স্বস্তির বৃষ্টিতে প্রাণ ফিরেছে চা বাগানের
Published: 25th, April 2025 GMT
টানা তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত মৌলভীবাজারের চা বাগানগুলো স্বস্তির বৃষ্টিতে ভিজছে। বৃষ্টির কারণে সতেজ হয়ে উঠতে শুরু করেছে চায়ের পাতা। ফলে নির্মল সবুজের দেখা মিলেছে সেখানে। গাছগুলোতে উঁকি দিতে শুরু করেছে নতুন কুঁড়ি। গত কয়েকদিন ধরে মৌলভীবাজারে কম-বেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
চলতি মৌসুমের শুরুইে তাপদাহে ঝলসে গিয়েছিল বাগানের অধিকাংশ চা গাছ। বিভিন্ন বাগানে লাল রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল। চা উৎপাদন মৌসুম শুরুতেই মৌলভীবাজার জেলার ৯২টি চা বাগানের উৎপাদনের গতি কমে যায়। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে দ্রুত পরিবর্তন দেখা দিতে শুরু করে চা বাগানগুলোতে।
চা শ্রমিকরা জানান, নব উদ্যোমে পাতা তোলার কাজ শুরু করছেন তারা। পাতা সংগ্রহের (নিরিখ) ওজন গণনা শুরু হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ফেনীতে কালবৈশাখী-শিলাবৃষ্টি, ফসলের ক্ষতি
সারা দেশে পাঁচ দিন বজ্রসহ ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস
চা সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি মৌসুমে চায়ের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৩ মিলিয়ন কেজি। ২০২৩ সালে ১০৩ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়। ২০২৪ সাল এসে উৎপাদন কমে দাঁড়ায় ৯৩ মিলিয়ন কেজিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ মিলিয়ন কেজি কম।
দেশে মোট নিবন্ধনকৃত চা বাগান রয়েছে ১৬৮টি। পঞ্চগড়ে রয়েছে ক্ষুদ্রায়িত অনেকগুলো চা বাগান। পঞ্চগড় ও দেশের ১৬৮টি বাগান মিলিয়ে ২০২৫ সালের চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধরণ করা হয়েছে ১০৩ মিলিয়ন কেজি।
চা প্রকৃতি নির্ভর একটি কৃষিজাত পণ্য। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চায়ের উৎপাদনও ভালো হয়। এর জন্য প্রয়োজন পরিমিত বৃষ্টি ও সূর্যের কিরণ। প্রায় চার মাস আগ থেকেই চা বাগানের সেকশনগুলোয় অধিক উৎপাদনের আশায় গাছ (প্রুনিং) ছাটাই করার কাজ হয়ে থাকে। এসময় চা বাগানের রুক্ষ-শুষ্কভাব দেখা দেয়।
চলতি বছর তাপমাত্রার তারতম্য ঘটায় বিপাকে পড়েন চা সংশ্লিষ্টরা। বৃষ্টির অভাবে রুক্ষ বাগানে নতুন পাতা কুঁড়ির খুব বেশি দেখা মিলছিল না। যে পাতা আসছিল, স গুলো আবার রোগান্ত হয়ে পড়ে। এ কারণে স্বস্তির বৃষ্টিতে বাগান মালিক ও শ্রমিকরা খুশি হয়েছেন। দুশ্চিন্তা কেটেছে তাদের।
রাজনগর চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক মো.
উত্তরভাগ চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান মকসুদ বলেন, “চা উৎপাদনে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতির পাশপাশি প্রকৃতির ওপর নির্ভর করতে হয়। চায়ের জন্য পরিমিত বৃষ্টি ও পর্যাপ্ত সূর্যের আলোর প্রয়োজন হয়।”
সিলেটের লাক্কারতুরা চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, “আমরা চা উৎপাদন নিয়ে মৌসুমের শুরুতেই বিপাকে পড়েছিলাম। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সব চা বাগানের প্রাণ ফিরে এসেছে।”
বাংলাদেশ চা সংসদের (বিসিএস) সিলেট অঞ্চলের চেয়ারম্যান জি এম গোলাম মোহাম্মদ শিবলি বলেন, “দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় ও তাপমাত্রা বেশি থাকায় চায়ের উৎপাদন কমে গিয়েছিল। বৃষ্টির ফলে চা গাছগুলো সজিবতা ফিরে পেয়েছে। শ্রমিকরা বাগানগুলো থেকে পাতা তুলতে শুরু করেছেন।”
ঢাকা/আজিজ/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস
আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেও বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর বিপক্ষে টাইব্রেকারে কিংসের জয়ের নায়ক ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। শুনেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়
সমকাল: দু’দিনের ফাইনালের অভিজ্ঞতাটা কেমন হলো?
শ্রাবণ: (হাসি) না, এটা খুব কঠিন ছিল। আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছি এক দিন ফাইনাল খেলব, জিতব এবং উদযাপন করব। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণে খেলা অনেকক্ষণ বন্ধ ছিল। বাকি ১৫ মিনিট আরেক দিন। এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা। একই চাপ দু’বার নিতে হলো।
সমকাল: এই মাঠের সমস্যার কারণেই কি এমনটা হয়েছে?
শ্রাবণ: অবশ্যই। এত বড় একটা টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা যে মাঠে, সেখানে ফ্লাডলাইট নেই। যদি ফ্লাডলাইটের সুবিধা থাকত, ওই দিনই খেলাটা শেষ করা যেত। আমার মনে হয়, দেশের ফুটবলের কিছু পরিবর্তন করা উচিত। বিশেষ করে আমরা যখন জাতীয় দলের হয়ে বিদেশে খেলতে যাই, তখন দেখি অন্যান্য দেশের মাঠ খুব গতিশীল। আমাদের দেশের মাঠগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের না। প্রায় সময়ই সমস্যা হয়। আমরা স্লো মাঠে খেলি। বিদেশে গতিশীল মাঠে খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের লিগটা যদি আন্তর্জাতিক মানের মাঠে হতো।
সমকাল: পেনাল্টি শুটআউটের সময় কী পরিকল্পনা ছিল আপনার?
শ্রাবণ: আমি আগেও বলেছি যে অনুশীলনের সময় আগের ম্যাচের টাইব্রেকার নিয়ে কাজ করেছি। কে কোন দিকে মারে, সেগুলো ট্রেনিংয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কোচ। কোচের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি এবং সফল হয়েছি।
সমকাল: এমেকার শট ঠেকানোর পর মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছেন। এটি কি আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল?
শ্রাবণ: না, সেভ দেওয়ার পর মাথায় এলো। তাই এমি মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছি। বলতে পারেন, এটি কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তৎক্ষণাৎ মাথায় এলো।
সমকাল: জাতীয় দল আর ক্লাব– দুটোর অভিজ্ঞতা যদি একটু বলতেন।
শ্রাবণ: ক্লাব আর জাতীয় দল– দুটো ভিন্ন বিষয়। ক্লাব হচ্ছে শুধু একটা ক্লাবকে প্রতিনিধিত্ব করা। আর জাতীয় দল তো পুরো বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা। যারা ক্লাবে ভালো পারফরম্যান্স করে, তাদেরই জাতীয় দলে ডাকে। আর জাতীয় দলে ডাক পাওয়াটা একজন প্লেয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন।
সমকাল: আপনি একটি সেভ করেছেন। কিন্তু আবাহনীর মিতুল মারমা পারেননি। জাতীয় দলে বেস্ট ইলেভেনে থাকতে পারবেন?
শ্রাবণ: না না, ব্যাপারটা এমন না। ও (মিতুল) সেভ করতে পারেনি আর আমি পারছি– এটি কিন্তু বড় বিষয় না। ও কিন্তু সেমিফাইনালে সেভ করে দলকে ফাইনালে এনেছে। বরং অনুশীলনে কোচ যাঁকে ভালো মনে করেন, তাঁকেই শুরুর একাদশে রাখেন।
সমকাল: একজন গোলরক্ষক হিসেবে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
শ্রাবণ: আমি চাই দেশসেরা গোলরক্ষক হতে। আমার স্বপ্ন আছে, বিদেশে লিগে খেলব।