সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পরিবেশ সুরক্ষায় একের পর এক আন্দোলন হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিগত সরকারের আমলে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনার শেষ ছিল না। দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে ছিল নির্বিচার গাছ কাটার অভিযোগ। সরকার পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষেও পরিবর্তন এসেছে। দুঃখজনক হচ্ছে, গাছ কেটে উন্নয়ন করার কথা এখনো ভাবতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয়টি। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও হতাশাজনক। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়নে বিগত সরকারের আমলে নেওয়া সহস্রাধিক কোটি টাকা ব্যয়ে বড় একটি প্রকল্প চলমান আছে। এর আওতায় ১২টি স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলছে। এসব স্থাপনা করতে গিয়ে এক হাজারের বেশি গাছ কাটা হয়েছে। গাছ কেটে ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় আন্দোলন ও বিক্ষোভ করেছেন। কিন্তু কোনো বাধাতেই কর্ণপাত করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন প্রশাসন এই প্রথমবারের মতো গাছ কেটে ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। গাছ কেটে গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণের সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ভবন নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে একটি জঙ্গল। এর আগে একটি জলাশয় ভরাট করে সম্প্রসারিত ভবনটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিল গত প্রশাসন। তবে শিক্ষার্থী ও পরিবেশবিদদের আপত্তির মুখে বর্তমান প্রশাসন ওই স্থান থেকে সরে আসে।

বর্তমান প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, গত প্রশাসন যখন যত্রতত্র গাছ কেটে অপরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণ করত, তখন বর্তমান প্রশাসনে যাঁরা আছেন, তাঁরা বিরোধিতা করতেন। কিন্তু এখন প্রশাসনে নিজেরা দায়িত্বে এসে একই রকম উদ্যোগ নিয়েছেন, যা অপ্রত্যাশিত। শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, জায়গাটিতে ভবন নির্মাণ করা হলে বিভিন্ন প্রজাতির বন্য প্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস হবে। এ অঞ্চলজুড়ে একটি বন্য প্রাণী চলাচলের রাস্তা তৈরি হয়েছে, যা দিয়ে বন্য প্রাণীরা খাদ্যস্থলের দিকে এগোতে পারে, যেখানে তারা শিকার থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকম খাবার সংগ্রহে ঘুরে বেড়ায়। স্থানটি নষ্ট হলে তারা সংকটে পড়তে পারে। তবে প্রশাসন বলছে, টেকনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কমিটি (টিএমসি) ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী ওই জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। জায়গাটিতে ভবন করা হলে পরিবেশের তুলনামূলক কম ক্ষতি হবে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও পরিবেশবিদদের বক্তব্য, পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করে মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও বাস্তবায়িত হোক। এভাবে নির্বিচার গাছ কেটে বা জঙ্গল ধ্বংস করে ভবন নির্মাণের কোনোভাবে সুযোগ নেই। ইতিমধ্যে প্রাণ–প্রকৃতির জন্য সুপরিচিত ক্যাম্পাসটির বিপুল ক্ষতি হয়ে গেছে। আমরা আশা করব, শিক্ষার্থী ও পরিবেশবিদদের দাবিকে গুরুত্ব দেবে বর্তমান প্রশাসন। ক্যাম্পাসের পরিবেশ–প্রকৃতি ক্ষুণ্ন হোক, জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ুক, তা আমরা কোনোভাবেই চাই না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভবন ন র ম ণ র পর ব শ ও পর ব সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কনসার্টের জন্য কত পারিশ্রমিক নেন অরিজিৎ

তাঁর সংগীতের সফর শুরু হয়েছিল মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ থেকে। আজ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে রয়েছেন তাঁর অনুরাগীরা। মাত্র ৩৮ বছর বয়সে অরিজিৎ সিং ভারতের অন্যতম আলোচিত শিল্পী। তবে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কনসার্টে গাওয়ার জন্য বেশি পারিশ্রমিক নেন। আসলে কত পারিশ্রমিক নেন গায়ক?

সম্প্রতি সুরকার মন্টি শর্মা পিংকভিলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন অরিজিতের পারিশ্রমিক নিয়ে। তিনি বলেন, ‘একটা সময় পরে অনেক কিছুর বিবর্তন হয়েছে। আগে গোটা একটা গান আমরা দুই লাখ রুপিতে শেষ করতাম। এর মধ্যে গোটা অর্কেস্ট্রা, ৪০ জন বেহালা বাদক, আরও অনেক কিছু থাকত। তারপর ধীরে ধীরে গানপ্রতি নিজের জন্য ৩৫ হাজার রুপি নিতে থাকলাম।’

এরপরই অরিজিতের প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। মন্টি বলেন, ‘অরিজিৎ যখন আসত, তখন টানা ছয় ঘণ্টা আমার সঙ্গে একটা গান নিয়ে বসত। এখন ও একটি অনুষ্ঠানের জন্য দুই কোটি রুপি নেয়। তাই ওকে নিয়ে অনুষ্ঠান করতে হলে দুই কোটিই দিতে হবে। আগে তো মানুষ বেতারে ও টিভিতেও গান শুনত। কিন্তু এখন তাদের কাছে ইউটিউব আছে। এখন গান শোনার মাধ্যম অনেক বড়। তাই অর্থের পরিমাণও এখন বেড়েছে। তাই এখন যদি ১৫-২০ লাখ টাকা দিয়ে একটা গান করি, তা হলে ৯০ শতাংশ স্বত্ব কিনে নেয় অডিও সংস্থা। এই অডিও সংস্থাগুলো এখন আয় করছে।’

আরও পড়ুনযার গানে মুগ্ধ অরিজিৎ সিং, কে এই এনজেল নূর? ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ