চাকরি ছেড়ে হয়েছিলেন হতাশাগ্রস্ত বেকার, এখন মাসে আয় ৯ লাখ টাকা
Published: 28th, April 2025 GMT
মার্কেটিংয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করে চাকরি শুরু করেছিলেন বেসরকারি ব্যাংকে। কিন্তু অন্যের অধীন নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেননি মো. গিয়াস উদ্দিন। ২০১৫ সালে চাকরি ছেড়ে চলে আসেন গ্রামে। এরপর বেকার হতাশাগ্রস্ত হয়ে কী করবেন, বুঝে উঠতে পারছিলেন না। ২০১৮ সালে ধারদেনা করে নতুন একটি উদ্যোগের পথে পা বাড়ান তিনি। সেই গিয়াস উদ্দিন সাত বছরের ব্যবধানে এখন মাসে আয় করেন ৯ লাখ টাকার বেশি।
গিয়াস উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৭ সালে মায়ের থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা আর নিজের ২ হাজার টাকা মিলিয়ে ৩ হাজার ৬০০ টাকা দিয়ে দুটি ছাগল কিনে লালন-পালন শুরু করেছিলেন। তবে বুঝতে পারেন, ছাগলের খামার করে ততটা উন্নতি সম্ভব নয়। ফলে ২০১৮ সালের ১৮ এপ্রিল ছাগল বিক্রির কিছু টাকা ও ঋণ নিয়ে উন্নত জাতের চারটি গাভি কিনে লালন-পালন শুরু করেন। বছর ঘুরতেই সেই গাভি বাছুর জন্ম দেয়। গাভির দুধ বিক্রির টাকায় একটু একটু করে বড় হতে থাকে তাঁর খামার। সেই থেকে ৭ বছরের মাথায় এখন তাঁর খামারে ১২০টি গরু। ১১ জন কর্মচারী স্থায়ীভাবে কাজ করছেন। গরুর দুধ ও বাছুর বিক্রি করে খরচ বাদে এখন তাঁর বছরে আয় প্রায় ১ কোটি ৯ লাখ টাকা।
মো.
সম্প্রতি হোগলাকান্দি গ্রামে অগ্র ডেইরি ফার্মে গিয়ে দেখা যায়, খামারের কর্মচারীরা গরু লালন–পালনে ব্যস্ত। পুরো বিষয়টির দেখভাল করছেন গিয়াস উদ্দিন। খামারের ফটক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলে বাঁ পাশে ৪টি শেডে ১২০টি গরু। একপাশে একটি শেডে ছোট বাছুরগুলো শুয়ে আছে। খামারের চারপাশ দিয়ে ১২ একর জমিতে লাগানো হয়েছে ঘাস।
কাশিয়ানী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘গিয়াস উদ্দিন কাশিয়ানীর উপজেলার একজন রোল মডেল। তিনি প্রতিটি ক্ষেত্রেই সফলতা পেয়েছেন। তিনি যেমন গরুর খামারে সফলতা পেয়েছেন, তেমনি খামারের দুধ দিয়ে তৈরি বিভিন্ন প্রকারের মিষ্টি, দই, ঘি বিক্রি করেও সফল হয়েছেন। আমরা চাই, নতুন উদ্যোক্তারা গিয়াস উদ্দিনের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিয়ে তাঁদের ব্যবসা শুরু করুক। তাহলে অবশ্যই তারা সফল হবে।’শুভঙ্কর দত্ত,খামার থেকে দু-তিন মিনিটের পথ হেঁটে গেলেই গিয়াস উদ্দিনের বাড়ি। ওই বাড়ির ঘরের পাশেই অগ্র সুইটস ভিলেজ নামের তাঁর মিষ্টি তৈরির কারখানা। কারখানাটিতে কাজ করছিলেন মন্টু নামের এক শ্রমিক। তিনি বলেন, তাঁর বাড়ি পাবনা। পাঁচ বছর ধরে গিয়াস উদ্দিনের মিষ্টির কারখানায় কাজ করছেন তিনি।
খামারে কথা হয় গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, খামারের ১২০টি গরুর মধ্যে ৬৫টি গাভি, মাঝারি আকারের বকনা বাছুর আছে ৩২টি ও ছোট এঁড়ে বা ষাঁড় বাছুর ২৩টি। ৬৫টির মধ্যে ৪৫টি গাভি প্রতিদিন দুই বেলা ৬০০ থেকে ৬২০ লিটার করে দুধ দিচ্ছে। এর মধ্যে সকালে ৩০০ থেকে ৩১০ লিটার দুধ গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার চারটি মিষ্টির দোকানে বিক্রি করেন। ৬৫ টাকা লিটার দরে গড়ে প্রতিদিন ২০ হাজার টাকার দুধ বিক্রি করেন। সকালের দুধ বিক্রি থেকে মাসে আয় ৫ লাখ ৯৪ হাজার ৭৫০ টাকা, আর বছরে আয় ৭১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। অগ্র ডেইরি ফার্মে প্রতিদিন খরচ ১৯ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা। সকালে দুধ থেকে যে টাকা আয় হয়, তা কর্মচারীদের বেতন, গরুর খাবার, চিকিৎসা বাবদ ব্যয় হয়।
মো. গিয়াস উদ্দিনের ‘অগ্র ডেইরি ফার্মে’ এখন গরু আছে ১২০টি। সম্প্রতি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রামেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ প লগঞ জ র উপজ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
আরো পড়ুন:
সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা
পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা
গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি।
এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/এনটি/বকুল