর্শকের সামনে ইউরোপীয় ফুটবলের এই মহারণে উভয় দলই তুলে ধরেছে আক্রমণাত্মক ফুটবল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের ইতিহাসে ১৯৯৯ সালের পর এটিই প্রথম ম্যাচ যেখানে ছয়টি গোল হয়েছে এবং শেষ হয়েছে ড্রয়ে।

ম্যাচ শুরু হতে না হতেই চমকে দেয় ইন্টার মিলান। ম্যাচের মাত্র প্রথম মিনিটেই ডেনজেল ডামফ্রিজের ব্যাকহিল গোল দলকে এগিয়ে দেন মার্কাস থুরাম। এরপর ২১ মিনিটে আবারও দিমারকোর কর্নার থেকে ফ্রান্সেসকো আকেরবির সহায়তায় শ্বাসরুদ্ধকর অ্যাক্রোব্যাটিকে ব্যবধান বাড়ান ডামফ্রিজ।

তবে ঘুরে দাঁড়াতে দেরি করেনি বার্সা। দুই মিনিট পরই ইয়ামাল ডান দিক থেকে একক নৈপুণ্যে দুর্দান্ত গোল করে ব্যবধান কমান। প্রথমার্ধ শেষের আগে পেদ্রির ফ্লিকে রাফিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং তাতে ফেরান তোরেসের শটে গোল করে ২-২ সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।

দ্বিতীয়ার্ধে লাউতারো মার্টিনেজের ইনজুরির পর মাঠে নামেন মেহেদি তারেমি। ৬০ মিনিটে কর্নার থেকে হেড করে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ডামফ্রিজ। কিন্তু দ্রুতই গোল শোধ করে বার্সা—ছোট কর্নার থেকে রাফিনিয়ার শট লাগে পোস্টে, সেখান থেকে গোলরক্ষক সোমারের পিঠে লেগে ঢুকে পড়ে জালে—ফলাফল ৩-৩। ৭৫ মিনিটে হেনরিখ মিখিতারিয়ান গোল করে ইন্টারকে আবারও এগিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ভিএআরের চোখে পড়ে সামান্য অফসাইড, বাতিল হয় সেই গোল।

এখন সবকিছু নির্ভর করছে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের ওপর, যা হবে ৬ মে, মঙ্গলবার, ইন্টারের ঘরের মাঠ জিউসেপ্পে মিয়াজ্জায়। ওই ম্যাচেই জানা যাবে ফাইনালে কারা প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ও আর্সেনালের মধ্যকার বিজয়ীর মুখোমুখি হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ